Samakal:
2025-09-18@01:49:48 GMT

বিশুদ্ধ জঙ্গলের ঠিকানা

Published: 3rd, July 2025 GMT

বিশুদ্ধ জঙ্গলের ঠিকানা

মহাপ্লাবনের পর অনেক সময় কেটে গেছে। নির্বাচিত মানুষ ও জীবজন্তু নিয়ে ভাসছে নূহের নৌকা। কমতে শুরু করেছে প্লাবনের জল। এ অবসরে পৃথিবীর কোনো ভূমি জেগে উঠেছে কিনা, তার তালাশে ঘুঘু পাখি উড়ালেন পয়গম্বর। পাখি যখন ফেরে না, বুঝতে পারেন সামনে কোথাও আছে ভূমি। প্লাবনের জলে উর্বর আদিম এক পৃথিবী। অপেক্ষায় আছে হয়তো, কীসের? মানুষের। যে এ অদেখা ভূমি প্রত্যক্ষ করবে, বর্ণনা করবে। অকর্ষিত ভূমি চাষ করবে।
‘যেখানে জঙ্গলের শুরু’ বইয়েও একটা পাখি উড়িয়ে দিয়েছেন কবি উপল বড়ুয়া। পাখির চোখ অনুসরণ করে তিনি দেখেন ‘জঙ্গলে যাওয়ার রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি–/পাখিদের অনুসরণ করে এত দূর এসে দেখি/এখানে সব দালান, মানুষে ভরা।’ (হারানো জঙ্গলে)
জঙ্গলের হয়তো নিজস্ব ভুবন আছে। যদিও ভুবন কথাটাই এলেবেলে হতে পারে। বরং আমরা যদি কোনো বিশুদ্ধ জঙ্গল খুঁজি, সেটা কেমন? তার ঠিকানা কি জানা আছে? যাই হোক, নিশ্চয় তার কোনো স্মৃতি বিদ্যমান নাগরিক মন-মগজে। সেখানে যাপনের কিছু অভিজ্ঞতা আছে, যা কিনা বিশুদ্ধ জঙ্গলের কল্পনা জাগিয়ে তোলে। এই যে মানুষের জঙ্গল লাগে না। লাগে জঙ্গলের স্মৃতি! ‘বনের পাশে এক শুকনো শীর্ণ নদী/সেই নদীর পাড়ে খানিক বসে দেখি/কেমন শান্ত চারপাশ, হালকা শীতে/রোদ পোহাচ্ছে বক, জনশূন্যে ঘেরা একটু দূরে মরা পাতার স্তূপ, যেন/বহু আগের দৃশ্য তৈরি করে রাখা।’ (এখানে, বনে)
অথবা মদ-মাংসের আয়োজনে আদিম জঙ্গলের প্রতি আমাদের টান। যেমন ‘তাঁবু ফেলা হবে আজ; ঝলসানো হবে পাখির হৃদয়’। (রাবার বাগানের রাত্রি)
মানুষ যখন পোড়ে– জঙ্গলও পোড়ে, যদিও উপল বড়ুয়ার জঙ্গলমুখী হওয়া মূলত কৃত্রিম ও জটিল জগৎ থেকে দূরে সরে শান্তির অন্বেষণ। কিন্তু জঙ্গল পোড়া আগুনে বিদ্ধ হন তিনি। বেশ পরিহাসমূলক হলেও বেশ সহজ ও জুতসই ভাষায় সেই বর্ণনা আছে, ‘সারা দিন গেল এক পরিবেশবাদীর সঙ্গে/হাতি বাঁচানোর কথা বলতে বলতে আমরা/ঢুকে পড়লাম জঙ্গল রক্ষার দাবিতে। সন্ধ্যায় শিল্পকলায় টি স্টলে প্লাস্টিকের কাপে/চায়ে চুমুক দিয়ে আমি তাকালাম তার পায়ে/বললাম, আপনার জুতোটা বেশ সুন্দর তো!/মুচকি হাসিতে জবাব তার, পশমের তৈরি।’ (পরিবেশবাদীর সঙ্গে)
এই বইয়ে উপল বড়ুয়ার ভূমিকা স্বভাব কবির। যেভাবে আমরা বলি-ভাবি, তা কবিতা-গান হয়ে উঠে এসেছে। অন্তত এমনটা ভাবতে বাধ্য করে। শব্দ বাছাই ও এর অর্থ-অনর্থ থেকে বাস্তবিক জঙ্গলের অংশ হয়ে ওঠার বাসনায় নিয়ে গেছে। কিন্তু উপল নিজেকে ঠিকই আলাদা করে শনাক্ত করতে পেরেছেন। হয়তো ভাবালুতা ভর করবে, ঠিক তখনই শব্দরা পিঠ চাপড়ে জানিয়ে দেবে, আমরা কোথায় আছি। নগরে, ব্যস্ত জীবনে। জঙ্গল যাপন স্রেফ বিশ্রামই। যে জগৎ বড়ই বিপন্ন। যেখানে জঙ্গলের শুরু আছে, কিন্তু আমরা জানি বিশুদ্ধ জঙ্গলের ঠিকানা মানুষ জানে না। যদি জানত, তবে কি কবিতা লিখত! মানুষের ভাষায়! নাকি জঙ্গল যখন কবিতা হয়ে ওঠে তখন মানুষ আসলেই মূক-বধির। সে যখন অংশ হয়ে ওঠে সমগ্র নিয়ে আর কীই বা বলবে। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল

ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।

বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।

প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে

জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সাড়ে চারটায় জামায়াত

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলন

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।

একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ