ঝুম বর্ষায় পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মজাই আলাদা। দুই দশক আগেও এখনকার মতো স্মার্টফোন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার দাপট ছিল না। তখন বৃষ্টিভেজা বিকেলগুলো কেটে যেত ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের আড্ডায়, যেখানে ছিল গল্প, হাসি, গান, কবিতা আর একসঙ্গে থাকার নির্ভেজাল আনন্দ।

বর্ষা এলে বারান্দায় বসে টিনের চালের বৃষ্টির শব্দ যেন হৃদয়ে এনে দিত এক অজানা অনুভূতি। জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে রংবেরঙের কাগজের নৌকা বানিয়ে ভাসানো, কখনো কখনো এসবের সঙ্গে যুক্ত হতো লুডু কিংবা দাবা খেলা কিংবা সবাই মিলে বৃষ্টিতে ভেজার উৎসবে মেতে ওঠা—সবই ছিল সেই সময়ের বর্ষাযাপন। বন্ধুরা মিলে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলে স্কুল থেকে ফেরা আর মায়ের বকুনির সেই মুহূর্তগুলো আজকাল শুধুই নস্টালজিক করে তোলে।

চায়ের প্রতি বাঙালির দুর্বলতা তো চিরকালীন। আগে যেমন ছিল, এখনো ঠিক তেমন। তবে বর্ষাকালে এই দুর্বলতা যেন প্রেমে রূপ নেয়। ভেজা বাতাসে ভেসে বেড়ানো আদা কিংবা এলাচি দেওয়া চায়ের সুবাস—এটিই যেন বর্ষার সবচেয়ে প্রিয় অনুভূতিগুলোর একটি।

আর তরুণ-তরুণীদের জন্য বর্ষার এ সময় আবার প্রেমের ঋতুও বটে। বৃষ্টি-বাদলার দিনে একগুচ্ছ কদম হাতে রিকশায় ঘোরাঘুরি আর টংদোকানে চা খাওয়া যেন একটি প্রথাই বলা যায়।

আধুনিক এই যুগে সবকিছুতেই পরিবর্তন এলেও চা-আড্ডার সেই ঐতিহ্য কোনোভাবেই হারিয়ে যাওয়ার নয়। তবে সময় যেহেতু বদলেছে, এখনকার প্রজন্মের তরুণেরা বর্ষার আনন্দ উদ্‌যাপন করে ভিন্নভাবে। অনেকেই এখন বৃষ্টিতে ভেজার চেয়ে বৃষ্টির ভিডিও কিংবা ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেই বৃষ্টিবিলাস করতে ভালোবাসেন। কেউ কেউ আবার ক্যাফে বা রেস্তোরাঁয় গিয়ে ‘রেইন ডেট’ উপভোগ করে। তবু এখনো এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা বর্ষা এলেই ফিরে যান শৈশবের সেই সরল আনন্দে। টিনের চালে বৃষ্টির টাপুরটুপুর শব্দ শুনতে শুনতে ইস্পাহানি মির্জাপুর চায়ের কাপে চুমুক দিতে কিংবা বারান্দায় বসে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে চুপচাপ সময় কাটাতে ভালোবাসেন অনেকেই।

আসলে চায়ের কাপে আড্ডা শুধু গল্প বা সময় কাটানোর মাধ্যম নয়। এটি একধরনের আবেগ, স্বস্তি আর ভালোবাসার জায়গাও বটে। এর সঙ্গে মিশে থাকে সম্পর্কের উষ্ণতা, জীবনের ছোট ছোট সুখের খোঁজ। বর্ষার দিনে এক কাপ চা মানেই আসলে একরাশ প্রশান্তি। আর সঙ্গে যদি থাকে মায়ের হাতে বানানো পেঁয়াজু কিংবা মুড়ি মাখা, তবে তো কথাই নেই।

এক কাপ চা কখনো একাকিত্বে সঙ্গী, কখনো আড্ডায় প্রাণ। তাই যতই বদলাক সময়, বর্ষা মানেই বাঙালির কাছে চায়ের কাপ ঘিরে স্মৃতিমেদুর কিছু মুহূর্ত।

গ্রাম হোক বা শহর—বর্ষার চায়ের আড্ডা সর্বত্রই এক চিরচেনা দৃশ্য। শহরে হয়তো ক্যাফের ঝলমলে পরিবেশে বসে চলতে থাকে গল্প, আর গ্রামে টিনের ছাউনির নিচে টংদোকানে চা খেতে খেতে চলে জম্পেশ আড্ডা। জায়গা বদলায়, সময় বদলায়, কিন্তু ঝড়-বাদলের দিনে চা আর আড্ডা বদলায় না কখনোই।

এগুলোই যেন জীবনের সব ক্লান্তি মুছে নতুন করে বাঁচার স্বাদ দেয়। মনে করিয়ে দেয় সোনালি সেই শৈশবের কথা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

অজিতের পারিশ্রমিক ২৪১ কোটি টাকা!

ভারতের তামিল সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা অজিত কুমার। ভক্তদের কাছে তিনি থালা অজিত নামেই পরিচিত। গত ১০ এপ্রিল মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘গুড ব্যাড আগলি’ সিনেমা। মুক্তির পর বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলেছিল এটি। এরই মাঝে গুঞ্জন উড়ছে, পারিশ্রমিক বাড়াতে যাচ্ছেন অজিত।

পিঙ্কভিলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অজিত কুমারের পরবর্তী সিনেমা ‘একে৬৪’। এখনো সিনেমাটির নাম চূড়ান্ত হয়নি। গুঞ্জন অনুযায়ী, এ সিনেমার জন্য অজিত কুমার তার পারিশ্রমিক ১৫০ কোটি রুপি থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০৭-২৪১ কোটি টাকার বেশি) করতে পারেন। 

আরো পড়ুন:

মুক্তির আগেই কত টাকা আয় করল ‘কানতারা টু’?

আমি খুব কেঁদেছিলাম: মোহিনী

অজিত কুমার মনে করেন—‘সাধারণ গল্পের সিনেমাকেও রাজকীয়ভাবে উপস্থাপন করা উচিত।’ এই কারণে, সিনেমাটির বাজেট সম্ভবত ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি রুপির মধ্যে হতে পারে। তবে অজিতের টিমের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।

‘গুড ব্যাড আগলি’ সিনেমা নির্মাণ করেন পরিচালক আধিক রবিচন্দ্রন। ‘একে৬৪’ সিনেমাও তারই নির্মাণের কথা রয়েছে। রেসিং সিজনের বিরতিতে সিনেমাটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কারণ অজিত কুমার তখন তার সিনেমার দিকেই সম্পূর্ণ মনোযোগ দেবেন। শোনা যাচ্ছে, এই সিনেমা সব ধরণের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হবে, যেখানে ‘গুড ব্যাড আগলি’ কেবল অজিত ভক্তদের কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছিল।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ