ভোক্তাদের আরও স্বস্তি দিতে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে তৈরি হলে ও সক্ষমতা বাড়লে এই খাতের দুর্বৃত্তরা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবে।’

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি মিলনায়তনে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত ‘ভোক্তা অধিকার শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

আলোচনা সভার স্বাগত বক্তব্যে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বিগত রমজান মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের তদারকির ফলে পণ্যের দাম বাড়েনি। এতে বোঝা যায় যোগ্য ব্যক্তি দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’

ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের একটি সিন্ডিকেট তৈরির সময় এসেছে মন্তব্য করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যায় ও প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার যে সংস্কৃতি, সেখান থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে ক্রয়ক্ষমতা। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি কমাতে কাজ করছে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। বিভিন্ন রকম বাজার সিন্ডিকেট হয়েছে এবং ভোক্তার অধিকার ব্যাপকভাবে খর্ব হয়েছে। এখন সময় এসেছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীভাবে গড়ে তোলার।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম, ক্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামিল চৌধুরী, ক্যাবের উপদেষ্টা আনিসুল হক। এ সময় দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও বিভাগের ক্যাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ