গ্রিসের গুহায় বিশ্বের বৃহত্তম মাকড়সার জাল আবিষ্কার
Published: 18th, November 2025 GMT
আলবেনিয়া-গ্রিস সীমান্তের একটি গুহায় সম্ভবত বিশ্বের বৃহত্তম মাকড়সার জাল আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে কয়েক লাখ মাকড়সা একসঙ্গে বসবাস করছে। গবেষকেরা একটি অন্ধকার ও সালফার-সমৃদ্ধ গুহার মধ্যে দুটি ভিন্ন প্রজাতির মাকড়সার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখেছেন। জীববিজ্ঞানীরা মাকড়সার এই আবাসকে অত্যন্ত বিরল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের বিজ্ঞানী লেনা গ্রিনস্টেড বলেন, মাকড়সাদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে বসবাস করা সত্যিই বিরল। এমন একটি জায়গায় মাকড়সার এত বড় একটি উপনিবেশের সন্ধান পাওয়া আমার কাছে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। সাবটেরেনিয়ান বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।
প্রায় ১ হাজার ১৪০ বর্গফুট বা ১০৬ বর্গমিটার আয়তনের বিশাল মাকড়সার জালের অবিশ্বাস্য কাঠামো দেখা যায়। একটি বিস্তৃত সালফার কেভ বা গুহার একটি সরু পথের প্রাচীর বরাবর পুরু কার্পেটের মতো বিছানো আছে মাকড়সার জালটি। আনুমানিক ১ লাখ ১০ হাজার মাকড়সা নিয়ে গঠিত মাকড়সার উপনিবেশ আছে এই জালে।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, জালের নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই। বিশাল ফানেল-আকৃতির জাল বলা যায় কাঠামোকে। দুটি ভিন্ন প্রজাতির মাকড়সা আছে সেখানে। প্রায় ৬৯ হাজার সাধারণ গৃহস্থালি মাকড়সা ও ৪২ হাজার প্রিনেরিগন ভেগান নামের মাকড়সা সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এমন বড় আবাস আগে বিজ্ঞানীরা কখনো দেখেনি। বড় গৃহস্থালি মাকড়সা তার ছোট প্রতিবেশীকে শিকার করে থাকে। বিজ্ঞানী গ্রিনস্টেড বলেন, যদি মাকড়সারা কাছাকাছি থাকে, তবে তারা লড়াই করে। শেষ পর্যন্ত একে অপরকে খেয়ে ফেলে। আমরা মাঝেমধ্যে দেখতে পাই, কোন আবাসে খাদ্যের প্রাচুর্য থাকলে তারা কিছুটা কম আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
গবেষকদের মতে, মাকড়সা ছাড়াও সেই গুহায় স্থলজ প্রাণী বাস করে। বিজ্ঞানীরা জানান, গুহার প্রবেশপথের কাছে অবস্থিত জলধারার পথে সালফারযুক্ত স্রোত দেখা যায়। সেই গুহার প্রাচীরের একটি বড় অংশ জুড়ে একটি বিশাল ঔপনিবেশিক মাকড়সার জাল ছড়িয়ে আছে। মাকড়সার দুটি প্রজাতি গুহার প্রবেশপথ থেকে প্রায় ১৬০ ফুট ভেতরের স্থায়ী অন্ধকার অঞ্চলে শান্তিতে বসবাস করছে। স্থানীয় সরান্ডাপোরো নদীর জলপ্রবাহ দ্বারা সৃষ্ট ভ্রোমোনার ক্যানিয়নে গুহাটি তৈরি হয়েছে। গ্রিক ভাষায় ‘ভ্রোমোনার’ শব্দের অর্থ দুর্গন্ধযুক্ত পানি।
গবেষকেরা জানিয়েছে, সেখানে আনুমানিক ২৪ লাখ খুদে মাছির বসবাস আছে। মাছিরা মাকড়সার উপনিবেশের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। অস্বাভাবিকভাবে এই ঘন মাছির ঝাঁক মাকড়সার খাবার উৎস। অন্ধকার পরিবেশে মাকড়সাদের দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা থাকতে পারে সেখানে। আলবেনিয়ার ইউনিভার্সিটি অব তিরানার জীববিজ্ঞানী ও প্রাণিবিজ্ঞানী বেলেরিনা ভ্রেনোজি বলেন, ‘এই বছরের সেরা অভিযান থেকে আমরা এই রহস্য বের করেছি। গুহা উপনিবেশের এই বিশাল জাল প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন চেক স্পেলিওলজিস্টদের একটি দল। তাদের নেতৃত্বে থাকা বিজ্ঞানী মারেক অডি বলে, জালটি ঘন একটি কম্বলের মতো। সেখানে যখন বিপদ আসে, তখন স্ত্রী মাকড়সা হামাগুড়ি দিয়ে ভেতরে চলে যায়। গুহাতে প্রচুর বাদুড়ের উপনিবেশ রয়েছে। আর্দ্র ও অন্ধকার স্থানে মাছির প্রাচুর্যের কারণে মাকড়সা ও বাদুড় উভয়ই সেখানে বাস করছে।’
সূত্র: ইউরো নিউজ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপন ব শ র ম কড়স র ব স করছ ব স কর র একট
এছাড়াও পড়ুন:
‘আউট’ লিখে ভিডিও দেওয়া ছাত্রদল কর্মীকে আসামি করে মামলা
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ওরফে জহির হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ‘আউট’ লিখে ক্রিকেট খেলার ভিডিও পোস্ট করা ছাত্রদল কর্মী কাউসার মানিক বাদল ওরফে ছোট কাউসারসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী আইরিন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আরো পড়ুন:
রাজধানীর পল্লবীতে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
গোপালগঞ্জে গরু চুরি: গণপিটুনে আহত আরেকজনের মৃত্যু
আরো পড়ুন: বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
পুলিশ জানায়, চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার পশ্চিম লতিফপুর এলাকা থেকে কাউসারের তিন সহযোগী হুমায়ূন কবির সেলিম (৫০), আলমগীর হোসেন (৪০) ও ইমন হোসেনকে (২১) গ্রেপ্তার করে। তাদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের আধা ঘণ্টা পর কাউসার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ‘আউট’ লিখে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকসহ একটি ক্রিকেট খেলার ভিডিও পোস্ট করেন। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে এলাকায় আলোচনার সৃষ্টি হয় এবং নিহত ব্যক্তির পরিবার তাকে হত্যার অন্যতম দায়ী ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। হত্যা মামলায় কাউসারকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
আবুল কালাম চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চন্দ্রগঞ্জের মোস্তফার দোকান এলাকায় তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
অভিযুক্ত কাউসার স্থানীয় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য। গত বছরের ৭ আগস্ট বিভিন্ন অভিযোগে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য কাউসারকে ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদল। পরবর্তীতে ৩ নভেম্বর পুনরায় কাউসারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদল। এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তিনি একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। এ ছাড়া ছাত্রদল নেতা কাউসারের সঙ্গে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ ছিল আবুল কালামের।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফয়েজুল আজীম বলেন, “নিহতের স্ত্রী খুনের ঘটনায় মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডের আবেদন করে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। কাউসারের পোস্টটি তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের সব কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হবে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ