নিউ ইয়র্কে হামলাকারী তার রোগের জন্য জাতীয় ফুটবল লীগকে দায়ী করেছে
Published: 29th, July 2025 GMT
নিউ ইয়র্কের মিডটাউন ম্যানহাটনের একটি অফিস ভবনে রাইফেল দিয়ে চারজনকে হত্যাকারী ব্যক্তি একটি চিরকুট বহন করছিলেন। ওই চিরকুটে তার মস্তিষ্কের অবক্ষয়জনিত রোগের জন্য জাতীয় ফুটবল লীগকে দায়ী করা হয়েছে। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ তথ্য জানিয়েছেন।
শেন তামুরা নামের ২৭ বছর বয়সী ওই হামলকারী লাস ভেগাসের বাসিন্দা। তার মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার শেন তামুরার বন্দুকধারীর গুলিতে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের একজন কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ৬৩৪ ফুট উঁচু একটি আকাশচুম্বী ভবনে জাতীয় ফুটবল লীগ এবং বিনিয়োগ সংস্থা ব্ল্যাকস্টোনের কর্পোরেট অফিস রয়েছে। পরে ওই ভবনের ৩৩তম তলায় নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন শেন।
মেয়র জানান, তামুরা স্পষ্টতই ভুল লিফটে প্রবেশ করে এবং একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি রুডিন ম্যানেজমেন্টের অফিসে গিয়ে কর্মচারীদের গুলি করে।
অ্যাডামস সিবিএস নিউজকে বলেন, “নোটটিতে ইঙ্গিত করা হয়েছিল, তামুরা অনুভব করেছিলেন যে তার সিটিই (ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথি) আছে, যা কন্টাক্ট স্পোর্টসে অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি পরিচিত মস্তিষ্কের আঘাত। তিনি তার আঘাতের জন্য এনএফএলকে দায়ী করেছেন বলে মনে হচ্ছে।”
দীর্ঘস্থায়ী আঘাতমূলক এনসেফালোপ্যাথি একটি গুরুতর মস্তিষ্কের রোগ যার কোনও চিকিৎসা নেই। খেলাধুলার সময় মাথায় বারবার আঘাতের কারণে এটি হতে পারে। এটি আগ্রাসন এবং ডিমেনশিয়ার সাথে যুক্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, তামুরা কখনো এনএফএলের খেলোয়াড় ছিলেন না। তবে অনলাইন রেকর্ড দেখা গেছে, তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ে খেলেছিলেন। তার মানিব্যাগে পাওয়া নোটে বলা হয়েছে যে তার মস্তিষ্কের আঘাতের কারণে তার ফুটবল ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।