যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি
Published: 10th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে টিকা বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী শীর্ষ কমিটি- অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস (এসিআইপি)-এর সব সদস্যকে একযোগে বরখাস্ত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। টিকা নিয়ে সংশয়বাদী হিসেবে পরিচিত কেনেডি গতকাল সোমবার এ ঘোষণা দেন।
আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কেনেডি তার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক সম্পাদকীয়তে বলেছেন, অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেসের (এসিআইপি) সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ টিকার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে।
আরো পড়ুন:
লস অ্যাঞ্জেলেসে আরো ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড, ৭শ মেরিন সেনা মোতায়েন
বিক্ষোভে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করলেন ট্রাম্প
কেনেডির দাবি, কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পেয়েছেন। তার ভাষায়, “এসিআইপির বেশিরভাগ সদস্যই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পয়সাকড়ি পেয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে টিকা বিপণনকারী কোম্পানিও।”
এসিআইপির ১৭ সদস্যের মধ্যে আটজনকেই নিয়োগ দিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে। বেশিরভাগ সদস্যই নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মতে, “এই কমিটি যদি তিনি ভেঙে না দিতেন, তাহলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত নতুন সদস্য নিয়োগ করতে পারত না ট্রাম্প প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে এই কমিটি স্বার্থের দ্বন্দ্বে জর্জরিত এবং যেকোনো টিকার অনুমোদনে নামমাত্র সিলমোহরের ভূমিকা পালন করছে।”
কেনেডির দীর্ঘদিনের টিকাবিরোধী মনোভাব নিয়ে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বরাবরই উদ্বিগ্ন। কেনেডি যদিও বলেছেন, তিনি টিকা ‘সরিয়ে নিচ্ছেন না’।
কেনেডির দাবি, তিনি আমেরিকানদের জন্য ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ টিকা নিশ্চিত করতে চান।
এসিআইপির সব সদস্যদের বরখাস্ত করার কেনেডির পদক্ষেপটি তার শপথবাক্যের সময় দেওয়া আশ্বাসের ঠিক বিপরীত। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সেনেটর ও চিকিৎসক বিল ক্যাসিডি বলেছেন, এসিআইপিতে কোনো পরিবর্তন না করার আশ্বাস তাকে দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ক্যাসিডি সোমবার এক্স পোস্টে লেখেন, “এখন শঙ্কা হচ্ছে- এসিআইপি এমন লোকে ভরে যাবে, যাদের টিকা নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই, কেবল সন্দেহ আছে। কেনেডির সঙ্গে মাত্রই কথা বলেছি আমি এবং তেমনটা যেন না হয়, সেজন্য তার সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাব।”
শিশু চিকিৎসক ও ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ পল অফিট কেনেডির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। পল অফিট নিজেও ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ওই টিকা প্যানেলের সদস্য ছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, “তিনি (কেনেডি) মনে করেন, যারা টিকা সম্পর্কে ইতিবাচকভাবে কথা বলেন বা টিকাবিষয়ক সুপারিশ করেন, তারা নিশ্চয়ই গভীরভাবে ওষুধশিল্পের পক্ষে চলে গেছেন।
অফিট বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “তিনি এমন একটি সমস্যার সমাধান করতে যাচ্ছেন, যার আদতে অস্তিত্বই নেই।”
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, বোর্ড সদস্য হিসেবে কাদের আনবেন তা কেনেডি খোলাসা করেননি। আগামী ২৫ জুন এসিআইপির সভার জন্য দিন ঠিক করা হয়েছে, যেখানে কোভিড, ফ্লু, মেনিনজাইটিস, আরএসভিসহ বিভিন্ন রোগের টিকার সুপারিশ নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র স ব স থ যমন ত র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কাশিমপুর কারাগারে গোপালগঞ্জ আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাবুদ্দিন আজমকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জে জেলা কারাগারের জেলার তানিয়া জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো: সাজেদুর রহমান জানান, সেনাবাহিনীর ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানো, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মীরপুর এবং যাত্রাবাড়ি থানায় দায়েরকৃত হত্যা, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর ওপর হামলা মামলার এজাহার নামীয় আসামি জিএম সাহাবুদ্দিন আজমকে রাত ৯টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের গোপালগঞ্জ সদর আমলী আদালতে হাজির করা হয়।
ওই আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনুশ্রী রায় তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ নেতাকে গোপালগঞ্জ জেলা কারগারে পাঠানো হয়।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, জিএম সাহাবুদ্দিন আজমের স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে (৩৭) সেনাবাহিনীর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকেও রাতে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জে জেলা কারাগারের জেলার তানিয়া জামান জানান, রাত সাড়ে ৯টায় জিএম সাহাবুদ্দিন আজমকে জেলা কারগারে আনা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ঢাকার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। তারপর তাকে নিয়ে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের দিকে রওনা হয় গাড়ি বহর।
উল্লেখ্য, মেডিকেল ভিসায় ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার সকালে জিএম শাহাবুদ্দিন আজম বেনাপোলে ইমিগ্রেশনে যান। কিন্তু তার পাসপোর্ট লক থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তিনি হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। পরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ গোপালগঞ্জে নিয়ে আসে।