সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি খাতে ছাঁটাইয়ের ধারাবাহিকতা এবার এসে ঠেকেছে চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় অনলাইন মাধ্যম লিংকডইনে। প্রতিষ্ঠানটি ক্যালিফোর্নিয়ায় ২৮১ জন কর্মী ছাঁটাই করেছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সফটওয়্যার প্রকৌশলী। চাকরি হারিয়েছেন পণ্য ব্যবস্থাপক ও নিয়োগ বিষয়ক পদে থাকা কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

লিংকডইনের পক্ষ থেকে ছাঁটাইয়ের বিষয়টি জানানো হয় গত ১৩ মে। ছাঁটাই হওয়া অনেকেই পরে নিজের লিংকডইন প্রোফাইলে ‘ওপেন টু ওয়ার্ক’ ট্যাগ ব্যবহার করে নতুন চাকরির সন্ধান করছেন। মাইক্রোসফটের মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৮ হাজার ৪০০ জনকে কর্মসংস্থান দিচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে মাইক্রোসফট নিজেই বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রায় ছয় হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়। যা তাদের মোট কর্মী বাহিনীর প্রায় ৩ শতাংশ। সেই বড় ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবেই লিংকডইনের এই কর্মী ছাঁটাই ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালেও এক দফা ছাঁটাই করেছিল লিংকডইন। তখন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী রায়ান রসলানস্কি একটি আবেগপূর্ণ বার্তায় সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। তবে এবারের ছাঁটাই নিয়ে তাঁর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য আসেনি। এতে কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে—এই ছাঁটাই কেবল শুরু, নাকি আরও বড় কিছু আসন্ন?

বিশ্বের অন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্রও খুব আলাদা নয়। চলতি বছরেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে মেটা, গুগল, অ্যামাজন, অটোডেস্কসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। কেউ বলছে খরচ কমানো, কেউ বলছে কাঠামোগত রূপান্তর বা কর্মীর সংখ্যা পুনর্মূল্যায়নের কথা।

এই পরিবর্তনের পেছনে একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন এমন সব এআই টুল ব্যবহার করছে, যেগুলো নিজেরাই কোড লিখতে, ত্রুটি শনাক্ত করতে, এমনকি পণ্যের উন্নয়নসংক্রান্ত সিদ্ধান্তে সহায়তা করতে পারছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, একটি প্রকৌশলী দল যেখানে আগে অপরিহার্য ছিল, সেখানে এখন কি অল্পসংখ্যক জনবল দিয়েই কাজ চালানো সম্ভব নয়?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রযুক্তি খাতে একধরনের মৌলিক পরিবর্তন ঘটছে। সেখানে একদিকে এআই উদ্ভাবনের গতি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে অনেকের চাকরিকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে। লিংকডইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান সম্প্রতি এক আলোচনায় বলেন, ‘আমি মনে করি না, এখনকার কোনো এআই টুল সত্যিকারের বন্ধু হতে পারে। যদি তা–ই ভাবা হয়, তাহলে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত তার জন্য ক্ষতিকর।’

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ