দুই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ
Published: 26th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া সব সামরিক-বেসামরিক চুক্তি উন্মুক্ত করা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসানের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে’ করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ)।
আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে মিছিলটি বের হয়ে হলপাড়া ঘুরে মধুর ক্যানটিন হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার।
সমাবেশে তামজিদ হায়দার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের জনগণের মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এ অঞ্চলের জনগণের সংগ্রামের কাছে বারবার সব সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ পরাস্ত হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি বলেন, অবিলম্বে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে মুকিতুল হাসানের মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে স্বপদে বহাল করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্র নাথ বাপ্পি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতজানু সম্পর্ক দেখলে মনে হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শরীর বাংলাদেশে থাকলেও, মন পড়ে আছে ওয়াশিংটনে।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ঔপনিবেশিক স্টেট সিক্রেটস অ্যাক্টের (রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন) মাধ্যমে এনবিআর কর্মকর্তা মুকিতুল হাসানকে বরখাস্ত করা পুরোপুরি অবৈধ। মুকিতুল হাসান কোনো অপরাধ করেননি, বরং দেশপ্রেমের প্রমাণ দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ বিক্রির চুক্তি বাতিল না করলে পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতাকে সংগঠিত করে হরতাল-অবরোধসহ বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”
দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”
রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।
ঢাকা/কেয়া/রফিক