চিকিৎসকেরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবে এআই যেভাবে তাঁর জীবন বাঁচাল
Published: 21st, April 2025 GMT
জোসেফ কোটস আদতে পোয়েমস সিনড্রোম (POEMS Syndrome) নামে বিরল এক রক্তের ব্যাধিতে ভুগছিলেন। এতে তাঁর হাত-পা একরকম অচল হয়ে গিয়েছিল। হৃদ্যন্ত্র আর কিডনিও কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রায়। কিছুদিন পরপর তাঁর পেট থেকে তরল বের করা হতো। এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট করার মতো শারীরিক অবস্থাও ছিল না। কোনো আশাই আর অবশিষ্ট ছিল না। নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জোসেফ কোটস বলেন, ‘আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পরিণতিটা (মৃত্যু) কোনোভাবেই আর এড়ানো গেল না।’
আরও পড়ুনবিরল এই রোগের কথা আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না সামান্থা২৯ অক্টোবর ২০২২কোটস হাল ছেড়ে দিলেও তাঁর প্রেমিকা তারা থিওব্যাল্ডের মনের কোণে তখনো আশা জেগে ছিল। তিনি ফিলাডেলফিয়ায় বসবাসরত ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার অধ্যাপক ও চিকিৎসক ড.
পরামর্শমতো চিকিৎসা শুরু করেন কোটস ও তারা। আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করেন কোটস। চার মাসের মাথায় অর্জন করেন স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট করার মতো শারীরিক সক্ষমতা। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ, তবে চিকিৎসা চলছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, যে পদ্ধতিতে কোটসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হলো, সেটা ডেভিড ফেগেনবম পেয়েছিলেন এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায়!
আরও পড়ুনদুনিয়ায় এমন বিরল ক্ষমতাধর আছে ৮০ জনের মতো১১ সেপ্টেম্বর ২০২২বিশ্বব্যাপী চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বিরল রোগের চিকিৎসা ও গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিচ্ছেন। বিরল ও আগ্রাসী ক্যানসার, জটিল নিউরোলোজিক্যাল কন্ডিশনে প্রায়ই এআইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সেসব কাজও করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই লাখ মানুষ বিভিন্ন বিরল রোগে আক্রন্ত। যেসব রোগ সম্পর্কে চিকিৎসাবিজ্ঞানেও খুব বেশি কিছু জানা যায় না, অর্থাৎ এমন বিরল রোগ আছে হাজারো ধরনের। এসবের প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই অনুমোদিত চিকিৎসা নেই।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক মেরিনকা জিটনিক বলেন, ‘একেকটি বিরল রোগের ধরন, উপসর্গ বিশ্লেষণ করে নতুন নতুন ওষুধ তৈরি করা খুবই জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধের উপকরণ, গুণাগুণ এবং রোগের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এআই সহজেই চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধ সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারে। আবার কোন ওষুধের সঙ্গে কোন ওষুধ মেশালে শরীরে তা কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, সে সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। অনেক সময় অন্য রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ওষুধ এআইয়ের পরামর্শ অনুসারে অনেক অজানা রোগেও ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমন “মিনোক্সিডিল” নামের ওষুধটি আগে কেবল উচ্চরক্তচাপ উপশমে ব্যবহার করা হতো, সেটি এখন বিশেষ ধরনের চুল পড়ার সমাধানেও ব্যবহৃত হচ্ছে।’
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এটি একটি বিশেষ এবং বিরল ঘটনা। লেখাটি কোনোভাবেই কোনো রোগবালাইয়ে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে অনুপ্রাণিত করে না।আরও পড়ুনএই বিরল পরিস্থিতিতে মানুষ খেতে বসলে অঝোরে কাঁদতে থাকে৩০ জুলাই ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
ফিলিস্তিনের জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ফিলিস্তিন সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। তারা গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে দ্বি–রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
গাজা পুনর্গঠনে আরব দেশগুলোর পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্মকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান তিনি।
ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে নিউইয়র্কে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাই লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন।