শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করতে নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মোডে একাধিক নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল। সুবিধাগুলো চালুর পর এক ঘোষণায় গুগল জানিয়েছে, এখন থেকে কম্পিউটারে এআই মোড ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা ছবি আপলোড করে সেই ছবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে পারবেন। ফলে গণিতের জটিল সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি কোনো উদ্ভিদের ছবি বা বস্তুর নির্দিষ্ট অংশ এআইয়ের সাহায্যে সহজেই বিশ্লেষণ করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। সুবিধাটি গত এপ্রিলে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হলেও এবার তা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে।

গুগলের তথ্যমতে, নতুন সুবিধাগুলোর পাশাপাশি এআই মোডে শিগগিরই রিয়েল টাইম ক্যামেরা শেয়ারিং করা হবে। এ সুবিধা চালু হলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যেকোনো ব্যক্তি স্মার্টফোনের ক্যামেরা চালু করে যেকোনো দৃশ্যের বিষয়ে মৌখিকভাবে প্রশ্ন করতে পারবেন। গুগলের বিদ্যমান ‘সার্চ লাইভ’ প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই সুবিধা পরীক্ষামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এআই মোড ল্যাবসে নিবন্ধন করা ব্যক্তিরা ব্যবহার করতে পারবেন।

গুগল জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এআই মোডে পিডিএফ ফাইল আপলোড এবং গুগল ড্রাইভ থেকে প্রয়োজনীয় নথি ড্রাগ করার সুবিধাও যুক্ত হবে। এতে শিক্ষার্থীরা তাঁদের নিজের সংরক্ষিত পাঠ্যসামগ্রী নিয়েও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে পারবেন।

গুগল তাদের ক্রোম ব্রাউজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সারাংশ দেখার নতুন সুবিধাও চালু করতে যাচ্ছে। সুবিধাটি চালু হলে ব্রাউজারের ওয়েব ঠিকানা বারে ক্লিক করলে ‘আসক গুগল অ্যাবাউট দিস পেজ’ এমন একটি অপশন দেখা যাবে। ব্যবহারকারী সেটি নির্বাচন করলেই সংশ্লিষ্ট ওয়েবপেজের সারসংক্ষেপ ব্রাউজারের সাইডবারে দেখতে পারবেন।
সূত্র: দ্য ভার্জ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত নত ন স ব ধ এআই ম ড প রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ