কিশোরগঞ্জকে বলা হতো আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর সেখানে এখন দলের কোনো কার্যালয়ই নেই। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নেতারা সবাই আত্মগোপনে। এই দলের মিত্র জাতীয় পার্টির অবস্থাও নাজুক। তবে একেবারে বিপরীত চিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর। এই দুই দলের কার্যালয় সরগরম, বেড়েছে নেতা–কর্মীদের আনাগোনা। রাজনীতির ময়দানে নতুন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো কমিটি এখানে হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রপতি, দলের সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ছিলেন কিশোরগঞ্জের নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সব নেতারা এখন আত্মগোপনে। জেলা শহরের দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে থাকা কার্যালয়গুলোর অবস্থাও নাজুক। কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য কারাগারে। বাকি তিনজন আত্মগোপনে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। জেলার বাসিন্দা সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ করা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

গত বছরের এই সময়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ছিল নীরবতা। নেতা–কর্মীরা ভয়ে সেখানে বসতে পারতেন না। একই অবস্থা ছিল জেলা জামায়াত কার্যালয়ের। এখন এই দল দুটির কার্যালয় জমজমাট। নেতা-কর্মীদের পদচারণে মুখর থাকে দলীয় কার্যালয় দুটি। নেতা-কর্মীরাও ফুরফরে মেজাজে আছেন। বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী নানা ঝামেলা এড়াতে দলের কর্মসূচি থেকে দূরে থাকতেন, তাঁরা এখন কোনো কর্মসূচি হলে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। বিএনপি আগের কার্যালয় ছেড়ে নতুন করে বড়সড় কার্যালয় নিয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সরব। দলের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় আর জামায়াত নেতা এ টি এম আজহার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙাভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।

এদিকে কিশোরগঞ্জে এনসিপির কোনো কমিটি এখনো হয়নি। যাঁরা জাতীয় নাগরিক কমিটিতে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকে এনসিপির ব্যানারে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও গণসংযোগ এবং নানা সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কমিটি করার পাশাপাশি গণসংযোগ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ অন্যান্য ইলামিক দলগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। বাম দলের কর্মসূচি অনেকটা কার্যালয়কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।

কিশোরগঞ্জ জেলার রাজনীতির দৃশ্যপট পুরোটাই পাল্টে গেছে। এখন জেলার রাজনীতির মাঠে বিএনপি আর জামায়াত বেশ সক্রিয়। দল দুটি সংগঠনকে গোছানোর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠ গোছাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে এখন বেশ সক্রিয়। সুযোগ পেলেই জনসংযোগের পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে।

কিশোরগঞ্জের ছয়টি সংসদীয় আসনে বিএনপি এখনো সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনে ছয়জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তাঁরা সবাই নিজ নিজ এলাকায় নানা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলায় ছয়টি সংসদীয় আসন আছে। এগুলো হলো কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর), কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া), কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল), কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম), কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) ও কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর)।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনটি ১৯৯১ সালে বিএনপির দখলে ছিল। এরপর ১৯৯৬ সাল থেকে এখানে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি মারা গেলে এখানে সংসদ সদস্য হন তাঁর ছোট বোন চিকিৎসক জাকিয়া নূর (লিপি)।

এ আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল করিম খান (চুন্নু), জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহসভাপতি রুহুল হোসাইন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা খোকন ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. আতিকুর রহমান। এই আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে মোসাদ্দেক ভূঁইয়ার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে জেলা বিএনপির তিন সহসভাপতি জালাল উদ্দীন, আশফাক আহমেদ ও রুহুল আমিন আকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান কাকনের। এ ছাড়া এখানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জনসংযোগ করছেন মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল।

কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বেকায়দায় আছেন। এখানে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এম ওসমান ফারুক, জেলা বিএনপির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা ও জালাল মোহাম্মদ গাউস, যুববিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আহসানের। এখানে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চিকিৎসক কর্নেল (অব.) অধ্যাপক জেহাদ খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রবাসী এ কে এম আলমগীর এলাকায় পোস্টার লাগিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ-৪ আসন থেকে টানা বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২০১৩ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে পরপর চারবার সংসদ সদস্য হন তাঁর বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। ৫ আগস্টের পর থেকে রেজওয়ান আত্মগোপনে আছেন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরঞ্জন ঘোষ, ড্যাব নেতা অধ্যাপক ফেরদৌস আহমেদ লাকী, অবসরপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আবদুর রহিম মোল্লা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াতের প্রার্থী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আইনজীবী শেখ মো. রোকন রেজার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল মোমেন, বাজিতপুরের সাবেক পৌর মেয়র এহসান কুফিয়া, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক হাজি মাশুক মিয়া ও বিএনপি নেতা মীর জলিলের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আসনটি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা। বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন তাঁকে সহযোগিতা করেন, সে জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে একটি চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে।

এ ছাড়া রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের বাড়ি এখানে। তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। জেলা জামায়াতের আমির মো. রমজান আলীর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

কিশোরগঞ্জ-৬ আসন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। তিনি কয়েকবার এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর ছেলে বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংসদ সদস্য হন। তিনি আত্মগোপনে আছেন। এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের। জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা কবির হোসাইন।

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নির্বিঘ্ন ও বাধাহীন পরিবেশে দলীয় কর্মসূচি, সভা-সমাবেশসহ নানা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করা যাচ্ছে। প্রতিটা আসনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন সক্রিয়। তিনি আশা করছেন, আগামী নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনেই বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।

জেলা জামায়াতের আমির মো. রমজান আলী বলেন, ইতিমধ্যে ছয়টি আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা এলাকায় গণসংযোগ করছেন, প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর আশা, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জেলার ছয়টি আসনেই জামায়াতের প্রার্থীরা ভালো করবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ জ ল ব এনপ র স ব র ষ ট রপত র রহম ন ল ইসল ম কর ম র দল র ক অবস থ আওয় ম এ আসন

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের