ভুল সংবাদ প্রকাশ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা: প্রেস উইং
Published: 4th, June 2025 GMT
এখন থেকে ভুল সংবাদ প্রকাশ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করলে সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আমরা লক্ষ করেছি— অনেক সময় ভুল তথ্য আসে। আমরা চেষ্টা করি, আপনাদের সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল সংবাদগুলো ধরিয়ে দিতে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যাপারে উদার, আমরা সমালোচনাকে সব সময় স্বাগত জানাই। তবে, কাউকে এরকম লাইসেন্স দেওয়া হয়নি যে, তিনি চাইলেই একটা ভুল সংবাদ প্রকাশ করবেন। যারা এখন থেকে এ ধরনের ভুল, বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করবেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ গুম-সংক্রান্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা তাদেরকে বলেছেন, গুম-সংক্রান্ত বিষয়ে আশু করণীয় কী কী, এটা যেন দ্রুত দেওয়া হয়। যাতে সে অনুযায়ী, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো ব্যবস্থা নিতে পারে।
তিনি আরো বলেন, এর আগে আপনারা জানতেন, গুম-সংক্রান্ত কমিশনে ১ হাজার ৭৭০টার মতো কমপ্লেইন (অভিযোগ) ছিল। এটা আসলে ১ হাজার ৮৫০টা। গতকাল পর্যন্ত অভিযোগ এসেছে। যারা অভিযোগ করছেন, তারা কমিশনের কাছে ইন্টারভিউ (সাক্ষাৎকার) দিয়েছেন। ভিক্টিমদের (ভুক্তভোগী) সিকিউরিটির (নিরাপত্তার) কারণে অনেকগুলো চ্যাপ্টার (অধ্যায়) আমরা দিতে পারব না। সাতটা চ্যাপ্টার আমরা আপনাদেরকে দেব। আজকের ইন্টেরিম রিপোর্টে (অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন) মূলত ছিল— টর্চার (নির্যাতন) কীভাবে হয় এবং কারা অংশ নিয়েছে। মূল কালপ্রিট (অপরাধী) ছিল র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং (গোয়েন্দা শাখা)। যারা গুম হয়েছেন, তাদের ভাষ্যে কিলার ফোর্স (হত্যাকারী বাহিনী) র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং।
প্রেস সচিব বলেন, আরেকটি বড় ফাইন্ডিংস হচ্ছে, যারা এগুলো করেছেন, তারা কেন এগুলোতে যুক্ত হয়েছেন? দেখা যাচ্ছে, পুলিশের যারা করেছেন, বিপিএম, পিপিএম পাওয়ার জন্য; ভালো পোস্টিংয়ের জন্য করছেন। তারা প্রলুব্ধ হয়েছেন এগুলো করতে। যে লোকগুলো করছে, তারা আমাদের আশপাশেরই লোক। হয়ত কাউকে কাউকে আমরা হ্যাপি বার্থডেও জানাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সবাইকে এগুলো জানাতে। এটা বাংলাদেশের বিষয় না, গ্লোবাল ইস্যু। এটা পৃথিবীর সবাইকে জানানো উচিত। এখনো মিসিং আছেন ৩০০ জন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তারা কোথায় আছেন, জীবিত আছেন না মৃত, তা বিষয়টা জানতে হবে। তারা আমাদের ভাই, আমাদের বোন, এরা কোথায় গেল, এটা বের করা পর্যন্ত কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সব শুনে বলেছেন, এই বিষয়ে একটা হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। বাংলাদেশে যে ইনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (জোরপূর্বক গুম) ঘটনা ঘটেছে, সবার জন্য ভয়াবহ বিষয়। আপনারা জানেন, গণভবনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে একটা মিউজিয়াম করা হচ্ছে, তার একটি অংশে থাকবে এই ভিকটিমদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুকের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৯ থেকে ১৩ জুন ইউকে (যুক্তরাজ্য) সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি 'কিং চার্লস হারমনি' অ্যাওয়ার্ড পাবেন। আজ মিটিংয়ে জানানো হয়, প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাচ্ছেন সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুদকের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ বল ছ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবি মহিলা পরিষদের
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বুধবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে, ১৪ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত সংসদে নারী আসনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে আসতে পারেনি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছে। আরও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, সংসদে নারী আসন বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলের নারী প্রতিনিধিত্ব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নারী কমিশনের প্রতিনিধিত্ব এবং দেশের নারী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব অনুপস্থিত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যে দেখা গিয়েছিল, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংসদে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনের পক্ষে একমত হয়েছে, যদিও নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, জাতীয় সংসদে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্যের উপস্থিতি নারী সমাজের স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে এবং জনগণের কাছে তাঁদের দায়বদ্ধতা তৈরি করবে। অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের বিধান থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ নারী প্রতিনিধিত্ব হয় না। সাধারণত নারী আসনে মনোনীত হয়ে যাঁরা সংসদে গেছেন, তাঁরা যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেননি।
বিবৃতিতে ছয়টি দাবি তুলে ধরে বলা হয়, জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনে নারী-পুরুষ উভয়ই নির্বাচন করতে পারবেন। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে। সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করতে হবে। সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের প্রথা বাতিল করতে হবে। একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই ব্যবস্থা দুই থেকে তিন মেয়াদের জন্য থাকবে।