বেসরকারি সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ ‘অফিসার–পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি)’ পদে জনবল নিয়োগ দেবে। পদটিতে ঢাকায় স্থায়ীভাবে কাজ করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগ চলবে ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত।
পদসংখ্যা: একটি

বেতন ও সুবিধা
মাসিক মোট বেতন ৮১ হাজার ৭৮১ টাকা। এ ছাড়া উৎসব ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, চিকিৎসা–সুবিধা, গ্রুপ লাইফ ইনস্যুরেন্স, মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ভাতা ও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি অনলাইন কোর্স, ঘরে বসেই শিখুন নতুন দক্ষতা০৫ অক্টোবর ২০২৫

কাজের ধরন
একশনএইড বাংলাদেশের রিসোর্স মোবিলাইজেশন বিভাগের অধীনে পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ইউনিটে কাজ করতে হবে। দায়িত্বের মধ্যে থাকবে প্রকল্প নকশা, তহবিল সংগ্রহ, দাতা ব্যবস্থাপনা, প্রতিবেদন তৈরি, অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। পদপ্রার্থীকে নিয়মিত অনুদান সংগ্রহ প্রচারণা, শিশু সহায়তা কর্মসূচি ও করপোরেট পার্টনারদের সঙ্গে কাজের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করতে হবে।

আরও পড়ুনগণপূর্ত অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬৬৯২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যোগ্যতা
• সমাজবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, মানবাধিকার, ব্যবসায় প্রশাসন, রাজনৈতিকবিজ্ঞান বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি।
• কোনো বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় প্রোগ্রাম ফান্ডিং ও পার্টনারশিপ উন্নয়ন কাজে অন্তত দুই থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
• বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে।
• তহবিল সংগ্রহ, প্রকল্প প্রস্তাব লেখা, দাতা প্রতিবেদন তৈরি ও যোগাযোগে পারদর্শী হতে হবে।
• নারী অধিকার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন, যুব উন্নয়ন বা মানবাধিকারভিত্তিক কাজে অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

দক্ষতা ও গুণাবলি
দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা, সময় ব্যবস্থাপনা ও সমস্যা সমাধানে সক্ষমতা থাকতে হবে। পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তি শেখার আগ্রহ ও নৈতিক মানদণ্ড মেনে কাজ করার মানসিকতাও প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৯ম–১০ম গ্রেডে চাকরি, আবেদন শেষ ৮ অক্টোবর১০ ঘণ্টা আগে

আবেদন করার নিয়ম
• যোগ্য প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদনের শেষ তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২৫।
• একশনএইড বাংলাদেশ কোনো আবেদন ফি গ্রহণ করে না। ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ বা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
• সংস্থাটি যৌন হয়রানি ও শিশুর প্রতি নির্যাতনের বিষয়ে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করে।

একনজরে
প্রতিষ্ঠান: একশনএইড বাংলাদেশ
পদ: অফিসার–পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি)
কর্মস্থল: ঢাকা
চুক্তির মেয়াদ: ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত
বেতন: মাসে ৮১ হাজার ৭৮১ টাকা
আবেদনের শেষ তারিখ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫
আবেদনের পদ্ধতি: অনলাইনে

আরও পড়ুনঅধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগও হবে এনটিআরসিএর মাধ্যমে০৫ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ভ লপম ন ট ক জ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

এলএনজি হলো একটি আর্থিক ফাঁদ: একশনএইড বাংলাদেশ

দেশীয় গ্যাস থেকে সরে গিয়ে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। এটি বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের মজুতের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। বিদেশি অর্থদাতাদের ওপর নির্ভরতা আরও গভীর করেছে। এতে আর্থিক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আমদানি করা এলএনজি হলো একটি আর্থিক ফাঁদ।

বাংলাদেশে এলএনজি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নরওয়ের বিনিয়োগ স্থানান্তর নিয়ে এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংলাপের শুরুতে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ। গবেষণাটি যৌথভাবে করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ ও একশনএইড বাংলাদেশ।

একশনএইড বাংলাদেশ ও বিজনেস স্টান্ডার্ড যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে বলা হয়, নরডিক দেশগুলো বিশ্বব্যাপী জলবায়ু নেতা হিসেবে পরিচিত। অথচ তাদের অর্থায়ন অনিচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে মারাত্মক অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে এলএনজি আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। ওই সময় থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এলএনজি আমদানি করতে খরচ হয়েছে মোট ১৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এই আমদানি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এলএনজির বিশ্ববাজার অস্থির থাকে, মূল্য ওঠানামা করে। এতে অর্থনীতি ঝুঁকিতে থাকে। এ ছাড়া ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার পেছনে (ক্যাপাসিটি চার্জ) খরচ হয়েছে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। এর মধ্যে অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্যাসচালিত। গ্যাসের অভাবে বসিয়ে রেখে উৎপাদন না করেও কেন্দ্র ভাড়া দিতে হয়েছে বছরের পর বছর। এসব খরচের কারণে সামাজিক খাত ও অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে বরাদ্দ সরিয়ে নিতে হয়।

খুলনায় নির্মিত ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নির্মিত এ কেন্দ্রটি গ্যাসের অভাবে বসে আছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে না পারায় প্রকল্পটি আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করেছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সময়ে খোলাবাজার থেকে এলএনজি কিনতে খরচ হয়েছে ১১ বিলিয়ন ডলার। এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাড়ে ছয় গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন করা যেত। এলএনজি খাতে প্রতি এক ডলার বিনিয়োগ করলে আট ডলার লোকসান হয়। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ১ ডলার বিনিয়োগ করে ৯ ডলার লাভ পাওয়া যায়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে এলএনজির মতো আর্থিক ঝুঁকি নেই। প্রকল্প চালুর পর জ্বালানির খরচ শূন্য। কর্মসংস্থান হয় এলএনজি খাতের চেয়ে তিন গুণ। জলবায়ুর ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব নেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যাসভিত্তিক জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণ করতে গিয়ে মহেশখালীর মতো এলাকায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। হাজার হাজার পরিবারকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানচ্যুত করা হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জীবিকা—যেমন পূর্বপুরুষের লবণ চাষ, চিংড়ি চাষ এবং নষ্ট হয়েছে উর্বর জমি।

অনুষ্ঠানে মহেশখালী থেকে আসা আবদুস সবুর অভিযোগ করেন, বাপ–দাদার সময় থেকে সাগরে মাছ ধরেন। ছোট নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে গেলে এলএনজি টার্মিনালের লোকজন নির্যাতন করেন। গরম পানি মারেন, নৌকা ডুবিয়ে দেন। ওই দিকে মাছ ধরতে যাওয়া যায় না। আয়–রোজগার নেই। ১৫০ থেকে ২০০ জেলে ভোগান্তিতে আছেন।

নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট এলাকায় একাধিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়েছে। এখানকার বাসিন্দা মো. গুলজার হোসেন অনুষ্ঠানে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে হয়রানি করেছে। তাদের গ্রামের জমি নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে। গ্রামে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা কিছুই তৈরি করেনি।

গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান। এতে বলা হয়, সৌর ও বায়ু শক্তিতে বিনিয়োগ বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমায়, স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নরওয়ের বিনিয়োগ স্থানান্তর করা হলে এলএনজিনির্ভরতার আর্থিক ফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে। তাই নরডিক দেশগুলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শতভাগ সৌরবিদ্যুৎ বাংলাদেশে সম্ভব নয়। আবার এলএনজি ছাড়া গ্যাস সরবরাহ হবে না। আরও অনেক বছর প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি করতে হবে। তাই বাস্তবিক অর্থে জ্বালানি নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হবে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, অগ্রাধিকার ঠিক করে এগোতে হবে। সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬৫ শতাংশ জ্বালানি আসে আমদানি থেকে। আমদানি থেকে ধীরে ধীরে বের হতে না পারলে একসময় আমদানি করাও কঠিন হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একশনএইড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ। এতে আরও বক্তব্য দেন নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা নাজমুল হক, ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) বাংলাদেশের প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এলএনজি হলো একটি আর্থিক ফাঁদ: একশনএইড বাংলাদেশ