২৪ ঘণ্টায় দুবার দেখা করলেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু, গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা
Published: 9th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই বার দেখা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সফররত নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা ফিলিস্তিনের গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে অনির্ধারিত আলোচনা হয়। এ সময় দুই নেতা এক ঘণ্টার বেশি সময় কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনইসরায়েলের পক্ষে গাজায় জেতা যে কারণে অসম্ভব১৫ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী যেদিন হোয়াইট হাউসে অনির্ধারিত আলোচনায় বসলেন, সেদিনও গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৯৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে স্থানীয় সময় গত সোমবার হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে অংশ নেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু। গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেছেন ট্রাম্প। এর পর থেকে তৃতীয়বারের মতো ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন নেতানিয়াহু।
গতকালের অনির্ধারিত আলোচনার আগে ট্রাম্প বলেন, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে গাজার বিষয়ে ‘বিশেষভাবে’ কথা বলবেন।
গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে ‘ট্র্যাজেডি’ উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমাদের এটার (গাজা সংকট) সমাধান করতে হবে। গাজা হলো একটি ট্র্যাজেডি। তিনি (নেতানিয়াহু) এটা সমাধান করতে চান এবং আমিও এটার সমাধান করতে আগ্রহী। আমার মনে হয়, অন্য পক্ষও সেটা চায়।’
আরও পড়ুনএকসঙ্গে নৈশভোজ, ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিলেন নেতানিয়াহু০৮ জুলাই ২০২৫ওয়াশিংটন থেকে আল-জাজিরার মাইক হান্না বলেন, ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর সর্বশেষ আলোচনার বিষয়ে ‘খুব কম তথ্য’ জানা গেছে। তাই আসলে কী ঘটছে, সেটা অনুমান করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর আলোচনার আগে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানান। তিনি বলেন, এ সপ্তাহের শেষের দিকে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুনগাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর পুরোনো খেলায় ট্রাম্প–নেতানিয়াহু১৬ ঘণ্টা আগেযদিও এর কিছুক্ষণ পর রিপাবলিকান–নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ অংশে ইসরায়েলি ‘অভিযান শেষ হয়নি’। তবে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচকেরা ‘অবশ্যই কাজ করছেন’।
আরও পড়ুনট্রাম্প–নেতানিয়াহু বৈঠকে কি গাজা যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি হতে পারে০৭ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র প
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।