পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এসআইদের প্রতি ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান
Published: 29th, July 2025 GMT
ঢাকায় কর্মরত উপপরিদর্শকদের (এসআই) প্রতি পেশাদারি ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
আজ মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত এসআই এবং প্রবেশনার এসআইদের ব্রিফিং সেশনে ডিএমপি কমিশনার এ আহ্বান জানান। ডিএমপি কমিশনার এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
পরে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরবাসীর প্রতি পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বশীলতা, পেশাদারি এবং সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্রিফিং সেশন করা হয়। ডিএমপিতে কর্মরত ২ হাজার ৩৪৪ জন এসআইয়ের মধ্যে প্রথম ধাপে ৪৫০ জন এই ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
ব্রিফিং অনুষ্ঠানে এসআইদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আপনারা পুলিশ বাহিনীর মেরুদণ্ড। বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম-দুর্নাম আপনাদের কাজের ওপর নির্ভর করে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং তাদের সেবা প্রদানে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এ সময় তদন্তপ্রক্রিয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘তদন্ত একটি জটিল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আপনারা যেন তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগতভাবে সম্পন্ন করেন, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বর্তমানে আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রের তুলনায় সাজার হার কম। এই হার বাড়াতে তদন্তের মান উন্নত করতে হবে। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ এসআইদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। তাই আপনাদেরও দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও সততা বজায় রাখতে হবে। নিজের আয়ের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সংসার পরিচালনা করুন এবং পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন।’
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা চাকরিতে এসেছি জীবিকার জন্য, পরিবার ও সমাজের জন্য এবং সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার জন্য। অন্যরা কী করছে তা না দেখে নিজেদের দায়িত্ব মনোযোগ দিয়ে পালন করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসআইদ র আপন দ র তদন ত ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়।
নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল