প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। মিটিং শেষে দুপুর ২টার দিকে যমুনা থেকে বের হন তারা। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হবে। যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না।

তিনি বলেন, সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিক। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা পরিবেশে কথা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে ভালো হয় বলে জানিয়েছে। তারা বলেছেন, আমাদের উপদেষ্টাদের অস্পষ্ট কথা থাকে। আমাদের সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা অন্যরকম কথা বলেন। যে যেটাই বলুক না কেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে বারবার যে কথা বলেছেন, সেটাই আমাদের অবস্থান। অন্য কেউ যদি বেফাঁস কথা বলেন, তারা যেন বিভ্রান্ত না হন।

আজকের আলোচনায় কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে, জানিয়ে তিনি বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুন মাস, মানে আমরা ইচ্ছা করেই দেরি করে মে মাসে নির্বাচন করব, এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে— ডিসেম্বরের পর থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করা। আমরা অকারণে এক মাস, দুই মাস বেশি থাকলাম, মোটেও এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ঐকমত্য কমিশনের যে প্রস্তাব, সেটার ক্ষেত্রে বিএনপি অত্যন্ত পজিটিভ। তারা দুই-তিন দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসবে। জুলাই ঘোষণাপত্র খুব দ্রুত সময় হয়ে যাবে, তারা আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক।

অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি মন খুলে কথা বলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তাদের প্রতিকূলে গেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা তাদেরকে উদাহরণ দিয়েছি, অনেকগুলো সিদ্ধান্ত তাদের অনুকূলে গেছে। রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে। গত তিন মাসে ৭ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। বিএনপি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলেছে। আমরা বলেছি যে, আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি বলেন, উনারা (বিএনপি নেতারা) বলেছেন যে, গত ১৫ বছর যাবত বিএনপি নির্যাতিত হয়েছে। আমরা শ্রদ্ধা দেখিয়েছি। তারা বলেছে, বিএনপি সংস্কারপন্থি দল, আমরা এটাতে অ্যাগ্রি করেছি।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন উপদ ষ ট ড স ম বর থ ক ড স ম বর র সরক র র আম দ র বল ছ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • স্বপ্নে হলো দেখা
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ