নেত্রকোনায় মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জেরে দোকানিকে হত্যা, আসামির স্বীকারোক্তি
Published: 24th, October 2025 GMT
নেত্রকোনার আটপাড়ায় চা–দোকানি রাজন মিয়া (২৭) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জেরে তাঁকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামির মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নিহত রাজন মিয়া নেত্রকোনা সদর উপজেলার দেশীউড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নেত্রকোনা-মদন সড়কের কৃষ্ণপুর চৌরাস্তা মোড়ে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। গ্রেপ্তার দুজন হলেন পুখলগাঁও গ্রামের সুলতান মিয়া (৩০) ও হারেছ আলী (৪৪)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যায় রাজন মিয়া এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে দোকানে অন্য একজনকে বসিয়ে বের হন, কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় একটি পরিত্যক্ত পুকুরে তাঁর অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে নিহত ব্যক্তির বাবা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে আটপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল বৃহস্পতিবার সুলতান মিয়া ও হারেছ আলীকে আটক করে। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে হারেছ আলী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
যেভাবে রাজনকে হত্যা করা হয়পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিহত রাজন মিয়া এবং আসামি সুলতান মিয়া ও হারেছ আলী—তিনজনই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা কয়েকজন মিলে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গাঁজা এনে সেবন ও বিক্রি করতেন। প্রায় দুই মাস আগে সুলতান দুই কেজি গাঁজাসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে সুলতান এ বিষয়ে রাজনকে দোষারোপ করেন। তাঁর ধারণা, রাজনই পুলিশকে তথ্য দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। রোববার সন্ধ্যায় সুলতান মিয়া একাধিকবার ফোন করে রাজনকে পুখলগাঁও এলাকার পরিত্যক্ত একটি বয়লার মিলের পেছনে যেতে বলেন। রাজন সেখানে গেলে আগে থেকেই হারেছ আলীসহ তিনজন উপস্থিত ছিলেন। সুলতান তখন রাজনের কাছে গ্রেপ্তারের পর থেকে জামিন পর্যন্ত সব খরচের টাকা দাবি করেন। রাজন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হারেছ ও অন্যরা তাঁকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সুলতান কোমর থেকে ধারালো ছুরি বের করে রাজনের মাথায় আঘাত করতে থাকেন। রাজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাঁরা লাশ কাছের পুকুরে ফেলে পালিয়ে যান। আদালতে হারেছ আলী তাঁর জবানবন্দিতে এসব কথা জানান।
আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। হারেছ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সুলতান মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়েছে। তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ র ছ আল ন ত রক ন র জন ম য় র সন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে থাকছেন না মাচাদো, অবস্থান অজানা
চলতি বছর শান্তিতে নোবেলজয়ী ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো আজ বুধবার অসলোতে অনুষ্ঠেয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সশরীর উপস্থিত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন না। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক আজই এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি কারণ হিসেবে জানান, মাচাদোর বর্তমান অবস্থান অজানা।
৫৮ বছর বয়সী ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মাচাদোর নরওয়ের অসলো সিটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করার কথা ছিল।
আরও পড়ুনভেনেজুয়েলা সরকারের হুমকির মধ্যেও নোবেল নিতে যাবেন মাচাদো০৭ ডিসেম্বর ২০২৫পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নরওয়ের রাজা হ্যারল্ড, রানি সোনজা এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই ও ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ারের মতো লাতিন আমেরিকার নেতারা উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
অনুষ্ঠানটি আজ স্থানীয় সময় বেলা একটায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ভেনেজুয়েলার নিকোলা মাদুরো সরকারের আরোপ করা এক দশকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নরওয়েতে অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থেকে মাচাদো এ পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি এক বছরের বেশি সময় ধরে ভেনেজুয়েলায় আত্মগোপনে রয়েছেন।
আরও পড়ুননোবেল পুরস্কার নিতে ভেনেজুয়েলা ছাড়লে ‘পলাতক’ বিবেচিত হবেন মাচাদো২১ নভেম্বর ২০২৫নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও পুরস্কার দেওয়া প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সচিব ক্রিস্টিয়ান বার্গ হার্পভিকেন সংবাদমাধ্যম এনআরকে-কে বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, মাচাদো নরওয়েতে নেই। বেলা একটায় অনুষ্ঠান শুরু হলেও অসলো সিটি হলের মঞ্চে তিনি উপস্থিত থাকবেন না।
মাচাদো কোথায় আছেন—জানতে চাইলে হার্পভিকেন বলেন, ‘আমি জানি না।’
নোবেল ইনস্টিটিউট এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করার অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি।