গাজায় গণহত্যা বন্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নীরবতা ভাঙতে হবে
Published: 3rd, October 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদলেহনকারী হিসেবে কাজ করছে। তারা জায়নবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করছে না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ইসরায়েলের জায়নবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্রতিবাদ চলবে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নীরবতা ভাঙতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে।
ইসরায়েল গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটক করার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেছেন বক্তারা। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি।
সমাবেশে লেখক কল্লোল মোস্তফা বলেন, গ্লোবাল ফ্লোটিলা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। এ জাহাজের বহর বাড়তেই থাকবে, যত দিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হবে। মুসলিম দেশগুলো এখনো কার্যত নিশ্চুপ। তাদের এ নীরবতা ভাঙতে হবে।
গাজায় গণহত্যা ও অবরোধের চিত্র তুলে ধরে গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, ‘বিশ্বের দেশে দেশে মানুষ গাজার গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা সে প্রতিবাদে শামিল হতে এখানে একত্র হয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে এ প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এটি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই।’
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদলেহনকারী হিসেবে কাজ করছে মন্তব্য করে মোশরেফা মিশু বলেন, ‘তারা জায়নবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করছে না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ইসরায়েলের জায়নবাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে। আমি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে আহ্বান করব, এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি, আপনারা প্রতিবাদ করুন।’
সভায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন বলেন, আজকে সারা বিশ্বে ইহুদিরা রাস্তায় নেমে এসেছে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে। তার মানে এটা কোনোভাবেই মুসলমান আর ইহুদিদের যুদ্ধ নয়। ইহুদিদের ভেতরে মানবতা আছে এবং তারাও গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
লেখক ও গবেষক চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, মানবতার সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। ধর্ম, বর্ণ, জাতিনির্বিশেষে মানুষ মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। পুঁজিবাদীরা অনেক কোণঠাসা অবস্থায় আছে এবং ইসরায়েল আজকে বন্ধুহীন। আজকে যুক্তরাষ্ট্র ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর মুখোশ খুলে গেছে এবং এটা খুলে দিয়েছেন তাদের দেশের বিপ্লবী জনগণ।
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও তীব্রতর করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার। পাশাপাশি বাংলাদেশকে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির যে ষড়যন্ত্র, তা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফি রতন বলেন, গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে; কিন্তু যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট) নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার জন্য তা হয়, তাহলে তা ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে সংহতি সব সময়ই থাকবে।
ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের সদস্যসচিব হারুনুর রশিদ ও কমিটির সদস্য জয়দীপ ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য বেলাল চৌধুরী, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী, গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি নাসির উদ্দিন। সমাবেশের শুরুতে ও শেষ দিকে সংগীত পরিবেশন করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সদস্য সুস্মিতা রায়, বিবর্তন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ জ য় গণহত য ইসর য় ল র জ য়নব দ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকরের দাবি শহীদ রাকিবুলের মা-বাবার
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ঝিনাইদহের রাকিবুল হোসেনের মা ও বাবা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ ও জুলুমের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়: খেলাফত মজলিস
রায়ে খুশি শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের পর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শহীদ রাকিবুল হোসেনের বাবা আবুবকর সিদ্দিক ও মা হাফিজা খাতুন সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে উল্লিখিত দাবি জানান।
হাফিজা খাতুন বলেছেন, শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল। আদালতে আজ সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। শহীদের মা হিসেবে আমি আজ আংশিক সন্তুষ্ট। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ, আল্লাহ যেন আমাকে হায়াত দেন। আমি যেন শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখে যেতে পারি।
আবুবকর সিদ্দিক বলেন, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামালসহ জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সকলের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। যারা গণহত্যা চালিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে। আজ আমরা খুশি। শেখ হাসিনা বহু মায়ের বুক খালি করেছে। একজন নারী হয়েও সে কীভাবে এত মায়ের সন্তানকে হত্যার আদেশ দিয়েছে, তা আমরা ভেবে পাই না।
ঢাকা/সোহাগ/রফিক