সিঙ্গাপুর ম্যাচে প্রথাগত স্ট্রাইকার চান এমিলি
Published: 8th, June 2025 GMT
আগামী মঙ্গলবার উৎসবের মঞ্চ হয়ে ওঠার অপেক্ষায় ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম। যেখানে এশিয়ান কাপ ২০২৭-এর বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর।
চার দলের গ্রুপ থেকে একটি দলই জায়গা করে নেবে মূল পর্বে। তাই প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা, উদ্দীপনা ও প্রত্যাশার আবহ। যেমনটা বহুদিন দেখা যায়নি বাংলাদেশের ফুটবলে।
বাংলাদেশের ফুটবলে এখন এক নতুন আবহ। ছয়জন প্রবাসী ফুটবলার যোগ দিয়েছেন দলে। হামজা, শমিত যেমন একেবারে আন্তর্জাতিক মানের, তেমনি ফাহামিদুল প্রথম ম্যাচেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর সামর্থ্য।
তাঁদের আগমনে যেমন বদলে গেছে দল, তেমনি বদলেছে ফুটবল নিয়ে মানুষের ধারণাও। একসময় যে দলের খেলা নিয়ে মানুষ শুধু হতাশ হতো, এখন সেই দলের ম্যাচের টিকিট মিলছে না। জাতীয় দলের ম্যাচ ঘিরে এমন উত্তাপ সাম্প্রতিক সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি।
তবে মাঠের পারফরম্যান্সই শেষ কথা। জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলি তাই বাস্তবতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি, ‘মাঠের বাইরে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাতে মাঠে ভালো খেলার কোনো বিকল্প নেই এখন। মাঠেই নিজেদের প্রমাণ করে জয় পেতে হবে।’
ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন পাঁচজন প্রবাসী ফুটবলার। সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য দলে যোগ দিয়েছেন শমিত সোম। মাঝমাঠে কাকে রেখে কাকে বসানো হবে, সেটা এখন কোচের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত। সমাধান কী হতে পারে?
এমিলি বলছেন, ‘এই ম্যাচে জামাল ভূঁইয়া একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারে, তার জায়গায় একাদশে দেখা যেতে পারে শমিতকে। আর রাকিবকে পেছনে এনে আল-আমিনকে সামনে আনা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারে কাজেম শাহ।’
আরও পড়ুনসিঙ্গাপুরের বিপক্ষে প্রথম খেলার স্মৃতি৬ ঘণ্টা আগেভুটান ম্যাচে রাকিব স্ট্রাইকার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। এমিলির মতে, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে একজন প্রথাগত নাম্বার নাইন দরকার। তবে কোচ হয়তো সুমন রেজা বা আল-আমিনের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছেন না বলে রাকিবকে সামনে রাখা হয়েছিল ভুটান ম্যাচে।
কিন্তু রাকিব উইং দিয়েই খেলেছেন বেশি। এমিলি বলেন, ‘জানি না কোচ কী ভাবছেন। নিশ্চয়ই তাঁর একটা পরিকল্পনা আছে। তবে আমি মনে করি, সিঙ্গাপুর ম্যাচে একাদশে প্রথাগত একজন স্ট্রাইকার বা নাম্বার নাইন রাখা উচিত। সে ক্ষেত্রে আল আমিন বিবেচনায় আসতে পারে অথবা সুমন রেজাকেও ভাবতে পারেন কোচ।’
তবে শুধু আক্রমণ নয়, রক্ষণভাগ নিয়েও এমিলির পর্যবেক্ষণ আছে। তাঁর কথা, ‘মালদ্বীপের বিপক্ষে ৫ জুন প্রীতি ম্যাচে ক্রস থেকে গোল করেছে সিঙ্গাপুর। আমাদের রক্ষণভাগ বাতাসে বল ক্লিয়ার করতে খুব ভালো না। তপু ভালো সেন্টারব্যাক হলেও মাঝেমধ্যে ভুল করে বসে। সিঙ্গাপুর দলে ফান্দির মতো লম্বা ফরোয়ার্ড আছে, যে মালদ্বীপ ম্যাচে জোড়া গোল করেছে। আমাদের জন্য এটা বড় সতর্কবার্তা।’
আরও পড়ুনসিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয়ই হবে কাবরেরার ঈদ উপহার০৬ জুন ২০২৫ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের মাঝমাঠ জমাট থাকায় রক্ষণভাগে চাপ পড়েনি তেমন। কিন্তু সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে তা হবে না। তাই রক্ষণ আরও জমাট করতে হবে, মাঝমাঠকে হতে হবে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়, এমনটাই মনে করছেন এমিলি।
বাংলাদেশের আরেক কিংবদন্তি শেখ মোহাম্মদ আসলাম মনে করেন, সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে প্রবাসীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বোঝাপড়া কতটা হয়েছে, সেটা বড় ব্যাপার।
আসলাম এ দিকটার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলছিলেন, ‘আশা করি প্রবাসীদের সঙ্গে স্থানীয়দের ভালো বোঝাপড়া হবে সিঙ্গাপুর ম্যাচে। প্রবাসীদের কারণে দল শক্তিশালী হয়েছে, ম্যাচ বাংলাদেশের পক্ষেই যাবে আমার বিশ্বাস।’
মঙ্গলবারের ম্যাচ শুধু পয়েন্টের লড়াই নয়, দেশের ফুটবলের প্রতি আস্থা ফেরানোরও লড়াই। মাঠের ফুটবল যদি আশার সঙ্গে সুর মেলাতে পারে, তাহলে হয়তো বলা যাবে বাংলাদেশের ফুটবলের নবজাগরণের শুরু সিঙ্গাপুর ম্যাচ দিয়েই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ শ র ফ টবল ফ টবল র র জন য প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।