ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন হ্যাক করে ‘জনগণের প্রতি জেগে ওঠার’ আহ্বান
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারের সময় হঠাৎ একটি ভিডিও দেখা গেছে, যাতে ‘জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘জেগে উঠতে’ আহ্বান জানানো হয়েছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার দেখার সময় দর্শকদের অনেকেই এই ভিডিওটি দেখেছেন বলে জানা গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টিভি দেখার সময় কেউ যদি কোনো অপ্রাসঙ্গিক বা বিরক্তিকর বার্তা দেখে থাকেন, তাহলে ধরে নিতে হবে শত্রুপক্ষ স্যাটেলাইটের সিগন্যালে বাধা (জ্যাম) দিয়েছে।
যে ভিডিওটি সম্প্রচারিত হয়েছিল, তা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ইরান সরকারকে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, ‘নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নিয়ন্ত্রণ করুন।’
ভিডিওর সূত্র কিংবা এই সাইবার হামলার পেছনে কে বা কারা জড়িত, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভিডিওটির ওপরের ডান পাশে একটি সিংহ প্রতীক দেখা গেছে। এর পাশাপাশি ভিডিওতে ১৩ জুন ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ অভিযানে নিহত ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের ছবিও দেখানো হয়েছে।
ভিডিওতে ২০২২ সালে ইরানের দেশব্যাপী বিক্ষোভের দৃশ্যও ছিল। ওই সময় হিজাব ‘যথাযথভাবে না পরার’ অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল ইরান।
ইরানের ওই বিক্ষোভের প্রধান স্লোগান ছিল—‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও সম্প্রতি এই স্লোগান ব্যবহার করে ইরানিদের ‘জেগে ওঠার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তথ্য এখন জাতীয় নিরাপত্তার কৌশলগত অস্ত্র: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা এখন কেবল অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি জনমতের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিভ্রান্তিকর তথ্য একটি মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র; এটি মোকাবিলায় চাই সত্য, আস্থা এবং তথ্যভিত্তিক সচেতনতা।”
বুধবার (১৮ জুন) মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) অনুষ্ঠিত ‘অ্যাডভান্সিং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: ইউজ অফ ইনফরমেশন এজ এ পাওয়ারফুল স্ট্রাটেজিক টুল’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে এনডিসি এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিপিএসএস)।
আরো পড়ুন:
বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে অবদানের জন্য পুরস্কার পাচ্ছে ৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে পরিবেশ উপদেষ্টা
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ আমাদের ইতিহাসে এক ট্র্যাজেডি। ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল ভুল তথ্য ও ষড়যন্ত্র। আজকের দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব ঠিক তেমনি জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
তিনি বলেন, “তথ্যের স্বপ্রণোদিত প্রকাশ নিশ্চিত না হলে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, ফলে গুজবই সমাজে চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রের প্রকল্পের খরচ জনগণের টাকায়। তাই জনগণের উচিত সেই প্রকল্প সম্পর্কে জানার অধিকার থাকা।”
উপদেষ্টা জলবায়ু সংকটকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “বৈশ্বিক উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আমাদের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডকে ডুবিয়ে দিতে পারে। তথ্য শুধু প্রযুক্তি দিয়ে নয়, লোকজ জ্ঞান দিয়েও গঠিত। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষদের পূর্বাভাস মডেলের চেয়েও বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে স্যাটেলাইটভিত্তিক তথ্য ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন সেই তথ্য বিশ্লেষণের সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং তা সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দেওয়া।
তিনি বলেন, “তথ্য যদি গোপন রাখা হয়, সত্য যদি দমন করা হয়, তাহলে আমরা টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দুটোই হারাব। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা যেন একটি তথ্যভিত্তিক, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে পারি।”
অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক। এছাড়া চারজন অংশগ্রহণকারী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এতে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, অংশগ্রহণকারী এবং উন্নয়ন পেশাদাররা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী