এখন থেকে ভুল সংবাদ প্রকাশ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করলে সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আমরা লক্ষ করেছি— অনেক সময় ভুল তথ্য আসে। আমরা চেষ্টা করি, আপনাদের সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল সংবাদগুলো ধরিয়ে দিতে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যাপারে উদার, আমরা সমালোচনাকে সব সময় স্বাগত জানাই। তবে, কাউকে এরকম লাইসেন্স দেওয়া হয়নি যে, তিনি চাইলেই একটা ভুল সংবাদ প্রকাশ করবেন। যারা এখন থেকে এ ধরনের ভুল, বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করবেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ গুম-সংক্রান্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা তাদেরকে বলেছেন, গুম-সংক্রান্ত বিষয়ে আশু করণীয় কী কী, এটা যেন দ্রুত দেওয়া হয়। যাতে সে অনুযায়ী, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো ব্যবস্থা নিতে পারে।

তিনি আরো বলেন, এর আগে আপনারা জানতেন, গুম-সংক্রান্ত কমিশনে ১ হাজার ৭৭০টার মতো কমপ্লেইন (অভিযোগ) ছিল। এটা আসলে ১ হাজার ৮৫০টা। গতকাল পর্যন্ত অভিযোগ এসেছে। যারা অভিযোগ করছেন, তারা কমিশনের কাছে ইন্টারভিউ (সাক্ষাৎকার) দিয়েছেন। ভিক্টিমদের (ভুক্তভোগী) সিকিউরিটির (নিরাপত্তার) কারণে অনেকগুলো চ্যাপ্টার (অধ্যায়) আমরা দিতে পারব না। সাতটা চ্যাপ্টার আমরা আপনাদেরকে দেব। আজকের ইন্টেরিম রিপোর্টে (অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন) মূলত ছিল— টর্চার (নির্যাতন) কীভাবে হয় এবং কারা অংশ নিয়েছে। মূল কালপ্রিট (অপরাধী) ছিল র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং (গোয়েন্দা শাখা)। যারা গুম হয়েছেন, তাদের ভাষ্যে কিলার ফোর্স (হত্যাকারী বাহিনী) র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং।

প্রেস সচিব বলেন, আরেকটি বড় ফাইন্ডিংস হচ্ছে, যারা এগুলো করেছেন, তারা কেন এগুলোতে যুক্ত হয়েছেন? দেখা যাচ্ছে, পুলিশের যারা করেছেন, বিপিএম, পিপিএম পাওয়ার জন্য; ভালো পোস্টিংয়ের জন্য করছেন। তারা প্রলুব্ধ হয়েছেন এগুলো করতে। যে লোকগুলো করছে, তারা আমাদের আশপাশেরই লোক। হয়ত কাউকে কাউকে আমরা হ্যাপি বার্থডেও জানাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সবাইকে এগুলো জানাতে। এটা বাংলাদেশের বিষয় না, গ্লোবাল ইস্যু। এটা পৃথিবীর সবাইকে জানানো উচিত। এখনো মিসিং আছেন ৩০০ জন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তারা কোথায় আছেন, জীবিত আছেন না মৃত, তা বিষয়টা জানতে হবে। তারা আমাদের ভাই, আমাদের বোন, এরা কোথায় গেল, এটা বের করা পর্যন্ত কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সব শুনে বলেছেন, এই বিষয়ে একটা হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। বাংলাদেশে যে ইনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (জোরপূর্বক গুম) ঘটনা ঘটেছে, সবার জন্য ভয়াবহ বিষয়। আপনারা জানেন, গণভবনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে একটা মিউজিয়াম করা হচ্ছে, তার একটি অংশে থাকবে এই ভিকটিমদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুকের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৯ থেকে ১৩ জুন ইউকে (যুক্তরাজ্য) সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি 'কিং চার্লস হারমনি' অ্যাওয়ার্ড পাবেন। আজ মিটিংয়ে জানানো হয়, প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাচ্ছেন সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুদকের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।

ঢাকা/হাসান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ বল ছ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীর ২২ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষের ঈদ উদযাপন

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পটুয়াখালীর ২২টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন। 

শুক্রবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় জেলার কলাপাড়া উপজেলার উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ জামে মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৮টায় সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরীফ জামে মসজিদে ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই দুই মসজিদে অনুষ্ঠিত নামাজে সবেচেয়ে বেশি মুসল্লি অংশ নেন। 

এছাড়া, পটুয়াখালী সদর উপজেলার চার, কলাপাড়ার আট, রাঙ্গাবালির দুই, গলাচিপার তিন, দুমকির দুই ও বাউফল উপজেলার তিন গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এসব গ্রামের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। 

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে যমুনা সেতু সড়‌কে যানবাহন চলছে থেমে থেমে

কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সবার সহযোগিতা চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়

এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১০০ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করছেন এসব গ্রামের মানুষ। তারা স্থানীয়ভাবে চট্টগ্রামের এলাহাবাদ সুফিয়া ও চানটুপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। 

বদরপুর দরবার শরীফে ঈদের জামাতে অংশ নেওয়া তুহিন কাজী বলেন, “সন্তানকে নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। পশু কোরবানি করেছি। নামাজের পরে বিশেষ মোনাজাতে পরিবারের সবার রোগ মুক্তি কামনা এবং প্রতিবেশীসহ সবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চেয়েছি।” 

উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ জামে মসজিদে জামাতে অংশ নেওয়া ৮০ বছর বয়সী আবদুল গনি মিয়া বলেন, “আমি ছোট থেকেই পৃথিবীর যে কোনো দেশে ঈদের চাঁদ দেখার পরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করে আসছি। আমার বাবাও তাই করতেন।”

বদরপুর দরবার শরীফ জামে মসজিদের ইমাম সৈয়দ আরিফ বিল্লাহ মাদানী বলেন, “আমরা ঈদের নামাজ পড়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব মুসল্লির শান্তি কামনায় দোয়া করেছি।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ