কয়েক মাস আগে হামলার শিকার হন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান। এ ঘটনার পর নিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করেন। এরই মধ্যে কাতারের দ্বীপে বাড়ি কিনে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, নিজের নিরাপত্তার জন্যই কী বিদেশে বাড়ি কিনলেন নবাব পতৌদি?
কাতারের দোহার দ্য সেন্ট রেজিস মার্সা অ্যারাবিয়া আইল্যান্ডে বাড়ি কিনেছেন সাইফ আলী খান। এ বিষয় তিনি বলেন, “আমি যখন দ্বিতীয় বাড়ি কেনা বা ছুটি কাটানোর কথা ভাবি, তখন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর রাখি। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো নিরাপত্তা। আমি শুটিংয়ের জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। সুন্দর নির্জন একটা দ্বীপ। জায়গাটা এতটাই মনে ধরেছিল যে, ভেবেছিলাম যদি কোনো দিন এমন একটা জায়গায় থাকতে পারি।”
দ্বীপে বাড়ি কেনার কারণ ব্যাখ্যা করে সাইফ আলী খান বলেন, “বাড়িটি খুব বেশি দূরে নয়, সহজেই সেখানে যাওয়া যায়। তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি খুব নিরাপদ এবং সেখানে থাকতে খুব ভালো লাগে। দ্বীপের মধ্যে দ্বীপের ধারণাটিও খুব বিলাসবহুল, সুন্দর এবং বসবাসের জন্য সত্যিই চমৎকার জায়গা।”
আরো পড়ুন:
পলকের সঙ্গে প্রেম নিয়ে যা বললেন সাইফের পুত্র ইব্রাহিম
ব্যবসায়ীকে সাইফের মারধরের অভিযোগ, ঘটনার বর্ণনা দিলেন অমৃতা
খানিকটা ব্যাখ্যা করে সাইফ আলী খান বলেন, “আপনি যখন সেখানে বসবাস করবেন, তখন আপনার বেশ কিছু অনুভূতি হবে। যেমন— সেখানকার দৃশ্য, খাবার, জীবনযাপনের ধরন, জীবনযাত্রার গতি ইত্যাদি। আর এসবই বাড়িটি কেনার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে।”
ব্যক্তিগত জীবনে কারিনা কাপুর খানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন সাইফ আলী খান। এ সংসারে দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন সাইফ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।