শরীয়তপুরে গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু
Published: 21st, October 2025 GMT
শরীয়তপুর পৌরসভার রূপনগর এলাকার ভাড়া বাসার খাটের উপরে পড়ে থাকা গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় গৃহকর্মী নাজমা বেগমের (৪২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারীকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক মাদবরের বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। নাজমা বেগম নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের ডগ্রি এলাকার সেকেন্দার কাজীর মেয়ে।
আরো পড়ুন:
‘তুমি না মরলে আমি মাহীরের হব না’, বলেন বর্ষা
জোবায়েদ হত্যা: ছাত্রী বর্ষাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, কেউ তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে। তাছাড়া তার ঘরের আলমারি খোলা ছিল এবং জিনিসপত্র সব এলোমেলো ছিল। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করছি।’’
এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাজমা বেগমের তিন বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে তিনি ছেলে নিলয়কে নিয়ে আব্দুল মালেক মাদবরের বাসায় দোতলা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। ছেলে নিলয় পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। আর নাজমা বেগম ভরণপোষণের জন্য অন্যের বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন।
প্রতিদিনের মতো সকালে নিলয় বিদ্যালয়ে চলে গেলে নাজমা বেগম একাই বাসায় ছিলেন। স্কুল থেকে ছেলে দুপুরে ফিরে এসে মাকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
নাজমা বেগমের ভাই দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘‘আমার বোনের কিছু স্বর্ণালঙ্কার কিছু দিন আগে বন্দক থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছিল। সেই মালামাল বাসায় ছিল। কেউ আমার বোনকে ওই জিনিসের জন্য হত্যা করেছে।’’ তিনি বোনের হত্যাকারীদের বিচার চান।
বাসার মালিকের স্ত্রী নাজমুন নাহার বলেন, ‘‘উনি ভাড়াটিয়া হিসেবে খুব ভালো ছিলেন। বাসাবাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করতেন। তাকে হত্যা করে গলার, নাকের, হাতের সোনার জিনিস সব নিয়ে গেছে। তার মৃত্যু রহস্যজনক।’’
ঢাকা/আকাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ন হত উদ ধ র গল য় ফ
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে কাঠমিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আরিফ হোসেন (৪০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আরিফের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বোন নাসরিন আক্তার।
নিহতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার বলেছেন, তিন দিন আগে শনিবার রাতে আরিফের মোবাইল ফোনে কল আসে। কিন্তু, তিনি ঘর থেকে বের হননি। পরে কে যেন বাইরে থেকে তাকে ডাক দিয়েছে। তখন আরিফ বের হয়ে যান, পরে আর ফিরেননি। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বাড়ির অদূরে একটি গভীর নলকূপের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহতের মেয়ে মুন্নি আক্তার বলেছেন, আমার বাবার মাথায়, ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার পা ভাঙা ছিল। কে যেন বাবাকে ডেকে নিয়েছে।
আরিফ কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। তিনি রায়পুর পৌরসভার গোলাম রহমান সর্দার বাড়ির মানিক মিয়ার ছেলে।
নিহতের ভাই শরীফুল ইসলাম ও বোন নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, বাড়ির সামনে কবরস্থানের জমি নিয়ে রায়পুর পৌরসভার সাবেক নারী কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। এর জের ধরে ১০ অক্টোবর লিলির নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শরীফুলের মাথায় জখম হয়। এ ঘটনায় লিলিরা আবার থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তারা (শরীফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা) জামিন পান। এরপর প্রকাশ্যে হুমকি দেন লিলির পক্ষের লোকজন। লিলিরা পরিকল্পিতভাবে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে আরিফকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। পরদিন রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে নাসরিন বাদী হয়ে রায়পুর থানা মামলা দায়ের করেন।
নাসরিন আক্তার বলেছেন, আমার ভাই শরীফের মাথায় রক্তাক্ত জখম করেছে লিলি ও মামুনরা। এরপর তারা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে। পরে জামিন পাওয়ায় তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাদেরকে হুমকিও দিয়েছে। তারাই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাই আরিফকে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিবশী লিলিদের সঙ্গে জমি নিয়ে আরিফদের বিরোধ আছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আরিফের মৃত্যু রহস্যজনক। দ্রুত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাবেক কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেছেন, আরিফের মরদেহের ডান পায়ের হাড়ে একাধিক অংশ ভাঙা ছিল। তবে, পায়ে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। কপালের ডান পাশে চোখের কাছে থেঁতলানো জখম ছিল।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রফিক