আব্দুন নূর সজলের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন শবনম বুবলী। রোমান্টিক-অ্যাকশন ঘরানার ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার শুটিং চলছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায়। গভীর অরণ্যে দৃশ্যধারণের সময় বন্য হাতি শুটিং সেটের কাছাকাছি চলে আসে। এতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন শিল্পী কলাকুশলীরা।

বিষয়টি নিয়ে দেশের গণমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে খবর প্রকাশ করেছে। গতকাল তারই একটি খবরের স্ক্রিন শট ফেসবুকে শেয়ার করেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। পাশাপাশি বেশ কটি প্রশ্ন ছুড়ে দেন এই ‘গেরিলা’ তারকা।

জয়া আহসান লেখেন, “এই আরেক উপদ্রব বনের ভিতর। বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মন চাইলেই লাইট-ক্যামেরা অ্যাকশন শুরু করা যায়? মাইকের শব্দ, শুটিং টিমের বর্জ্য, গান-বাজনা— এগুলো কি এলাউ করা ঠিক হবে এরকম একটা সেনসিটিভ জায়গায়?” এরপর নেটিজেনদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।

আরো পড়ুন:

বুবলী-সজলের শুটিংয়ে বন্য হাতি: জয়ার প্রশ্ন, নেট দুনিয়ায় সমালোচনা

বুবলী-সজলের শুটিংয়ে বন্যহাতি, ভীত-সন্ত্রস্ত পুরো ইউনিট

এদিকে, জয়া আহসানের এসব বক্তব্য নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার পরিচালক লাজুক। জয়া আহসানের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও মন্তব্য করেছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই পোস্টে বন বিভাগের কাছে সিনেমার শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। আমি মনে করি, তার এই পোস্ট অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেননা শুরু থেকেই সিনেমাটি আটকে দিতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। দুই বছর প্রজেক্টটি আটকে ছিল। সব চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে সিনেমাটি করছি।”

জয়া আহসানের আচরণে বিস্মিত বুবলী, সজলও। তা স্মরণ করে লাজুক বলেন, “এটা দুঃখজনক। অবাক হয়েছি। কেননা শুটিংয়ে হাতির আক্রমণ হয়েছে শুনে তিনি (জয়া আহসান) ফোন করে আমাদের একটা খবর নিতে পারতেন। এখানে বুবলী আছেন, আব্দুন নূর সজল আছেন। সজলের সঙ্গে তার অনেক কাজ হয়েছে। ওই জায়গা থেকেও খোঁজ নিতে পারতেন আমরা ঠিক আছি কি না। তা না করে উল্টো আমাদের শুটিং বন্ধের আহ্বান জানালেন! ওনার কাছে এরকম আচরণ আশা করিনি।”

বনের ভেতরে শুটিং করছেন না। তা উল্লেখ করে লাজুক বলেন, “উনি (জয়া আহসান) লিখেছেন আমরা বনের ভেতর শুটিং করেছি। এটা একেবারেই ভুল। আমরা গ্রামে শুটিং করছি। সিনেমাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছি। সেজন্যই সুন্দর একটি গ্রাম বেছে নিয়েছি। আমরা বনে হাতির কাছে যাইনি। বরং হাতি আমাদের এখানে এসেছে। কেননা বনে খাদ্য সংকট দেখা দিলে হাতি গ্রামে আক্রমণ করে। সেরকমই হয়েছে। আর উনি না জেনে লিখে দিলেন, বনের ভেতর শুটিং করেছি। ওনার এই কথায় আমি, শবনম বুবলী, সজলসহ সবাই অবাক হয়েছি। এটা নিয়েই বলাবলি করছিলাম। আর একটা কথা, জয়া আহসান একাই শুধু অ্যানিমেল লাভার নন, পশুপাখির প্রতি আমাদেরও ভালোবাসা আছে।”

গত ২১ মে থেকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার বিভিন্ন স্থানে সিনেমাটির শুটিং করছেন পরিচালক লাজুক। সজল-বুবলী ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন— সুমন আনোয়ার, আয়মান শিমলা, দিলরুবা দোয়েল, রফিকুল রুবেল, বাপ্পী প্রমুখ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জয় আহস ন চলচ চ ত র আহস ন র আম দ র করছ ন সজল র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ