নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি
Published: 26th, April 2025 GMT
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলতে বাধা নেই।
তবে আগে জুলাই অভ্যুত্থানসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরের গুম-খুন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত ‘জুলাই, পিলখানা, শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’ দাবিতে শহীদি সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা। এ সময় সরকারের কাছে শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশ থেকে চার দাবি উত্থাপন করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি এগুলো পূরণে ১০০ দিনের আলটিমেটাম দেন। দাবি পূরণ না হলে আগামী ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) ‘মার্চ ফর বাংলাদেশ’ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।
দাবিগুলো হলো– আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু, আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশ, আদালতের রায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ, শাপলা চত্বরের ঘটনার স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুপারিশমালা বাস্তবায়ন এবং সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সমাবেশে শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় ভ্যানের ওপর যখন পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তখনও জীবিত ছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
শহীদ সাইমের মা বলেন, ‘আমার বুকটা শূন্য করে দিয়েছে। ঈদ গেল, আমি করতে পারি নাই। বুকে রক্তক্ষরণ হলেও ছেলে হত্যার বিচার পাইনি। স্বৈরাচার হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দেওয়া হোক।’
শহীদ ইমাম হাসানের ভাই বলেন, ‘অভ্যুত্থানের সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেন আমাদের রাস্তায় দৌড়াতে হবে? সংস্কার হবে, নির্বাচনও হবে। এর আগে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে।’
শহীদি সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘সংস্কার না নির্বাচন, আপনারা এ খেলা বাদ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করুন। জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের আগে এ দেশে কোনো কিছু প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা যখনই তাদের (সরকার) কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়। যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা ও জুলাইয়ে হাজারো মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’
সমাবেশে বক্তৃতা করেন আপ বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি শেখ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণহত য র আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’
ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ