আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে যমুনার সামনে রাত ১১টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান আসিফ নজরুল। এ সময় তিনি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।

এতে বলা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

এর পাশাপাশি, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সবুজের বাড়িতে শোকের মাতম

সুদানের আবেই এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী সদস্য নিহত হন। তাদেরই একজন গাইবান্ধার সবুজ মিয়া (২৮)। 

নিহত সবুজ মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলাম ও ছকিনা বেগমের ছেলে। তার মৃত্যুর খবরে পলাশবাড়ীতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবার, স্বজন ও গ্রামবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

মহদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আকন্দ জানান, ২০০০ সালে সবুজ মিয়া মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন।

তিনি আরো বলেন, এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবুজ ছিলেন ছোট। তার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনি ১৭ মাস আগে নাটোর জেলায় বিবাহ করেন। বর্তমানে তার স্ত্রী ও মা বর্তমানে বাড়িতে আছেন। তিন মাস আগে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। এরপর গত মাসের ৭ নভেম্বর পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন তিনি। এক মাস ৭ দিন পর তার মৃত্যুর খবর আসে।

নিহত সবুজের মা ছকিনা বেগম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, আমার ছেলের বয়স যখন দুই বছর, তখন আমি আমার স্বামীকে হারাই। অভাবের সংসারে অনেক কষ্ট করে দুই সন্তানকে বড় করি। সেকারণে ছোট বেলাতেই সেনাবাহিনীতে চাকরিতে প্রবেশ করে সে। সন্তানকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এখন আমার ও তার স্ত্রীর দায়িত্ব কে নেবে?

নিহতের স্ত্রী নুপূর আক্তার বলেন, মাত্র দেড় বছর আগে বিয়ে হয় আমাদের। সংসারের মায়া-মমতা শুরুর আগেই আমি আমার স্বামীকে হারালাম। আমি সরকারের প্রতি আবেদন জানাই, যাতে দ্রুত আমার স্বামীর লাশ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করে। 

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ জানান, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। সরকার এবং সেনাবাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। আশা করি, দ্রুতই লাশ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।  

সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর আনুমানিক ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়। এতে দায়িত্ব পালনরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন এবং আরো আটজন আহত হয়।

ঢাকা/মাসুম/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ