সৌদির সঙ্গে চুক্তি হবে, যা ভারত-পাকিস্তানেরও নেই
Published: 2nd, August 2025 GMT
প্রবাসী কর্মী ও কর্মসংস্থান নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এটা জানতে পারবেন। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের সঙ্গে প্রবাসী কর্মীদের নিয়ে একটি চুক্তি হচ্ছে। এতে দেশটিতে থাকা কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বাড়বে। গত সরকার অনেকবার চেষ্টা করেও এ চুক্তি করতে পারেনি। ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গেও সৌদির এ চুক্তি নেই।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান স্মরণে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা। গতকাল শনিবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এটির আয়োজন করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কারামুক্ত হয়ে ফিরে আসা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের কঠোর আইনের মধ্যে নিজের জীবন–জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানানো বিরাট আত্মত্যাগ। তাই এ সম্মাননা জানানো পবিত্র দায়িত্ব। প্রবাসীদের জন্য সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা প্রবাসী হাসপাতাল করার অনেক ইচ্ছে আছে।
প্রবাসীদের দাবি পূরণ করতে গিয়েও তাঁকে কথা শুনতে হয়েছে বলে জানান আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের দেশটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করায় অনেকে গালাগালি করেছেন। মালয়েশিয়া থেকেও প্রবাসীদের কেউ কেউ মেসেজ পাঠিয়ে বলেছেন, এখানে যাঁরা অবৈধ হয়ে আছেন, তাঁরা বৈধ হতে পারছেন না। আর নতুন করে দেশ থেকে আরও লোক আনা হচ্ছে।
তবে বিদেশে যাওয়ার আগে জেনে-বুঝে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করে চলে যান। গিয়ে অনেকে কাজ পান না। সৌদি আরবে একটি জায়গায় প্রবাসী কর্মীদের এমন খারাপ অবস্থা দেখেছেন, দেশের সবচেয়ে খারাপ বস্তিতেও কেউ এতটা খারাপ থাকে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার এক ফোনে আমিরাতের সাধারণ ক্ষমা বিষয়টি একটি বিরল ঘটনা। শুধু রাস্তার যুদ্ধ নয়, অর্থনৈতিক যুদ্ধও ছিল; রেমিট্যান্স বন্ধ করে যেটা করেছেন প্রবাসীরা। এতে কোনো দেশের আইন ভঙ্গ হয়নি। বিপ্লবের পর নানা অপপ্রচারের বিরুদ্ধেও ভূমিকা রেখেছেন প্রবাসীরা। বাড়তি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সরকারের প্রতি টানা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন প্রবাসীরা।
কারামুক্ত হয়ে বিদেশ থেকে ফিরে আসা কর্মীদের নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্ল্যা ভূঁইয়া। তিনি বলেন, প্রবাসীদের আর্থিক ও সামাজিক পুনর্বাসনে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আরব আমিরাত থেকে ফেরা ১৮৮ জনের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৯৪ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত এক বছরে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো.
শুরুতেই দোয়া করা হয়। এরপর রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আন্দোলনের ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
কারামুক্ত প্রবাসীদের দাবিবিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠানে আরব আমিরাত থেকে ফিরে আসা তিনজন প্রবাসী কথা বলেন। তাঁদের দাবি মোটামুটি একই। তাঁরা আবার কাজে ফিরতে চান, আরব আমিরাতের কারাগারে এখনো বন্দী থাকা ২৬ জনকে মুক্ত করতে সরকারকে অনুরোধ করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ন প রব স প রব স দ র ন উপদ ষ ট কর ম দ র অন ষ ঠ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫