মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের চলমান কর্মবিরতিতে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জরুরি সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সেবাপ্রার্থী মানুষের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রণালয় অবিলম্বে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে যেতে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে, টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দীর্ঘদিনের দাবি—দশম গ্রেড বাস্তবায়ন সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম ইতিবাচকভাবে সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যেহেতু, এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রশাসনিক সমস্যা, তাই সমাধানে সময় লাগবে।

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কর্মবিরতি

খালেদা জিয়াকে দেখতে ইংল্যান্ডের ডা.

রিচার্ড বিলি হাসপাতালে

সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সচিব পর্যায়ে আলোচনাও ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে, আলোচনার অগ্রগতি সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন, যা মানুষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করছে। 

কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘রোগীদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের প্রয়াস’ বলে মন্তব্য করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এ অবস্থায় সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ চলমান থাকা সত্ত্বেও অযৌক্তিক কর্মবিরতি অব্যাহত রাখাকে জনস্বার্থবিরোধী বলে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়। তাৎক্ষণিকভাবে কাজে যোগ না দিলে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ব্যাহত করার অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব য হত

এছাড়াও পড়ুন:

নয়াদিল্লির ১৭০ কোটি রুপির নিজামের প্রাসাদে থাকছেন পুতিন, কী আছে এতে

ভারতের হায়দরাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলী খান ছিলেন তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর সংগ্রহশালায় থাকা মণিমুক্তার ভান্ডার নিয়ে প্রচলিত ছিল নানা গল্প। বলা হতো, তাঁর মণিমুক্তা রাখা হলে অলিম্পিকে যে আকারের সুইমিংপুল থাকে, তা ভরে যাবে। তো ব্রিটিশরা ভারতের রাজধানী যখন কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নেন, তখন নিজের ঐশ্বর্য প্রদর্শনের এক মহাসুযোগ পেয়েছিলেন ওসমান আলী খান।

দিল্লিতে যখন ব্রিটিশ-ভারতের নতুন রাজধানীর নকশা করা হচ্ছিল, তখন সেখানে রাজাশাসিত রাজ্যগুলো (প্রিন্সলি স্টেট) নিজেদের স্বকীয়তার ছাপ রাখতে চেয়েছিল। এসব রাজ্যের মহারাজারা দিল্লিতে নিজেদের প্রাসাদ তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁদের এমন আগ্রহে তৎকালীন ভাইসরয় আনন্দচিত্তে রাজি হয়েছিলেন। তাঁর মতে, মহারাজাদের এ মনোভাব নতুন রাজধানীর প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতে দুই দিনের সফরে আসা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হায়দরাবাদের শেষ নিজামের বানানো সেই প্রাসাদে থাকছেন, যা ‘হায়দরাবাদ হাউস’ নামে পরিচিত। প্রায় শতবর্ষী এ ঐতিহাসিক প্রাসাদের কিছু টুকিটাকি নিয়ে এই আয়োজন।

হায়দরাবাদ হাউস নকশায় জটিলতা

হায়দরাবাদের নিজাম নতুন রাজধানীর যেকোনো এলাকার একটি যেনতেন জমি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন ভাইসরয়ের বাড়ির কাছে প্রিন্সেস পার্কের কিছু জমি, যেখানে তিনি নিজের প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। কিন্তু ব্রিটিশরা এতে রাজি হননি।

ব্রিটিশরা মাত্র পাঁচজন মহারাজাকে ভাইসরয়ের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে কিং পঞ্চম জর্জের ভাস্কর্যের আশপাশে জমি বরাদ্দ দিতে রাজি হয়েছিলেন। রাজ্যগুলো হলো হায়দরাবাদ, বরোদা, পাতিয়ালা, জয়পুর ও বিকানার।

পাঁচ মহারাজার মধ্যে হায়দরাবাদের নিজাম এবং বরোদার গায়কোওয়াড় তাঁদের দিল্লির প্রাসাদের নকশা করার জন্য বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন লুটিয়েন্সকে নিয়োগ দেন। ব্রিটিশ-ভারতে রাজাশাসিত রাজ্যগুলোর মধ্যে হায়দরাবাদের মর্যাদা ছিল সবচেয়ে বেশি। তাই ওসমান আলী খান ভাইসরয়ের প্রাসাদের সমান একটি বিশাল বাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই অনুমতি পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে জমি বরাদ্দের জন্য সরকার শর্ত দিয়েছিল, সব প্রাসাদের নকশার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। তাই নিজামের নির্দেশ সত্ত্বেও নিজের মতো করেই হায়দরাবাদ হাউসের নকশা করেছিলেন স্থপতি লুটিয়েন্স। ভাইসরয়ের বাড়ির নকশা থেকে নিজামের প্রাসাদের জন্য তিনি কেবল মধ্যভাগের একটি গম্বুজ নিয়েছিলেন।

প্রজাপতি আকৃতির নকশা

একটি দুর্লভ প্রজাপতির আকৃতিতে হায়দরাবাদ হাউসের নকশা করা হয়েছে। চট করে দেখলে মনে হয়, প্রাসাদটির সম্মুখভাগের ষড়্‌ভুজ প্রবেশপথ রাস্তার দিকে যেন তাকিয়ে আছে। প্রজাপতির ডানা দুটি পাশের রাস্তার সঙ্গে মিশে গেছে।

নয়াদিল্লিতে ওই সময়ে যত প্রাসাদ তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে হায়দরাবাদ হাউস ছিল সবচেয়ে বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ। ১৯০৩ সালে ইংল্যান্ডের লেস্টারশায়ারের পাপিলন হলের জন্য প্রজাপতি আকৃতির একটি নকশা করেছিলেন লুটিয়েন্স। সেটার আদলেই হায়দরাবাদ হাউসের নকশা করা হয়েছিল।

১৯২০-এর দশকে হায়দরাবাদ হাউস নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২ লাখ পাউন্ড। মূল্যস্ফীতিকে আমলে নিলে ২০২৩ সালে অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৭০ কোটি রুপি।

২০২১ সালে ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের সময় হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ