জুন মাসে এনবিআরকে দিনে গড়ে ৪৭০০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে
Published: 9th, June 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের শেষ মাস, অর্থাৎ জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি শুল্ক-কর আদায় করতে হবে। লক্ষ্য অর্জনে শুধু জুন মাসেই সব মিলিয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। এনবিআর এর আগে কখনো এক মাসে এত শুল্ক-কর আদায় করতে পারেনি।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট ৩ লাখ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে। এটি সাময়িক হিসাব। ভ্যাটের রিটার্ন দাখিলের হিসাবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থবছরের শুরু থেকেই লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে পড়েছে এনবিআর। ক্রমে লক্ষ্য ও আদায়ের ব্যবধান বাড়তে থাকে। বছর শেষে বড় রাজস্ব–ঘাটতির শঙ্কা করা হচ্ছে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। এ ছাড়া অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতিও রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়ার কারণ। আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আদায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। আয়কর কর কম আদায় হয়েছে। সর্বশেষ এনবিআর বিলুপ্তি নিয়ে আন্দোলনের প্রভাবও পড়েছে। তাঁরা বলেন, প্রতিবছর এনবিআরের ওপর যৌক্তিকভাবে বিশাল লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জিত হয় না।
জুন মাসে ঈদ উপলক্ষে ১০ দিন সরকারি ছুটি আছে। এ জন্য রাজস্ব আদায়ে গতি কম থাকবে। তাই এ বছরের বিশাল লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে জানান অনেক শুল্ক-কর কর্মকর্তা।
এনবিআর সূত্রগুলো বলছে, মে মাস পর্যন্ত শুল্ক খাতে সাড়ে ৯২ হাজার কোটি টাকা, ভ্যাট খাতে ১ লাখ সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা এবং আয়কর খাতে ১ লাখ ৪ হাজার ৪১৩ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: লক ষ য
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নীতি সুদহার কমাল ভারতের শীর্ষ ব্যাংক আরবিআই
আবারও নীতি সুদহার কমিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। শুক্রবার ঋণনীতির ঘোষণায় টানা চতুর্থবারের মতো সুদহার কমিয়েছে তারা। এবার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট রেপো হার কমিয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ শতাংশ সুদ কমিয়েছে আরবিআই।
৪ থেকে ৬ জুন অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি নগদ জমার অনুপাতও (সিআরআর) ১০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় তরল অর্থের জোগান বাড়ানো হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতে আড়াই লাখ কোটি রুপির জোগান বাড়বে। ব্যাংকগুলোও সহজে ঋণ দিতে পারবে—এই পরিস্থিতি বাজারে চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, সুদের হার কমায় আবাসন ও গাড়ির ঋণের সুদ কমবে। কমবে মাসিক কিস্তির বোঝা। ফলে ভোক্তাদের ব্যয়ের সক্ষমতা বাড়বে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সহায়ক হবে এই সিদ্ধান্ত। এ পরিস্থিতিতে ভারতের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগাতে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্তে আবাসন খাতে চাহিদা বাড়বে।
আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, ভবিষ্যতে সুদের হার আরও কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতিকে ধারণ করার নীতির বদলে নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে। অর্থাৎ প্রয়োজনে সুদ বাড়ানোর পথও খোলা থাকছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, পণ্যের দামের ওঠানামা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আরবিআই এখন আরও সতর্ক। বন্ধন ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যাল বলেন, ‘আমরা ধারণা করেছিলাম, ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট সুদ কমানো হবে; কিন্তু ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো আমাদের বিস্মিত করেছে। এ ছাড়া স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি ও ব্যাংক রেট ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।’
গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিমত্তা দেখিয়েছে; সেই সঙ্গে আছে স্থিতিশীলতা। ভারতীয় অর্থনীতি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। বিকশিত ভারতের লক্ষ্য পূরণের জন্য সেই গতি আরও বাড়াতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে ভারতীয় অর্থনীতি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের চার ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হতে পারে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আরবিআই।