দরজা খুললেই মুখে মারা হয় স্প্রে, পরে স্কচটেপ দিয়ে হাত–পা বেঁধে গলায় ইনজেকশন
Published: 17th, April 2025 GMT
রাজধানীতে বাসায় ঢুকে জান্নাতুল ইসলাম (৩০) নামের এক নারীকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক দুর্বৃত্ত। ওই নারীকে উদ্ধৃত করে তাঁর স্বামী এ অভিযোগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের আমবাগান এলাকায় নিজ বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
জান্নাতুল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বামী রাকিবুল হাসান একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ–অর্থ সম্পাদক।
বিকেলে হাসপাতালে রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জান্নাতুলকে নিয়ে আমবাগানে ভাড়া বাসায় থাকেন। দুপুরে একটি কাজে তিনি কারওয়ান বাজারে যান। সেখান থেকে বেলা তিনটার দিকে বাসায় ফিরে দরজার কড়া নাড়লে স্ত্রীর কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। পরে চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান জান্নাতুল মেঝেতে পড়ে আছেন। স্কচটেপ দিয়ে তাঁর হাত–পা বাঁধা আর মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া। প্রথমে তাঁকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তিনি।
রাকিবুল জানান, স্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, দুপুরে মাস্ক পরা এক ব্যক্তি এসে দরজার কড়া নাড়েন। এ সময় পরিচয় জানতে চাওয়া হলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কোর্ট থেকে এসেছি’। তখন রাকিবুল বাসায় নেই বলে ওই ব্যক্তিকে জানান জান্নাতুল। এ সময় মাস্ক ও গ্লাভস পরা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কাগজটা দিয়ে চলে যাব’। দরজা খোলামাত্রই লোকটি জান্নাতুলের মুখে স্প্রে করে স্কচটেপ দিয়ে হাত–পা বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি জান্নাতুলের গলায় ইনজেকশন দেন। পরে তাঁকে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওপরে তুলতে না পেরে বাসার মেঝেতে রেখে চলে যান। হামলাকারী বারবার বলছিলেন, ‘তোকে মেরে তোর স্বামীকে ফাঁসাব’।
রাকিবুল জানান, তাঁর রাজনৈতিক কোনো শত্রু নেই। তবে ব্যবসায়িক কারণে কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে জান্নাতুলের বাসায় ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জান্নাতুলের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ
রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’
এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ।