ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, কনটেইনারে আছে কমলালেবু। কিন্তু, গোপনে তথ্যের ভিত্তিতে কনটেইনার খুলে কমলালেবুর কার্টনে পাওয়া গেছে ১ কোটি ২৫ লাখ শলাকা বিদেশি সিগারেট। এর মাধ্যমে অন্তত ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা চালিয়েছিল অসাধু আমদানিকারক।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) চট্টগ্রাম বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কমলালেবুর আড়ালে আমদানি করা সিগারেটের চালানটি জব্দ করেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার কাজী রাইহানুজ জামান জানিয়েছেন, ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আহসান করপোরেশন ফ্রেশ নেভাল অরেঞ্জ ঘোষণা দিয়ে ওই চালান আমদানি করে। চালান খালাসের দায়িত্বে ছিল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান দিবা ট্রেডিং। কাস্টমসের কাছে আগেই গোপন সংবাদ ছিল যে, এ চালানে ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য থাকতে পারে। কাস্টমস হাউজের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার সদস্যরা রপ্তানিকারকের ওয়েবসাইট, উৎস দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসার ধরণ ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা এসব বিষয় যাচাই করে গড়মিল পাওয়ায় চালানটি কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা চালানো হলে কনটেইনারে ১ হাজার ২৫০ কার্টন বিদেশি সিগারেট এবং ৩৮৮ কার্টন ফ্রেশ নেভাল অরেঞ্জ পাওয়া যায়।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ চালানের মাধ্যমে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। পুরো চালান জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমল ল ব ক স টমস ক র টন
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি
নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র আইনগত প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবী ও বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিরা।
শুক্রবার ১৪৭ জনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন মাধ্যমে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে তিনটি সংগঠন- তানযীমুল মাদারিসিল কাওমিয়া নরসিংদী এবং নরসিংদী জেলা খেলাফত মজলিস ও হেফাজতে ইসলাম। এ বিবৃতিগুলোতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাদিরা ইয়াসমিনকে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে ‘দুঃখজনক পরিস্থিতির দায়’ কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে নাদিরা ইয়াসমিনকে নিয়ে অপমানজনক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট দিচ্ছেন। মিথ্যা প্রচার এবং হুমকির মাধ্যমে তাকে মানসিক এবং সামাজিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যা একজন শিক্ষক ও নারী নাগরিকের জন্য শুধু অসম্মানজনকই নয়, সম্পূর্ণ বেআইনি।
তারা আরও বলেন, নাদিরা ইয়াসমিন দীর্ঘদিন ধরে নারী অধিকার, সমতা ও মানবিক মর্যাদার পক্ষে কাজ করে আসছেন। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘নারী অঙ্গন’ সংগঠনটি বহু নারী শিক্ষার্থীর আত্মপ্রত্যয় গঠনে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রেখে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নারীর উন্নয়ন এবং বিকাশকে ‘ইসলামবিরোধী’ হিসেবে উপস্থাপন করা প্রকৃতপক্ষে একটি অপপ্রচার, যা মুক্তচিন্তা, একাডেমিক স্বাধীনতা এবং সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকারবিরোধী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্মীয় সংগঠনের নামে এ ধরনের চাপ সৃষ্টি, হুমকি এবং সামাজিক ঘৃণার উসকানি আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক অশুভ দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। একজন শিক্ষকের জীবন ও কাজের পরিবেশ ধ্বংস করার এ প্রচেষ্টা শুধু একটি ব্যক্তিকে নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমরা শিক্ষকের একাডেমিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার অধিকারের ওপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এতে বলা হয়, বারবার নারীর প্রতি অপমান ও হয়রানির কারণ বর্তমান সরকারের নীরবতা। ধর্মের নামে যখন কোনো মহল এমন দমন ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সুবিধা নিতে চায়, তখন পরিস্থিতির এ রকম অবনতি ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রকে কঠোর ভূমিকা নেওয়া উচিত।
বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. যেসব ব্যক্তি ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে ও হুমকি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. প্রশাসনকে মিথ্যা প্রচার ও অনলাইন হয়রানি বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
৪. কলেজ কর্তৃপক্ষকে তার একাডেমিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।