কুমারখালীর নদীতে ডুবে বাবা-ছেলের মৃত্যু
Published: 22nd, July 2025 GMT
বাড়ির উঠানে কাঠের চৌকি। তার উপরে লাল চাঁদরে ঢাকা ছিল সরকারি চাকরিজীবী জাহিদুল ইসলাম (৪৫) ও তার ছেলে জিহাদের (৯) মরদেহ। সেখানে আহাজারি করছিলেন শোকে মাতম শিলু খাতুন। তাদের ঘিরে ছিলেন উৎসুক জনতা ও স্বজনরা। তারা শিলুকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের জংগলী গ্রামের স্কুলপাড়ায় সরেজমিন গিয়ে এমন হৃদয়বেদারক দৃশ্য চোখে পড়ে। এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে মরা কালিগঙ্গা নদী থেকে জাহিদুল ও জিহাদের মরদেহ উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
জাহিদুল ওই এলাকার রফি মণ্ডলের ছেলে এবং কুষ্টিয়া পল্লী ও দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের কর্মচারী। তার ছেলে জিহাদ জংগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
আরো পড়ুন:
জামালপুরে সেপটিক ট্যাংকে ২ শ্রমিকের মৃত্যু
পছন্দের মাছ-মাংস খাওয়া হলো না তানভীরের
এলাকাবাসী জানান, জাহিদুল সরকারি চাকরির পাশাপাশি চাষাবাদ করেন। আজ দুপুর দেড়টার দিকে ছেলে জিহাদকে নিয়ে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে পাট জাগ দিতে যান তিনি। পাট জাগ দেওয়া শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে ছেলেকে কাঁদে নিয়ে নদীর মাঝ থেকে তীরে ফিরছিলেন তিনি। হঠাৎ জাহিদুল পানিতে ডুবে যান। এসময় তার ছেলে জিহাদও পানিতে ডুবে যায়। বিষয়টি নদীর তীরে থাকা ফয়জুল হক টের পেয়ে স্থানীয়দের জানান।
এলাকাবাসী প্রায় দেড় ঘণ্টা নদীতে খোঁজাখুঁজি করে প্রথমে জিহাদ এবং পরে একই স্থান থেকে তার বাবা জাহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ফয়জুল হক বলেন, “পাট জাগ দেওয়া শেষে জাহিদুল তার ছেলেকে কাঁদে নিয়ে ফিরছিল। প্রথমে বাবা এবং পরে ছেলে পানিতে ডুবে যায়। ডুবতে দেখে দ্রুত স্থানীয়দের খবর দেই।”
মারা যাওয়া জাহিদুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, “দুপুরে বাড়িতে খাবার খাচ্ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত নদীর পাড়ে গিয়ে দেখি শত শত মানুষ। সবাই ভাই জাহিদুল ও তার ছেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। বিকেলে ৪টার দিকে বাপ-বেটার মরদেহ পাওয়া যায়।”
তার ভাষ্য, পাট জাগ দেওয়ার জন্য জাহিদুল ছুটিতে ছিল আজ। বাবা-ছেলে দুইজনেই সাঁতার জানতেন।
কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্দ্র প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, “নদীতে পাট জাগ দিতে গিয়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমরা পৌঁছানোর আগেই গ্রামবাসী তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।”
কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন খাঁন বলেন, “নদীতে ডুবে বাবা ও ছেলের মৃত্যুর খবর প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫