সৎ নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে: জামায়াত আমির
Published: 8th, June 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সৎ নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমি সাধারণ একজন মানুষ। ন্যায়বিচারের দাবি যার, সে-ই ন্যায়ের পক্ষে ভাবে। যদি সৎ নেতৃত্ব আসে, তবে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে। আল্লাহ যেন দেশকে এমন নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন, যিনি ন্যায়ের ওপর অটল থাকবেন।
আজ রোববার দুপুরে নিজ এলাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনশো আসনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, আমরা সারাদেশেই নির্বাচন করবো। যারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করবে, আমরা তাদের সঙ্গেই থাকবো।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা.
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোনো রাজতন্ত্র নয়। অথচ গত দেড় যুগে যা হয়েছে, তা রাজতন্ত্রেও হয় না। গত ১৬ বছর আমাকে আপনাদের সামনে আসতে দেওয়া হয়নি। এ সময়ের মধ্যে অনেকেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের সামনে উপস্থিত হতে পারলে ভালো হতো।
বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, মানুষকে সাজানো মামলায় ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। আমাদের রিমান্ডে নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হতো। আমরা তখন বলেছি- আমাদের স্বপ্ন মানবিক বাংলাদেশ।
উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, ঢাকার পল্টন থানা জামায়াত আমির শাহীন আহমেদ খান, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, শ্রীপুর জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শামসুল হক, প্রিন্সিপাল আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক মনির উদ্দিন চৌধুরী, কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির দপ্তর সম্পাদক এনামুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম জ ম য় ত র আম র জ ম য় ত আম র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কোরবানির চামড়া: টোটকা দাওয়াই কি উপকারে আসবে?
কোরবানির চামড়া বেশ কয়েক বছর ধরে সংকটের যে বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছিল, এবারও সেখান থেকে বের হতে পারেনি। সরকার ঈদুল আজহার পূর্বে এবার বেশকিছু পদক্ষেপ নিলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত, কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম গতবারের চেয়ে এবার ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করলেও শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলছে, বাস্তবে সেই দামে চামড়া বিক্রি হয়নি। কোথাও গতবারের মতো ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে, কোথাও তাও পাওয়া যায়নি। উত্তরাঞ্চল, রাজধানীসহ সারাদেশের চিত্র এমনই। এতে সংকটে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এমনকি চট্টগ্রামে প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে চামড়া রাস্তায় ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আমরা জানি, ঈদুল আজহার সময়েই বছরে ব্যবহৃত ৮০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা হয়। স্পষ্টতই সময়টা চামড়া শিল্পের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অথচ চামড়ার ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই খুশি নন। ঈদের মৌসুমে চামড়া সংগ্রহে নামেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা, যারা এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম পর্যায় থেকে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করেন। অনেক মাদ্রাসা-এতিমখানার পক্ষ থেকেও চামড়া সংগ্রহ করা হয়। আগে কোরবানির চামড়া এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের অন্যতম উৎস ছিল, যা দরিদ্র কিংবা এতিম শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করত। কয়েক বছর ধরে চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ার ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি দরিদ্র মানুষও বঞ্চিত হচ্ছে।
২০১৯ সালে চামড়ার বাজারে যে ধস নেমেছিল তারপর থেকে প্রতিবছরই পরিস্থিতি পরিবর্তনের আশা থাকলেও বাস্তবে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি, এবারও তথৈবচ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কিংবা মাদ্রাসাগুলো চামড়া সংগ্রহে পরিবহন, লবণ, শ্রমিক ও সংরক্ষণ ব্যয় শেষে চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে অনেককেই ফিরতে হয় শূন্য হাতে।
ঈদুল আজহায় লাখ লাখ কোরবানি হয়, তার মানে চামড়ার উৎপাদন বাড়ছে, অথচ দিন দিন কমছে রপ্তানি। বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য হলো- উল্টো চামড়াজাত পণ্য তৈরির জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। জুতাসহ চামড়াজাত পণ্যের যে চাহিদা রয়েছে, তা পূরণে আমাদের দেশীয় চামড়া থাকা সত্ত্বেও আমদানি করতে হচ্ছে কেন? এবং চামড়া রপ্তানি কমে যাচ্ছে কেন? কারণ আমাদের চামড়া শিল্প এখনও সে মান ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে পারেনি।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে এ শিল্প হস্তান্তরের পরও দুরবস্থা কাটেনি। কোরবানির চামড়ার দাম কমার পেছনে এটাও অন্যতম কারণ। সেজন্য কোরবানির চামড়ার দাম পেতে গোড়ায় হাত দিতে হবে। দরিদ্র মানুষ, ব্যবসায়ী এবং সর্বোপরি দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে চামড়া নিয়ে ভালোভাবে ভাবতেই হবে। টোটকা দাওয়াই দিয়ে যে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না, গত কয়েক বছর ধরে তা-ই আমরা দেখে আসছি।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com