এক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের সীমান্তে ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর দক্ষিণ এশীয় দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক এখন পর্যন্ত সবচেয়ে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তি আলোচনার পর উভয় দেশ লড়াই বন্ধ করে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বলে গত রোববার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়। আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে কাতার ও তুরস্ক।

গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ সহিংসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং শত শত লোক আহত হয়েছেন। ১১ অক্টোবর ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার (১ হাজার ৬০০ মাইল) দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এর আগে কাবুল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালায় ইসলামাবাদ। তাদের দাবি, তারা পাকিস্তানের ভেতর হামলায় জড়িত কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এ অভিযান চালিয়েছে।

তাহলে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে আমরা কী জানি? এরপর কী হতে পারে?

কাতারের রাজধানী দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আলোচনার পরপরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশ ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ সহিংসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও শত শত লোক আহত হয়েছেন। দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আলোচনার পরপরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশ ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতি যেন টেকসই হয় ও গ্রহণযোগ্যভাবে কার্যকর থাকে, তা নিশ্চিত করতে আগামী দিনে উভয় পক্ষ আবারও বৈঠকে বসবে। এতে দুই দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

কাতারের বিবৃতির পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আসিফ লিখেছেন, ‘আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনই বন্ধ হবে। উভয় দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করবে।’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, বিস্তারিত আলোচনার জন্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদলের পরবর্তী বৈঠক ২৫ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, এই যুদ্ধবিরতি ‘সঠিক পথে প্রথম পদক্ষেপ’।

ইসহাক দার এক্সে আরও লিখেছেন, ‘তুরস্কে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকে এমন একটি কার্যকর ও যাচাইযোগ্য নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশায় আছি, যা আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানের দিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাবে। আরেকটি প্রাণহানি ঠেকাতে সব প্রচেষ্টা নেওয়া জরুরি।’

আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনই বন্ধ হবে। উভয় দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করবে।খাজা আসিফ, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদও বলেছেন, চুক্তির আওতায় দুই দেশ শান্তি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং মজবুত ও গঠনমূলক প্রতিবেশী সম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মুজাহিদ এক্সে লিখেছেন, ‘দুই দেশই সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যা ও বিরোধ মেটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো দেশ অপর দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ কাজ করবে না বা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে হামলা চালানো কোনো গোষ্ঠীকে সমর্থন দেবে না।’

কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ক স ত ন ও আফগ ন স ত ন র ন শ চ ত কর পরর ষ ট র ত রস ক ত হয় ছ র র পর

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে, শান্তিচুক্তি টিকবে তো

এক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাদের সীমান্তে ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর দক্ষিণ এশীয় দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক এখন পর্যন্ত সবচেয়ে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তি আলোচনার পর উভয় দেশ লড়াই বন্ধ করে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বলে গত রোববার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়। আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে কাতার ও তুরস্ক।

গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ সহিংসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং শত শত লোক আহত হয়েছেন। ১১ অক্টোবর ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার (১ হাজার ৬০০ মাইল) দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এর আগে কাবুল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালায় ইসলামাবাদ। তাদের দাবি, তারা পাকিস্তানের ভেতর হামলায় জড়িত কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এ অভিযান চালিয়েছে।

তাহলে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে আমরা কী জানি? এরপর কী হতে পারে?

কাতারের রাজধানী দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আলোচনার পরপরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশ ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ সহিংসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও শত শত লোক আহত হয়েছেন। দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আলোচনার পরপরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশ ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতি যেন টেকসই হয় ও গ্রহণযোগ্যভাবে কার্যকর থাকে, তা নিশ্চিত করতে আগামী দিনে উভয় পক্ষ আবারও বৈঠকে বসবে। এতে দুই দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

কাতারের বিবৃতির পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আসিফ লিখেছেন, ‘আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনই বন্ধ হবে। উভয় দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করবে।’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, বিস্তারিত আলোচনার জন্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদলের পরবর্তী বৈঠক ২৫ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, এই যুদ্ধবিরতি ‘সঠিক পথে প্রথম পদক্ষেপ’।

ইসহাক দার এক্সে আরও লিখেছেন, ‘তুরস্কে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকে এমন একটি কার্যকর ও যাচাইযোগ্য নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশায় আছি, যা আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানের দিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাবে। আরেকটি প্রাণহানি ঠেকাতে সব প্রচেষ্টা নেওয়া জরুরি।’

আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনই বন্ধ হবে। উভয় দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করবে।খাজা আসিফ, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদও বলেছেন, চুক্তির আওতায় দুই দেশ শান্তি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং মজবুত ও গঠনমূলক প্রতিবেশী সম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মুজাহিদ এক্সে লিখেছেন, ‘দুই দেশই সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যা ও বিরোধ মেটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো দেশ অপর দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ কাজ করবে না বা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে হামলা চালানো কোনো গোষ্ঠীকে সমর্থন দেবে না।’

কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ