সাত দশকের অভিনয়জীবন। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র থেকে বিজ্ঞাপনচিত্র—সব মাধ্যমেই পেয়েছেন সাফল্য। ১৯৬৮ সালে নাগরিকের ‘ইডিপাস’ দিয়ে টিভিতে অভিষেক। ১৯৭২ সালে প্রথম চলচ্চিত্র ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। এরপর উপহার দিয়েছেন একের পর এক মনে রাখার মতো চরিত্র। তিনি আবুল হায়াত।
দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবদান রাখার জন্য বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াত পেয়েছেন ‘মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা’।
দেশের সংস্কৃতি ও বিনোদন অঙ্গনের প্রধান ও আকর্ষণীয় আয়োজন ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৪’-এর আয়োজন চলছে এখন রাজধানীর বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নবীন, প্রবীণ ও খ্যাতিমান সব তারকার পাশাপাশি আমন্ত্রিত অতিথিরা। জমকালো এই অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে আজীবন সম্মাননা দেওয়ার ঘোষণা দেন উপস্থাপক আফজাল হোসেন। বড় পর্দায় দেখানো হয় আবুল হায়াতের জীবন ও কর্ম নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র।
আবুল হায়াতের হাতে সম্মাননার ক্রেস্ট তুলে দেন আরেক অভিনেত্রী দিলারা জামান। এ সময় মঞ্চে ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতার বিপদ
প্রতিবছর বর্ষা এলেই রাজধানী ঢাকা জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে নাগরিকদের জন্য এক বিভীষিকায় রূপ নেয়। মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাটে হাঁটু থেকে কোমরপানি জমে। তলিয়ে যায় স্কুল-কলেজ, অফিসপাড়া, এমনকি হাসপাতাল এলাকাও। বন্ধ হয়ে পড়ে যানবাহন চলাচল; দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। এ শুধু সাময়িক দুর্ভোগ নয়; বরং একটি দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার ফল।
জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। নতুন নতুন ভবন নির্মাণের সময় জলাধার বা পানি নিষ্কাশনের তেমন ব্যবস্থা রাখা হয় না। শহরের খাল, ডোবা ও জলাশয় দখল হয়ে গড়ে উঠেছে স্থাপনা। নর্দমা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নষ্ট, অপরিষ্কার কিংবা ভরাট হয়ে আছে ময়লা- আবর্জনায়। প্লাস্টিক, পলিথিন, খাবারের প্যাকেটসহ নানা বর্জ্য যত্রতত্র ফেলার কারণে পানি চলাচলের পথ আটকে যায়। এতে বৃষ্টির পানি স্বাভাবিকভাবে নিষ্কাশিত হতে পারে না, যা ঢাকাকে অচল করে ফেলে। এই দুরবস্থা দিনের পর দিন চলতে থাকলেও তা রোধে নেই দৃশ্যমান উদ্যোগ।
এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন সুপরিকল্পিত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। প্রথমেই ঢাকার বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার ও আধুনিকীকরণ আবশ্যক। প্রতিটি ওয়ার্ডে পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত ড্রেন নিশ্চিত এবং তা নিয়মিতভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। খালগুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরুদ্ধার করতে হবে। প্রয়োজনে আইনের মাধ্যমে কঠোরভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নগরের নতুন যে কোনো নির্মাণকাজে অবশ্যই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি সড়ক নির্মাণের সময় এমনভাবে নকশা করতে হবে, যাতে সহজেই পানি বেরিয়ে যেতে পারে।
এ সমস্যার টেকসই সমাধানে স্বতন্ত্র ও দক্ষ ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গঠন করা যেতে পারে। এই কর্তৃপক্ষ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবহেলা কিংবা যত্রতত্র ফেলা থেকে বিরত থাকা একান্ত প্রয়োজন। পানি নিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিতে নাগরিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।
ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা শুধু বর্ষাকালীন সমস্যা নয়। এটি জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্যও বড় হুমকি। প্রতিবারের মতো সমস্যা চিহ্নিত করে আলোচনা করলেই চলবে না; এবার চাই বাস্তবায়ন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। এই মহানগরকে বাসযোগ্য রাখতে হলে আজই শুরু করতে হবে কার্যকর উদ্যোগ। কারণ একটি অচল ঢাকা মানে পুরো দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হওয়া।
নবাব শাহজাদা: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
alinobab164@gmail.com