ভারতের শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ, বাড়ি-অফিসে তল্লাশি
Published: 24th, July 2025 GMT
ভারতের শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে এবার সক্রিয় আর্থিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক এফআইআর দায়ের হওয়ার পর এবার শুরু হলো ইডির অভিযান। দিল্লি, মুম্বাইসহ দেশের মোট ৩৫টি জায়গায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তল্লাশি। অনিল আম্বানির বড় ভাই শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি।
ইডি সূত্রের খবর, অনিল আম্বানির সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫০টির বেশি সংস্থা ও ২৫ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
অর্থলগ্নি নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) সঙ্গে অনিল আম্বানির বিভিন্ন সংস্থার বিরোধ চলছে। গতকাল বুধবার এসবিআই অনিল আম্বানি ও তাঁর সংস্থাগুলোকে সরাসরি ‘প্রতারক’ বলে অভিহিত করেছিল। এই শিল্পপতির বিরুদ্ধে এসবিআই নিজেরাই সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভেবে রেখেছে। এর মধ্যেই শুরু হলো ইডির তল্লাশি।
এর আগে এসবিআই ২০২০ সালের নভেম্বরেও অনিল আম্বানি ও তাঁর সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্সকে ‘ফ্রড অ্যাকাউন্ট’ ঘোষণা করেছিল। ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগও করেছিল। কিন্তু পরের দিন দিল্লি হাইকোর্ট সেই অভিযোগে স্থগিতাদেশ দেন।
অনিল আম্বানি ও তাঁর সংস্থাগুলো ‘চমৎকারভাবে সাজানো এক সুপরিকল্পিত প্রতারণা চক্র’ অভিহিত করে ইডি সূত্রে বলা হচ্ছে, এই চক্র ব্যাংক, বিভিন্ন লগ্নিকারী সংস্থা ও সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে। ইডির অভিযোগ, বিপুল ঋণ পেতে এসব সংস্থা ব্যাংকের শীর্ষ কর্তাদের ঘুষ দিয়েছিল।
ইডির দাবি, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বেসরকারি ইয়েস ব্যাংক অনিলের সংস্থা ‘রাগা’ গোষ্ঠীর বিভিন্ন কোম্পানিকে তিন হাজার কোটি রুপি ঋণ দিয়েছিল। তার বিনিময়ে ইয়েস ব্যাংকের তৎকালীন কর্তারা নিজেরা ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হয়েছিলেন। ইডির দাবি, ওটা ছিল ‘দেওয়া-নেওয়া চুক্তি’ বা ‘কুইড প্রো কো’।
ইডির তদন্তে জানা গেছে, এমন বহু সংস্থাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যাদের বিষয়ে আদৌ খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। আর্থিক হাল যাচাই করা হয়নি। দুর্বল সংস্থা ঋণ পেয়েছে। একাধিক সংস্থার পরিচালক ও ঠিকানা এক ছিল। ঋণ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নথি যাচাই না করেই। অনেক ক্ষেত্রে নথিই ছিল না। শেল কোম্পানিতে ঋণের টাকা পাঠানো হয়েছে। পুরোনো ঋণ মেটাতে নতুন ঋণ নেওয়া হয়েছে।
ইডিকে তদন্তে সহায়তা করছে ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা ‘সেবি’, ন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি বা ‘এনএফআরএ’ ও ব্যাংক অব বরোদা।
সেবির প্রতিবেদনে রিলায়েন্স হোম ফিন্যান্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়মের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে ওই সংস্থার ঋণ ছিল ৩ হাজার ৭৪২ কোটি রুপি, যা ২০১৮-১৯ সালে বেড়ে হয় ৮ হাজার ৬৭০ কোটি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জেমাইমার কান্নার ম্যাচে টুপটাপ ভাঙল রেকর্ডও
নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার ৩৩৮ রান তাড়া করতে নেমে ভারত জয় তুলে নেয় ৯ বল হাতে রেখে। নারী বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু রেকর্ড হয়েছে এ ম্যাচে। আসুন, দেখে নিই।৩৩৯
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান তাড়ায় ভারতের লক্ষ্য। নারী বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের বিশ্ব রেকর্ড। এবারের নারী বিশ্বকাপের বিশাখাপত্তনমে ভারতের দেওয়া ৩৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই রেকর্ড ভেঙে গতকাল রাতে নতুন রেকর্ড গড়েছে ভারত। মেয়েদের ওয়ানডেতে এর আগে সর্বোচ্চ ২৬৪ রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। তবে মেয়েদের বিশ্বকাপে ভারত এর আগে কখনো ন্যূনতম ২০০ রান তাড়া করে জিততে পারেনি।
১৫নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার টানা ম্যাচ জয়সংখ্যা। গতকাল রাতে হারের আগে সর্বশেষ ২০১৭ নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। নারী বিশ্বকাপে এটা যৌথভাবে টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটিও ছিল অস্ট্রেলিয়ার (১৯৯৩-২০০০)।
৬৭৯ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট রান। নারী বিশ্বকাপে দুই দলের ইনিংস মিলিয়ে এটাই সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ। ২০১৭ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচে উঠেছিল ৬৭৮ রান।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে ভারত১১ ঘণ্টা আগে৩ছেলে ও মেয়েদের ওয়ানডে মিলিয়ে নকআউট ম্যাচে ৩০০–এর বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের নজির। আগের দুবার এই নজির গড়েছে ভারতের ছেলেদের ক্রিকেট দল। ১৯৯৮ সালে ইনডিপেনডেন্স কাপের তৃতীয় ফাইনালে পাকিস্তানের ৩১৪ রান তাড়া করে জিতেছিল ভারত। ২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ৩২৫ রান তাড়া করে জেতে ভারত।
১২৭*নারী ওয়ানডেতে রান তাড়ায় ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, যেটা গতকাল রাতে খেলেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। গত মাসে দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেন স্মৃতি মান্ধানা।
৭৭ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করতে অস্ট্রেলিয়ার ফোবে লিচফিল্ডের খেলা বলসংখ্যা। মেয়েদের ওয়ানডেতে নকআউট ম্যাচে এটা দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন হারমানপ্রীত কৌর। ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ন্যাট শিভার-ব্রান্টও ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন।
০২০২৫ সালে মেয়েদের এই বিশ্বকাপ ফাইনালই প্রথম ফাইনাল যেখানে অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডের মধ্যে কাউকে দেখা যাবে না। আগের সব কটি বিশ্বকাপের ফাইনালেই এই দুই দলের মধ্যে কেউ না কেউ ছিল।
আরও পড়ুনবোলাররা ভাসান, ব্যাটসম্যানেরা ডোবান—আজ কী করবে বাংলাদেশ৩ ঘণ্টা আগে