ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক ও  রেলপথ অবরোধ বিকেলের মধ্যে তুলে না নিলে আইন প্রয়োগ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

দু‌টি ইউনিয়‌নের সমস‌্যার ‌জন‌্য লাখ লাখ মানুষ‌কে জি‌ম্মি ক‌রা বরদাশত করা হ‌বে না, বরং আজ বিকা‌লের ম‌ধ্যে সমাধান না হ‌লে আইন প্রয়োগ ক‌রে রাস্তা ক্লিয়ার করা হ‌বে বলে জানান তিনি। 

আরো পড়ুন:

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার গাড়িতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, ধরলেন উপদেষ্টা

লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজের ওপর হামলা চেষ্টার নিন্দা অন্তর্বর্তী সরকারের

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপু‌রে স‌চিবাল‌য়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ের সভাক‌ক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর ক‌মি‌টির সভা শে‌ষে সাংবাদিক‌দের তি‌নি একথা ব‌লেন।

অব‌রোধকারী‌দের হুঁশিয়ারি দি‌য়ে উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, “ফ‌রিদপুরে  দু‌টিকে আগের সংসদীয় আসন থে‌কে অন‌্য সংসদীয় আস‌নে ম‌নে হয় দি‌য়ে দি‌ছে। এটার স‌ঙ্গে আমা‌দের কো‌নো সম্পর্ক নাই। এটা সম্পূর্ণ ইলেকশন ক‌মিশ‌নের। এটা ইসি কর‌ছে, তারা যু‌ক্তি তর্ক শু‌নেছে, তারাই ব‌সে এটা নির্ধারণ কর‌ছে। এখন এই নির্ধারণটা নি‌য়ে এলাকার লোকজ‌নের ম‌ধ্যে ক্ষোভ আছে। তা‌দের ‌ক্ষোভ থাক‌লে তারা প্রপার চ‌্যা‌নে‌লে জানা‌বে, কিন্তু এটা রাস্তায় নি‌য়ে আসা কো‌নোভা‌বেই যু‌ক্তিযুক্ত হ‌বে না।”

এটার জন‌্য জনগ‌ণের ভোগা‌ন্তি হ‌চ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দুই ইউনিয়‌নে কত মানুষ, কত ‌ভোটার অথচ দু‌টি ইউনিয়‌নে সমস‌্যার জন‌্য লাখ লাখ মানুষ‌কে জিম্মি ক‌রে রে‌খে‌ছেন। এটা কো‌নোভা‌বে বরদাশত করা হ‌বে না। আজ‌কে বিকেলের ম‌ধ্যে তারা য‌দি সমাধান না ক‌রে তাহ‌লে আমরা আইন প্রয়োগ করার মাধ‌্যা‌মে রাস্তা ক্লিয়ার কর‌বো। রাস্তা ব্লক করার অধিকার কারও নাই। দা‌বি দাওয়া থাক‌লে প্রপার চ‌্যা‌নে‌লে জানা‌নো যা‌বে, এজন‌্য রাস্তা ব্লক ক‌রে মানুষ‌কে ভোগা‌ন্তি দি‌য়ে, এটা কখনও গ্রহণ‌যোগ‌্য নয়।”

বৈঠ‌কের আলোচ্য বিষয় তু‌লে ধ‌রে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ব‌লেন, “আজ‌কে কোর ক‌মি‌টির মি‌টিং হ‌য়ে‌ছে। এতে দে‌শের সা‌র্বিক আইন শৃঙ্খলা প‌রি‌স্থি‌তি নি‌য়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে। দুএক‌টি নির্বাচন হ‌য়ে‌ছে এসব নি‌য়ে অল্প আলোচনা হ‌য়ে‌ছে। পু‌লি‌শের ট্রেনিং, আসন্ন সংসদ নির্বাচ‌নের প্রস্তুতি, ছিনতাই, চু‌রি, ডাকা‌তি নি‌য়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে।”

তিনি আরো জানান, সভায় মাদক নিয়ন্ত্রণ নি‌য়ে বি‌শেষ ক‌রে মিয়ানমার সীমা‌ন্তে মাদক ও জে‌লে‌দে‌র মাছ ধরার সমস‌্যা নি‌য়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে। লুট হওয়া অস্ত্র কীভা‌বে আনা যায় এটা নি‌য়ে আলোচনা হয়েছে। মেইন‌লি আলোচনা হ‌য়ে‌ছে পূজার আইনশৃঙ্খলা ও সা‌র্বিক নিরাপত্তা নি‌য়ে। কারা সংস্কার ও ফ‌রিদপু‌রে দু‌টি ইউনিয়নের সমস‌্যা নি‌য়ে বে‌শি আলোচনা হ‌য়ে‌ছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট অবর ধ ইউন য়

এছাড়াও পড়ুন:

অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ

চলতি অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে। এ তথ্য তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এমএসএফ বলেছে, এসব ঘটনায় জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ দুই ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে।

এমএসএফ প্রতি মাসে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে। আজ শুক্রবার অক্টোবর মাসের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এমএসএফ মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করে।

বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশ

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে মোট ৬৬টি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়; বরং নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) এর সংখ্যা ছিল ৫২। এসব অজ্ঞাতনামা লাশের বেশির ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, মহাসড়ক বা সড়কের পাশে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমিতে ও পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া যায়। অল্পসংখ্যক মৃতদেহ গলাকাটা, বস্তাবন্দী ও রক্তাক্ত বা শরীরে আঘাতের চিহ্নসংবলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এমএসএফ বলেছে, অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা বেড়েই চলেছে এবং তা জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় উদ্ধারে অপারগতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১টি শিশু, ১ কিশোর, ১১ জন নারী ও ৫৩ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ বছর বয়সী শিশু; ১৫ বছর বয়সী কিশোর; ২০ থেকে ৩০ বয়সী ১৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী; ৩১ থেকে ৪০ বয়সী ১৯ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী; ৪১ থেকে ৫০ বয়সী ১ নারী ও ৫ জন পুরুষ এবং ৫০ বছর বয়সের বেশি ১১ জন পুরুষ ও ১ নারী রয়েছেন। এর মধ্যে অজ্ঞাতনামা তিনজনের বয়স শনাক্ত করা যায়নি।

এমএসএফ বলেছে, শুধু অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না; বরং পরিচয় জানার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। পরিচয় উদ্ধার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।

কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছেই

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে কারা হেফাজতে মোট ১৩ জন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল মোট ৮। এ মাসে ছয়জন কয়েদি ও সাতজন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।

কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চারজন কয়েদি ও দুজন হাজতি, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন কয়েদি ও শেরপুর জেলা কারাগারে একজন কয়েদি মারা যান। এ ছাড়া খুলনা জেলা কারাগারে, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে, চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে, সিরাজগঞ্জ কারাগারে ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে একজন করে হাজতি বন্দী মারা যান। সব বন্দীর মৃত্যু হয় কারাগারের বাইরে হাসপাতালে।

এমএসএফের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যু এবং অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বৃদ্ধি মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতির চিত্র তুলে ধরে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই লাশ উদ্ধার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব লাশ উদ্ধার করে তার পরিচয় শনাক্ত করা এবং সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটন করাই শুধু নয়, এসব লাশ আত্মীয়-পরিজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া এসব বাহিনীর কাজ। কিন্তু একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আর কোনো কাজ নেই।

সাইদুর রহমান বলেন, অজ্ঞাতনামা লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হেফাজতে মৃত্যু বৃদ্ধি জনমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে।

গণপিটুনিতে হত্যা চলছেই, বেড়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা

অক্টোবর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার শিকার হয়েছেন ৫৪৯ জন। এর মধ্যে ২ জন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ এবং নিহত ব্যক্তিরা বিএনপির কর্মী–সমর্থক। সেপ্টেম্বর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮টি ঘটনা ঘটেছিল।

সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার মধ্যে ১১টি ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিকাণ্ড এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

অক্টোবর মাসে মোট গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি। আগের মাসে এ ঘটনা ঘটেছিল ৪৩টি। এ মাসে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১২। আগের মাসে নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ভিন্ন
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল
  • ঢাকাসহ সারা দেশে এক সপ্তাহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ১৪৯