বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করবে তুরস্ক। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. কেমাল মেমিসওলোর সঙ্গে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আমানুল হকের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। 

রোববার আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। 

এতে বলা হয়, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশে তুরস্কের হাসপাতাল নির্মাণ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ না দেওয়ায় হাসপাতালটি আলোর মুখ দেখেনি। বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সাম্প্রতিক তুরস্ক ভ্রমণকালীন বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের জায়গা বরাদ্দবিষয়ক সমস্যাটি তুলে ধরে। তিনি নিশ্চয়তা দেন, জায়গা বরাদ্দ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক। সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পুনরায় বিষয়টিতে জোর দেন। তিনি তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। 

তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে জানান, শিগগিরই একটি কমিটি গঠন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তুরস্কের হাসপাতালটি নির্মাণ হলে যেন বাংলাদেশিদের তত্ত্বাবধানেই পরিপূর্ণভাবে পরিচালিত হতে পারে সেজন্য প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে। এটি নির্মাণ হলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বড় পরিবর্তন হবে এবং জটিল রোগীদের তখন বিদেশমুখী হতে হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত সাতজন বাংলাদেশিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য তুরস্ক সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়াও তিনি প্রস্তাব করেন, সম্ভব হলে আরও আহত বাংলাদেশিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য তুরস্কে আনার সুযোগ দিতে। এর উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহত রোগীদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসায় সুস্থ করা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়, তাদের একটি তালিকা দিতে অনুরোধ করেন। 

বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্সদের তুরস্কে প্রশিক্ষণ প্রদান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রমে সহায়তা দিতে তুরস্ক থেকে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানো এবং অভ্যুত্থানে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন তাদের কৃত্রিম অঙ্গ স্থাপনে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। উভয় দেশের কল্যাণে স্বাস্থ্যখাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে পারস্পরিক সদিচ্ছা এবং যৌথ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বৈঠকটি শেষ হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত রস ক স ব স থ যমন ত র ত রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ