প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত ‘নিরপেক্ষ নয়।’ তার দেশ শান্তিকে সমর্থন করে এবং লড়াই বন্ধ করতে চায়। নয়া দিল্লি সফররত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেছেন।
মোদি বলেছেন, “ভারত নিরপেক্ষ নয়। ভারতের একটি পক্ষ আছে এবং সেই পক্ষটি শান্তির। আমরা শান্তির জন্য সমস্ত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি এবং আমরা শান্তির জন্য সমস্ত প্রচেষ্টার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।”
রাশিয়াকে সত্যিকারের বন্ধু আখ্যা দিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইউক্রেন সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা ক্রমাগত আলোচনায় রয়েছি। সময়ে সময়ে, আপনিও, একজন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে, আমাদের সবকিছু সম্পর্কে খবর রেখেছেন। আমি বিশ্বাস করি যে আস্থা একটি মহান শক্তি.
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ভাষণে মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ইউক্রেনের সংঘাত নিরসনে শান্তিপূর্ণ সমঝোতার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, “সম্ভাব্য শান্তি সমঝোতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শান্তি সমাধানে আপনার প্রচেষ্টার জন্য এবং এই বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।”
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীর ২৪৩ প্রাইমারি স্কুলের সব শিক্ষককে শোকজ
তিন দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের চলমান কমপ্লিট শাটডাউন ও কর্মবিরতী কর্মসূচির কারণে নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার ২৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এসব প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব পৃথকভাবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
আরো পড়ুন:
কর্মবিরতি করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের কড়া বার্তা
নেত্রকোণায় দুই স্কুলে আগুন, আসবাবপত্র পুড়ে কয়লা
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষা নেননি। বরং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছেন এবং বিদ্যালয়ে তালা লাগানো হয়েছে, যা দায়িত্বহীন আচরণ।
নোটিশে আরো বলা হয়, সরকারি কর্মচারী হিসেবে এমন আচরণ সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৮ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নেতা বলেন, আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মোট ৪২ জনকে মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ আদেশে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদও এর মধ্যে রয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব বলেন, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়া এবং সরকারি দায়িত্ব পালন না করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”
তিন দাবিতে দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা গত ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এর মধ্যে গত ২ দিন ধরে চলছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন ও বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার কর্মসূচি।
তারপরও নোয়াখালীতে বেশ কিছু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে জেলা শহরের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “আমি আমার স্কুলে অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। সহকারী শিক্ষকরা সকালে পরীক্ষার পর স্কুলের মূল ফটকে তালা মেরে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক অভিভাবকদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হঠেন।
আলাউদ্দিন নামে একজন অভিভাবক বলেন, “শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। তারা (শিক্ষক) সমাজের সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তাদের যদি কােনো দাবি থাকে, তাহলে তারা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন। পরীক্ষা চলাকালীন তাদের শার্টডাউন ও কর্মবিরতী সমর্থনযোগ্য নয়।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ