ইডিপাস থিবসের পৌরাণিক রাজা, যিনি সফোক্লিসের বিখ্যাত বিয়োগান্ত নাটক ‘ইডিপাস দ্য কিং’-এর কেন্দ্রবিন্দু থিবস। গ্রিক পুরাণের একজন বিয়োগান্তক চরিত্র, যিনি না জেনে তার পিতাকে হত্যা করেন এবং নিজের মাতাকে বিবাহ করেন। তার কাহিনী সফোক্লিস রচিত বিখ্যাত নাটক ‘ইডিপাস রেক্স’-এ (রাজা ইডিপাস) বর্ণিত হয়েছে। 

ইডিপাসের মূল গল্প

আরো পড়ুন:

‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয় যে পাখিকে

অতিরিক্ত হাঁচি হলে শরীরে যেসব পরিবর্তন দেখা দিতে পারে 

থিবসের রাজা লাইয়াস এবং রানী জোকাস্টার সন্তান হিসেবে ইডিপাসের জন্ম হয়। জন্মের আগেই এক দৈববাণীতে বলা হয়, এই সন্তান বড় হয়ে তার পিতাকে হত্যা করবে এবং মাতাকে বিয়ে করবে। 

এই ভয়াবহ পরিণতি এড়াতে, রাজা লাইয়াস শিশু ইডিপাসকে এক মেষপালকের কাছে দেন এবং তাকে মেরে ফেলতে বলেন। মেষপালক দয়াপরবশ হয়ে শিশুটিকে না মেরে করিন্থের রাজা পলিবাসের কাছে হস্তান্তর করে, যিনি ইডিপাসকে নিজের সন্তান হিসেবে লালন-পালন করেন।

বড় হয়ে ইডিপাস যখন তার নিজের ভাগ্য সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি মনে করেন করিন্থের রাজা ও রানীই তার আসল বাবা-মা। তাদের ক্ষতি এড়াতে তিনি করিন্থ ছেড়ে চলে যান।

যাত্রাপথে এক সংকীর্ণ রাস্তায় এক বৃদ্ধের রথের সাথে তার বিতর্ক হয় এবং রাগের বশে তিনি সেই বৃদ্ধকে হত্যা করেন, যিনি আসলে ছিলেন তার আসল পিতা রাজা লাইয়াস। এরপর তিনি থিবসের উপকণ্ঠে পৌঁছান, যা তখন স্ফিংস নামক এক দানবীর দ্বারা আক্রান্ত ছিল। 

স্ফিংস পথচারীদের একটি ধাঁধা জিজ্ঞেস করত ‘এমন কোন প্রাণী আছে যার একটি কণ্ঠস্বর হওয়া সত্ত্বেও কখনও দুই পা, কখনও তিন পা, আবার কখনও চার পা থাকে, এবং যখন তার সবচেয়ে বেশি পা থাকে তখন সে সবচেয়ে দুর্বল হয়?’। ইডিপাস সঠিক উত্তর দেন ‘মানুষ’ যে শৈশবে চার পায়ে হামাগুড়ি দেয়, যৌবনে দুই পায়ে চলে এবং বার্ধক্যে লাঠির সাহায্যে তিন পায়ে হাঁটে। স্ফিংস পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা করে।

শহরকে বাঁচানোর পুরস্কার হিসেবে ইডিপাস থিবসের রাজা হন এবং বিধবা রানী জোকাস্টাকে বিয়ে করেন। তাদের চারটি সন্তান হয়।

অনেক বছর পর যখন থিবস শহরে প্লেগ দেখা দেয়, তখন দৈববাণীতে জানা যায় যে, রাজ্যের প্রাক্তন রাজার হত্যাকারী শহরেই বাস করছে। ইডিপাস হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার প্রতিজ্ঞা করেন। সত্য উদ্ঘাটনের এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে তিনি নিজেই তার পিতাকে হত্যা করেছেন এবং নিজের মাতাকে বিয়ে করেছেন। এই সত্য জানার পর জোকাস্টা লজ্জায় ও হতাশায় আত্মহত্যা করেন এবং ইডিপাস নিজের চোখ অন্ধ করে শহর ছেড়ে নির্বাসনে যান। 

উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়ান মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড ইডিপাসের এই কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ তত্ত্বটি প্রস্তাব করেন। 

সূত্র: ব্রিটানিকা

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সন ত ন থ বস র

এছাড়াও পড়ুন:

ইডিপাস: না জেনে নিজের মাকে বিয়ে করেছিলেন

ইডিপাস থিবসের পৌরাণিক রাজা, যিনি সফোক্লিসের বিখ্যাত বিয়োগান্ত নাটক ‘ইডিপাস দ্য কিং’-এর কেন্দ্রবিন্দু থিবস। গ্রিক পুরাণের একজন বিয়োগান্তক চরিত্র, যিনি না জেনে তার পিতাকে হত্যা করেন এবং নিজের মাতাকে বিবাহ করেন। তার কাহিনী সফোক্লিস রচিত বিখ্যাত নাটক ‘ইডিপাস রেক্স’-এ (রাজা ইডিপাস) বর্ণিত হয়েছে। 

ইডিপাসের মূল গল্প

আরো পড়ুন:

‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয় যে পাখিকে

অতিরিক্ত হাঁচি হলে শরীরে যেসব পরিবর্তন দেখা দিতে পারে 

থিবসের রাজা লাইয়াস এবং রানী জোকাস্টার সন্তান হিসেবে ইডিপাসের জন্ম হয়। জন্মের আগেই এক দৈববাণীতে বলা হয়, এই সন্তান বড় হয়ে তার পিতাকে হত্যা করবে এবং মাতাকে বিয়ে করবে। 

এই ভয়াবহ পরিণতি এড়াতে, রাজা লাইয়াস শিশু ইডিপাসকে এক মেষপালকের কাছে দেন এবং তাকে মেরে ফেলতে বলেন। মেষপালক দয়াপরবশ হয়ে শিশুটিকে না মেরে করিন্থের রাজা পলিবাসের কাছে হস্তান্তর করে, যিনি ইডিপাসকে নিজের সন্তান হিসেবে লালন-পালন করেন।

বড় হয়ে ইডিপাস যখন তার নিজের ভাগ্য সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি মনে করেন করিন্থের রাজা ও রানীই তার আসল বাবা-মা। তাদের ক্ষতি এড়াতে তিনি করিন্থ ছেড়ে চলে যান।

যাত্রাপথে এক সংকীর্ণ রাস্তায় এক বৃদ্ধের রথের সাথে তার বিতর্ক হয় এবং রাগের বশে তিনি সেই বৃদ্ধকে হত্যা করেন, যিনি আসলে ছিলেন তার আসল পিতা রাজা লাইয়াস। এরপর তিনি থিবসের উপকণ্ঠে পৌঁছান, যা তখন স্ফিংস নামক এক দানবীর দ্বারা আক্রান্ত ছিল। 

স্ফিংস পথচারীদের একটি ধাঁধা জিজ্ঞেস করত ‘এমন কোন প্রাণী আছে যার একটি কণ্ঠস্বর হওয়া সত্ত্বেও কখনও দুই পা, কখনও তিন পা, আবার কখনও চার পা থাকে, এবং যখন তার সবচেয়ে বেশি পা থাকে তখন সে সবচেয়ে দুর্বল হয়?’। ইডিপাস সঠিক উত্তর দেন ‘মানুষ’ যে শৈশবে চার পায়ে হামাগুড়ি দেয়, যৌবনে দুই পায়ে চলে এবং বার্ধক্যে লাঠির সাহায্যে তিন পায়ে হাঁটে। স্ফিংস পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা করে।

শহরকে বাঁচানোর পুরস্কার হিসেবে ইডিপাস থিবসের রাজা হন এবং বিধবা রানী জোকাস্টাকে বিয়ে করেন। তাদের চারটি সন্তান হয়।

অনেক বছর পর যখন থিবস শহরে প্লেগ দেখা দেয়, তখন দৈববাণীতে জানা যায় যে, রাজ্যের প্রাক্তন রাজার হত্যাকারী শহরেই বাস করছে। ইডিপাস হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার প্রতিজ্ঞা করেন। সত্য উদ্ঘাটনের এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে তিনি নিজেই তার পিতাকে হত্যা করেছেন এবং নিজের মাতাকে বিয়ে করেছেন। এই সত্য জানার পর জোকাস্টা লজ্জায় ও হতাশায় আত্মহত্যা করেন এবং ইডিপাস নিজের চোখ অন্ধ করে শহর ছেড়ে নির্বাসনে যান। 

উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়ান মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড ইডিপাসের এই কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ তত্ত্বটি প্রস্তাব করেন। 

সূত্র: ব্রিটানিকা

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ