ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যেই ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় শুরু করলেন ইংল্যান্ডের তারকা স্ট্রাইকার মার্কাস রাশফোর্ড। কাতালোনিয়ার বিখ্যাত ক্লাব বার্সেলোনায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন তিনি। নতুন ক্লাবে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরির প্রিয় ১৪ নম্বর জার্সি। তবে অতীতে এই নম্বর জার্সিতে যেমন সাফল্য এসেছে, তেমনই এসেছে কিছুটা হতাশাও। স্মরণ করা যায় ম্যালকম, ফেলিক্স বা কুতিনহোর নাম।

ম্যানইউয়ে কোচ এরিক টেন হাগের বিদায়ের পরই দলে রাশফোর্ডের ভূমিকা কমতে শুরু করে। মৌসুমের মাঝপথে অ্যাস্টন ভিলায় লোনে পাঠানো হয় তাকে। এরপরও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায়, এবার বার্সেলোনার হয়ে নতুন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন এই ২৭ বছর বয়সী তারকা।

বার্সা আপাতত ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য রাশফোর্ডকে লোনে নিয়েছে। তবে পারফরম্যান্স সন্তোষজনক হলে তাকে স্থায়ীভাবে দলে নেওয়ার রাস্তা খোলা রেখেছে ক্লাবটি। এক সময় ম্যানইউয়ের যুব দল থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার সিনিয়র দলে ৪২৬ ম্যাচে ১৩৮ গোল করছেন। যা তার প্রতিভার সাক্ষ্য বহন করে।

আরো পড়ুন:

অল-স্টার ম্যাচে না খেলে বিতর্কে মেসি, এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি

রিয়াল মাদ্রিদে ‘নতুন ১০’: এমবাপ্পের কাঁধে কিংবদন্তির জার্সির ভার

গ্যারি লিনেকারের পর রাশফোর্ডই হচ্ছেন দ্বিতীয় ইংলিশ খেলোয়াড়, যিনি স্পেনের বার্সেলোনায় খেলতে যাচ্ছেন। এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপে রাশফোর্ড জানাচ্ছেন, বার্সেলোনায় যোগ দিয়ে তিনি রোমাঞ্চিত, বিশেষত এমন একটি দলে যোগ দিতে পেরে, যেখানে ইয়ামালের মতো দুর্দান্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছেন।

বার্সায় পা রাখতেই তরুণ সেনসেশন লামিনে ইয়ামালের প্রশংসা করলেন রাশফোর্ড। তার ভাষায়, “ও খুবই বিশেষ প্রতিভার অধিকারী। হয়তো সেরা নয়, তবে বিশ্বের সেরাদের একজন।” তিনি আরও যোগ করেন, “সেরাদের সঙ্গে খেলাটা সবসময়ই স্বপ্নের মতো। আমি আশাবাদী, তাদের সাহায্যে আমিও নিজের সেরাটা দিতে পারব।”

বার্সেলোনার জাপান সফরে অংশ নিতে খুব শীঘ্রই রওনা হবেন রাশফোর্ড। আগামী রোববার ভিসেল কোবের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তাকে মাঠে দেখা যেতে পারে। এরপর দলটি দক্ষিণ কোরিয়ায় আরও প্রস্তুতির জন্য যাত্রা করবে তারা।

রাশফোর্ডের এই দলবদল শুধুই নতুন এক ঠিকানায় যাত্রা নয়, বরং নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার এক বিরল সুযোগ। কাতালোনিয়ার আকাশে ইংলিশ তারকার এই আলো কতটা দীপ্তি ছড়াতে পারে, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা। 

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প কেন ভারতের ওপর এমন চাপ দিচ্ছেন, কী বলছেন রাজনৈতিক নেতারা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপি সরকারকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেছে। কংগ্রেস পার্টির এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, এখন দেশকে মোদির ‘বন্ধুত্বের মূল্য’ দিতে হচ্ছে।

কংগ্রেস ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে টেক্সাসে অনুষ্ঠিত ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের পক্ষে মোদির প্রচার চালানোকে আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে।

কংগ্রেস বলেছে, ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন। এর সঙ্গে দণ্ড জরিমানাও দিয়েছেন। এখন দেশ মোদির বন্ধুত্বের খেসারত দিচ্ছে। মোদি ট্রাম্পের প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প ভারতকে শাস্তি দিলেন। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের পাশাপাশি ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতকে অতিরিক্ত জরিমানাও দিতে হবে।

ট্রাম্প আরও বলেন, ভারত ও চীন রাশিয়ার যুদ্ধ খরচ বহন করছে। সেই যুদ্ধ এরই মধ্যে তিন বছর ধরে চলছে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, আবার প্রেসিডেন্ট হলে শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি যুদ্ধ শেষ করে দেবেন।

ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ভারত সব সময় রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র কিনেছে এবং রাশিয়ার জ্বালানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা। এমন এক সময়ে তারা এই কাজ করেছে, যখন সবাই চাইছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক। তাই আগামী ১ আগস্ট থেকে ভারতকে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ও অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে।

কংগ্রেস–দলীয় সংসদ সদস্য মাল্লু রবি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকিতে আমরা উদ্বিগ্ন। শুনে মনে হচ্ছে, তিনি যেন ভারতকে হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের উচিত উপযুক্ত জবাব দেওয়া।’

কংগ্রেসের আরেক নেতা রাজীব শুক্লা এই পদক্ষেপকে ‘একেবারে ভুল’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সরকার যাঁকে বন্ধু মনে করত, সেই ট্রাম্প এখন আমাদের আঘাত করেছেন। এর ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা সংসদে এ বিষয়ে কথা বলব। এত বন্ধুত্বের পরও ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে এমন করলেন কেন?’

আম আদমি পার্টির (এএপি) সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিদিন ভারতের অপমান করছেন। ট্রাম্প তো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে পর্যন্ত ভারত থেকে আইফোন তৈরি না করতে হুমকি দিয়েছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, তিনি পাকিস্তানকে ভালোবাসেন। এটি নিয়ে ভারতের ভাবা উচিত। মোদির উচিত, এ বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো এবং তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করা।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ‘দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, ট্রাম্প প্রায়ই তাঁর বক্তব্য থেকে পেছনে সরে আসেন। তাই ভারতের সরকার কী বলে, তা না জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজেপি–দলীয় আরেক সংসদ সদস্য প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘এটি দুঃখজনক। আমি নিশ্চিত, ভারত সরকার এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। ব্যবসা ও শিল্প খাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।’

বিজেপির হেমাং যোশি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট একতরফা বিবৃতি দিতে থাকেন। ভারতের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কিছু না বলা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করা উচিত। আগেও তিনি এক কথা বলেছিলেন, পরে আবার নিজেই তা বদলে ফেলেছিলেন।’

বিজেপির আরেক সংসদ সদস্য প্রতাপ সারাঙ্গি বলেন, ‘ভারত শক্তিশালী পাল্টা কৌশল তৈরি করবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী, মোদির নেতৃত্বে আমেরিকার এই পদক্ষেপ সফল হতে দেওয়া হবে না। আমরা উপযুক্ত জবাব দেব।’

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের ওপরই পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন। তাঁর দাবি, এসব দেশ আগে থেকেই মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়ে আসছিল।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’১৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনজাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেবে নয়াদিল্লি১৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ