পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পরীক্ষামূলক জন্মনিয়ন্ত্রক ‘ইমপ্লান্ট (সিঙ্গেল রড)’ নামের নতুন পণ্য সফলভাবে উৎপাদন করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়

শেয়ার বিক্রয় করবেন সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক 

তথ্য মতে, কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে জন্মনিয়ন্ত্রক ‘ইমপ্লান্ট (টু রড)’ উৎপাদন এবং পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বিক্রি করে আসছে। নতুন পণ্য ‘ইমপ্লান্ট (সিঙ্গেল রড)’ও সরকারের ওই মন্ত্রণালয়ের কাছে বিক্রি করবে টেকনো ড্রাগস।

টেকনো ড্রাগস জানায়, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) একক রডের ইমপ্লান্ট উৎপাদনের ট্রায়াল রান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ হলো।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এই সাফল্য দেশের স্বাস্থ্য খাত ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমকে আরো এগিয়ে নেবে। এতে টেকনো ড্রাগসের আয় ও মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এর মাধ্যমে দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করল টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। কোম্পানি জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জন্য দুই রডবিশিষ্ট কনট্রাসেপটিভ ইমপ্লান্ট উৎপাদন করে আসছে। এবার সেই ধারাবাহিকতায় সিঙ্গেল রড বিশিষ্ট কনট্রাসেপটিভ ইমপ্লান্ট তৈরির ট্রায়াল রান সফলভাবে সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৯ সাল থেকে টেকনো ড্রাগস নিয়মিতভাবে টু রডের ইমপ্লান্ট উৎপাদন করছে, যা শুধু সরকারি চাহিদা মেটাতেই ব্যবহার করা হয়। পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের টেন্ডারের মাধ্যমে এসব ইমপ্লান্ট সরকারের কাছে সরবরাহ করা হয়। এ ধরনের ইমপ্লান্ট নারীদের দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ঢাকা/এনটি/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমপ ল ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

সফলভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুধু দায়িত্ব নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচনের ফলাফল ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে আগামী দিনে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে—গণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ নাকি অতীতের পুনরাবৃত্তি। দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ইসির সংলাপে এই বাস্তবতা উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, জনগণের আস্থা ফেরাতে হলে ইসিকে শক্তিশালী, স্বাধীন ও সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সংলাপে অংশ নেওয়া নাগরিকেরা ইসিকে প্রথমেই সতর্ক করেছেন জনগণের আস্থার সংকটের বিষয়ে। কারণ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা জনগণের আস্থার ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। অতীতে ভোট নিয়ে অভিযোগ ও অনিয়ম সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ইসির প্রতি সেই আস্থা ক্ষয়ে গেছে। এবার যদি ইসি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তবে ইতিহাসে তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ফলাফল সবাই জানে—গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে।

আধুনিক নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশাল ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এবারের নির্বাচনী প্রচারের ৮০ শতাংশই হবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। সেখানে মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচার ও এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসৃষ্ট বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এসব মোকাবিলায় ইসিকে এখনই কার্যকর কৌশল নিতে হবে। তা না হলে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হবে, ভোটাররা বিভ্রান্ত হবেন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিপন্ন হবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরীর বক্তব্যে উঠে এসেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের অপরিহার্যতা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ৫ থেকে ৭ শতাংশ নারী প্রার্থিতা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? দীর্ঘ সংগ্রামের পরও যদি নারীরা সংসদে ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব না পান, তবে সেটি কেবল প্রতীকী অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধ থাকবে। তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি প্রবীণ, দরিদ্র, নারী ও সংখ্যালঘুদের যেন পিছিয়ে না দেওয়া হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশের নির্বাচনে সহিংসতা প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর যথার্থই বলেছেন, দেড় দশক ধরে সহিংসতা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এই প্রবণতা রোধ করা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। শুধু তা-ই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজে লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন সংলাপে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে, মৃত ভোটার বাদ দেওয়া হয়েছে, আইন সংস্কার করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তবে জনগণের দৃষ্টিতে এসবের চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ইসি কি রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে নিজস্ব স্বাধীনতায় কাজ করতে পারবে? নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন, নিরপেক্ষ রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ, ভোটকেন্দ্রে সঠিক সময়ে ব্যালট পাঠানো—এসব বাস্তবায়নেই প্রমাণ মিলবে ইসির নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার।

আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য একটি মাইলফলক। সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল বাংলাদেশ তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবে। সঠিক পথে হাঁটতে পারলে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসে উজ্জ্বল স্থান পাবে; ব্যর্থ হলে আরও গভীর সংকটে পড়বে রাষ্ট্র ও সমাজ। নির্বাচন কমিশনের সামনে এখন একটাই পথ—নিরপেক্ষ, সাহসী ও স্বাধীন ভূমিকা পালন করে সফলভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ
  • সফলভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে