এইচএসসির ফল ও শিক্ষার গলদ নিয়ে যেসব কথা না বললেই নয়
Published: 21st, October 2025 GMT
ঢাকা শহরের বেশির ভাগ নামকরা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে যে ইংরেজি গ্রামার শেখানোর চেষ্টা করা হয়, তা ওই শিক্ষার্থীদের মাথায় ধরার কথা না। আবার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এমন সব গ্রামার শেখানো হয়, যা তাদের সঙ্গে মানানসই না।
ওসব পড়া যদি তারা বুঝত, তাহলে ইংরেজি নিয়ে বাংলাদেশে কেন, বিদেশেও তাদের আর সমস্যায় পড়তে হতো না।
গ্রামারের কঠিন বিষয়গুলো সময়ের আগেই পড়ানোর একটি অনিবার্য কারণ হলো শিক্ষার্থীদের প্রাইভেটের প্রতি আকৃষ্ট করা। কোন কোন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়লে স্কুলের পরীক্ষায় কোন ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে, সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা ইঙ্গিত দিয়ে দেন।
এভাবে নিচের শ্রেণির পড়াশোনা কঠিন করে ফেলায় অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানের বয়স দু-তিন বছর কমিয়ে স্কুলে ভর্তি করেন।
বিভাগীয় শহরে বেশির ভাগ স্কুলে বিজ্ঞান শাখার জন্য কয়েকটি সেকশন থাকলেও মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য মাত্র একটি করে সেকশন থাকে। কোনো কোনো স্কুলে আবার মানবিক বিভাগে পড়ার ব্যবস্থাই নেই।
নামকরা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ধারণা, বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে মেধাবীরা, আর দুর্বল শিক্ষার্থীরা পড়ে মানবিক কিংবা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে। তাই নিজেদের মেধাবী প্রমাণের জন্য বেশির ভাগ শিক্ষার্থী যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়ে।
এমনকি একজন শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে সাত বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েও নিজেকে বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করত। কারও বিজ্ঞান ভালো লাগতে পারে, কারও ব্যবসায় শিক্ষা আবার কারও মানবিক। তাই বিভাগ পছন্দের ক্ষেত্রে ভালো লাগাটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
তাহলে ব্যাপকসংখ্যক শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয় কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে? খুব সহজ একটি পরীক্ষা নেওয়া হয় যেখানে সিংহভাগ পাস করে। এই সহজ পরীক্ষা নেওয়ার মধ্যে একধরনের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ছিল। কারণ, বিজ্ঞান বিভাগে যত বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, তত বেশি প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা কমানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়।
এ রকম বাছবিচারহীনভাবে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর ফলে তাদের একটি অংশ টেস্ট পরীক্ষায় সাধারণ গণিতসহ বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়েও অকৃতকার্য হয়।
প্রশ্ন হলো বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর একটা অংশ কীভাবে সাধারণ গণিতেও ফেল করে? উত্তর হলো তাদের বিজ্ঞান পড়ার মতো যোগ্যতা ছিল না।
এই অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে যায়। ব্যাপারটা এমনও না যে টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বোর্ডের প্রশ্নপত্রের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয়। তার মানে এসএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার প্রবণতা থাকে। তা না হলে ওই মানের শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই জিপিএ-৫ পাওয়ার কথা না।
শহরের শিক্ষিত ও ধনী অভিভাবকদের একটি বড় অংশ যুক্তিহীনভাবে সন্তানদের বিজ্ঞান বিভাগে পড়াতে চান। তাঁরা বোঝেন না সন্তানদের বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার মতো মেধা আছে কি না। গণিত ভালোভাবে না বুঝলে যে বিজ্ঞানে পড়া যায় না, এটা বোঝার ক্ষমতা তাঁদের নেই। তাঁরা শিক্ষকের পরামর্শও নেন না।
কোনো কোনো অভিভাবকের মানসিকতা এমন, টাকা থাকলেই প্রাইভেট পড়িয়ে ও কোচিং সেন্টারে পাঠিয়ে সন্তানকে বড় চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
বিগত বছরগুলোতে যে মানের শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে আসছিল, তা আমাদের অবাক করে দিত। যেমন জিপিএ-৫ মানে গড়ে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ নম্বর পাওয়া, যা মোটেও সহজ না। আবার জিপিএ-৫ পেয়েও দুজন শিক্ষার্থীর নম্বরের ব্যবধান হতে পারে বিস্তর; একজন ৮০০ নম্বর এবং আরেকজন ১০০০ নম্বর পেয়েও জিপিএ-৫ পেতে পারে।
এমন ব্যবধানের কারণে জিপিএ-৫ পেয়েও অনেক শিক্ষার্থী গত কয়েক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে গণহারে ফেল করেছে, যদিও প্রশ্নপত্র কঠিন ছিল না।
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ছিল আরেকটি ভুল পদক্ষেপ। ফিন্যান্সের একজন প্রধান প্রশিক্ষক নিয়মিত একটি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি ও তার সমাধান দিতেন। কয়েক দিন প্রত্যক্ষ করার পর দেখতে পেলাম প্রশ্ন ও উত্তর দুটিতেই ভুল থাকে।
শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের আরও একটি পদক্ষেপ ছিল, কয়েকটি বিষয়ে কিংবা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়ে পাস; সর্বশেষ সংযোজন ছিল ‘অটো পাস’। এদের মধ্য থেকে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের পড়াতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তাঁদের জ্ঞানের ব্যাপ্তি ও গভীরতা এতই কম যে অনেকেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বুঝতে পারেন না।এরপর অনলাইন থেকে উক্ত শিক্ষকের ফোন নম্বর জোগাড় করে জানলাম, তিনি হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিন্যান্সের ওপর সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের প্রধান প্রশিক্ষক হয়েছেন। অথচ এ বিষয়ে তার মৌলিক ধারণা পর্যাপ্ত ছিল না। আবার সৃজনশীল প্রশ্ন প্রবর্তকদের একজনের কাছে ফোন করে এ পদ্ধতি প্রবর্তনের কোনো যৌক্তিক উত্তর পাওয়া যায়নি।
নীতিনির্ধারকদের অনেকে নিজেদের সন্তান ইংরেজি মাধ্যমে পড়িয়ে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ওপরে পরীক্ষা চালান। তাদের কারও কারও বাংলা মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই।
শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের আরও একটি পদক্ষেপ ছিল, কয়েকটি বিষয়ে কিংবা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়ে পাস; সর্বশেষ সংযোজন ছিল ‘অটো পাস’। এদের মধ্য থেকে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের পড়াতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তাঁদের জ্ঞানের ব্যাপ্তি ও গভীরতা এতই কম যে অনেকেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বুঝতে পারেন না।
অনেক বিভাগে শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি হলেও এদের শ্রেণিকক্ষে ইংরেজিতে পড়ানো কঠিন। মানের সঙ্গে আপস করেই পড়াতে হচ্ছে।
মেধা বিকাশের আগেই আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা ক্লাসে মনোযোগী না হয়ে প্রাইভেট ও কোচিং–নির্ভর হয়ে পড়ে। কিছু কিছু অভিভাবক সন্তানদের এক বিষয়ের জন্য তিনজন শিক্ষকের কাছে পর্যন্ত প্রাইভেট পড়ান। প্রাইভেট পড়তে পড়তেই এদের সময় চলে যায়, চর্চা করার সময় থাকে না। টাকা থাকলেই সন্তানকে দিয়ে ভালো ফল করানো যায়, এ রকম মানসিকতাই বেশির ভাগ সচ্ছল অভিভাবকদের।
শিক্ষকেরা কোচিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫ পাওয়ার কৌশল শিখিয়ে দিলেও এতে তাদের মেধার প্রকৃত বিকাশ হয় না। গ্রেডিং–পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন, অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার প্রবণতা এবং ফলস্বরূপ লাখ লাখ জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের মনে অহেতুক উচ্চ ধারণা তৈরি করছে।
নিজেদের মেধা খাঁটিয়ে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস অর্জন না করার ফলে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশ উচ্চশিক্ষায় গিয়ে হোঁচট খায়।
শিক্ষকেরা কোচিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫ পাওয়ার কৌশল শিখিয়ে দিলেও এতে তাদের মেধার প্রকৃত বিকাশ হয় না। গ্রেডিং–পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন, অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার প্রবণতা এবং ফলস্বরূপ লাখ লাখ জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের মনে অহেতুক উচ্চ ধারণা তৈরি করছে। নিজেদের মেধা খাঁটিয়ে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস অর্জন না করার ফলে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশ উচ্চশিক্ষায় গিয়ে হোঁচট খায়।তবে এ প্রবণতার বাইরে গিয়ে যারা প্রথমে নিজেরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে এবং না পারলে শিক্ষকদের দ্বারস্থ হয়, পরবর্তী জীবনে উচ্চ শিক্ষায় এদের সফলতার হার অনেক বেশি।
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৩ হাজার ২১৯ জন যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ জন। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন স্বল্পতার কারণে এদের অনেকে হয়তো ভর্তির সুযোগ পাবেন না। কিন্তু এদের অনেকেই যখন ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন, তখন জিপিএ-৫-এর এই সংখ্যাও বেশি মনে হয়। জিপিএ-৫ পেলে একটি বিষয় সম্পর্কে যে গভীর জ্ঞান থাকা দরকার, তা অনেকেরই নেই।
তাই মেধাকে প্রতিনিধিত্ব করতে গেলে ভবিষ্যতে হয়তো জিপিএ-৫-এর সংখ্যা আরও কমে আসবে এবং সেটিই স্বাভাবিক। সামগ্রিকভাবে জিপিএ-৫ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের মধ্যে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তাতে ছেদ পড়বে।
পত্রপত্রিকায় অনেক কলেজের ঈর্ষণীয় সাফল্যের খবর প্রচার করা হয় জিপিএ-৫-এর ভিত্তিতে। এক কলেজের সঙ্গে অন্য কলেজের কিংবা গ্রামের সঙ্গে শহরের জিপিএ-৫ ভিত্তিক তুলনা করার আগে বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে হবে।
ধরুন, কোম্পানি ক ও খ এক বছরে ১০ হাজার টাকা করে মুনাফা করেছে। এখানে কোন কোম্পানির অর্জন তুলনামূলকভাবে ভালো তা শুধু মুনাফার পরিমাণ দেখে বলা যাবে না। যদি জানেন, কোম্পানি ক ৮০ হাজার টাকা ও খ ৯০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছে, তাহলে আপনি সহজেই বলতে পারবেন এখানে কোম্পানি ক তুলনামূলকভাবে ভালো করেছে। কারণ, তার বিনিয়োগ কম কিন্তু অর্জন খ-এর সমান।
একইভাবে দুজন শিক্ষার্থী যদি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়, তাদের অর্জন সমান না–ও হতে পারে, তাদের জন্য বিনিয়োগের (যেমন কলেজের বেতন, প্রাইভেট পড়ার খরচ, সময় ইত্যাদি) পার্থক্যের কারণে। সুবিধাবঞ্চিত একটি স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া একজন শিক্ষার্থীর অর্জন শহরের নামকরা স্কুল কিংবা ক্যাডেট কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া একজন শিক্ষার্থীর অর্জনের থেকে অনেক বেশি মূল্যবান।
তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জিপিএ-৫-এর সংবাদ উৎসাহ নিয়ে প্রচার করার পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের পেছনে গড়ে কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, তা জানালে আমরা প্রতিষ্ঠানের তুলনামূলক অর্জন বিশ্লেষণ করতে পারব। যে প্রতিষ্ঠানে প্রায় সবাই শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ে, সে প্রতিষ্ঠান নামকরা হলেও ভালো প্রতিষ্ঠান নয়।
ড.
মো. মাইন উদ্দিন অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় জ প এ ৫ প য় শ ক ষ ব যবস থ জন শ ক ষ র থ জ প এ ৫ এর দ র অন ক প রবণত সন ত ন র জন য ম নব ক কল জ র অন ক ব ন মকর শহর র সমস য র একট
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনীর মধ্যে আবারো সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অপরকে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। শনিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের স্পিন বোলদাক শহর থেকে শুক্রবার রাতে বাসিন্দারা পালিয়ে যান। এই এলাকাটি দুই দেশের সীমান্তের ২ হাজার৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
কান্দাহার শহরের একজন চিকিৎসা কর্মী বিবিসি পশতুকে জানিয়েছেন, স্থানীয় হাসপাতালে চারটি মৃতদেহ আনা হয়েছে। আরো চারজন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানে তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও পাকিস্তানকে দেশের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে।
উভয় পক্ষই জানিয়েছে, তারা শুক্রবার রাতভর গুলি বিনিময় করেছে। চার ঘন্টা ধরে চলা এই যুদ্ধের জন্য তারা একে অপরকে দায়ী করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি তালেবানদের ‘বিনা উস্কানিতে গুলি চালানোর’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
জাইদি বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, উপযুক্ত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এদিকে, একজন তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তান ‘আবারো আক্রমণ শুরু করেছে।’ এ কারণে তারা ‘প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছে।’
সীমান্তের আফগান দিকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে গুলি বিনিময় শুরু হয়।
এলাকা থেকে প্রাপ্ত ফুটেজে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক আফগান পায়ে হেঁটে এবং যানবাহনে পালিয়ে যাচ্ছে।
কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলী মোহাম্মদ হকমাল জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বাহিনী ‘হালকা ও ভারী কামান’ দিয়ে আক্রমণ করেছে এবং বেসামরিক বাড়িঘর মর্টার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ