বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ইউট্যাবের উদ্বেগ
Published: 19th, October 2025 GMT
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই সংগঠনের নেতারা।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ভুখা মিছিল
৫৬ শতাংশ শিক্ষকের বাড়িভাড়া ১২ শতাংশের বেশি বাড়বে
বিবৃতিতে ইউট্যাব নেতারা বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থানে কার্গো ভিলেজে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইউট্যাব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। দেশের প্রধান প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বারবার এমন দুর্ঘটনা, বিশেষ করে কার্গো ভিলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন লাগার ঘটনা কেবল একটি দুর্ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না।
এটি দেশের ভাবমূর্তি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিপুল পরিমাণ আমদানি করা পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি এবং বিমান চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা জাতীয় অর্থনীতির জন্য এক বিশাল ধাক্কা।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা মনে করি, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বারংবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা, অব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তার দুর্বলতার পরিচায়ক। এই অগ্নিকাণ্ড দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের মনোযোগের অভাব রয়েছে।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে, ঠিক তখনই দেশের স্পর্শকাতর একটি স্থানে এমন বিপর্যয় ঘটল। ইউট্যাব দৃঢ়ভাবে মনে করে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার হীন উদ্দেশ্যে এই অগ্নিকাণ্ড আগামী সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
এই ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক শক্তির যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা দ্রুত, নিরপেক্ষ ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, আমরা মনে করি, কেবল অগ্নিকাণ্ডের কারণ নির্ণয় করাই যথেষ্ট নয়, এর পেছনে যদি কোনো অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা বা দেশবিরোধী শক্তির মদদ থাকে, তবে তা খুঁজে বের করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তারা আরো বলেন, সরকার ইতোমধ্যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে। আমরা মনে করি, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ উদঘাটন করে এই ঘটনায় জড়িত সকল দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সকল ত্রুটি ও দুর্বলতা দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।
কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, অনতিবিলম্বে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিমান চলাচল স্বাভাবিক করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত আমদানি-রপ্তানিকারকদের তালিকা তৈরি করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। কার্গো ভিলেজসহ বিমানবন্দরের সকল স্থানে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিশ্চিত করতে হবে এবং তা নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, তার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইউট্যাব বিশ্বাস করে, জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির স্বার্থে সরকার এ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করবে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সংস্থাকে দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইউট্যাব আশা করে, সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এর পেছনে থাকা প্রকৃত কারণ এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউট য ব ব যবস থ উদ ব গ সরক র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
সেন্ট্রাল হাসপাতালে নারী রোগীকে যৌন হয়রানি, গ্রেপ্তার ৩
পাবনা শহরের সেন্ট্রাল হাসপাতালে এক নারী রোগীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে হাসপাতালের তিন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা সদর উপজেলার গাছপাড়া এলাকার আবুল হোসেন (৩০), ভাঙ্গুড়া উপজেলার আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৪) ও পাবনা পৌর সদরের চক পৈলানপুর এলাকার মোত্তাকিন বিশ্বাস (৩৭)।
আরো পড়ুন:
ডাকসুতে বিজয়ী নারীদের ‘গৃহ দাসী’ বললেন ঢাবি শিক্ষার্থী
রাবির আবাসিক হলের ৯১ ছাত্রীকে ‘যৌনকর্মী’ বললেন ছাত্রদল নেতা
শনিবার (১৮ অক্টোবর) মধ্য রাতে পাবনা শহরের সেন্ট্রাল হাসপাতালে এ যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। রবিবার ((১৯ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, শনিবার রাতে পাবনা শহরের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন সেন্ট্রাল হাসপাতালে এক রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালেরর এক কর্মী তাকে যৌন হয়রানির করেন বলে স্বজদের কাছে জানান ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজন প্রতিবাদ করতে গেলে প্রথমে হাসপালটির কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। ভুক্তভোগীর রোগীর স্বজন ও পাবনা সরকারী এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী রেদোয়ান আহমেদ শুভর সঙ্গেও সেখানে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে বহিরাগতরা যোগ দিলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়।
এ খবর সরকারী এডওয়ার্ড কলেজের ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ওই ছাত্রের সহপাঠিরা এসে হাসপাতালে অতর্কিত হামলা চালান এবং বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনার জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় হাসপাতালটির সব ধরনের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মোমিন সরদার বাদী হয়ে রবিবার সকালে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে আটক হাসপাতালের তিন কর্মীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানে হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী