নোয়াখালীর চৌমুহনী-মাইজদী সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয় একটি মাইক্রোবাস। এ সময় মাইক্রোবাসটির এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একই পরিবারের আরও তিনজন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে নোয়াখালী পৌরসভা গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম এ কে আজাদ (৫৫)। আহত ব্যক্তিরা হলেন তাঁর স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৭), মা নূরজাহান বেগম (৭০) ও ভাতিজা মো.

রিমনকে (১৮)। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে রিমন ছাড়া অন্যরা সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে গতকাল রাতে উড়োজাহাজে দেশে ফেরেন। এরপর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাইক্রোবাসে করে নোয়াখালীর বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা।

নিহত আজাদের বাড়ি নোয়াখালী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চর দরবেশ গ্রামে। তিনি উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে পবিত্র ওমরাহ পালনে গিয়েছিলেন এ কে আজাদ। গতকাল রাতে দেশে ফিরলে মো. রিমন একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে তাঁদের আনতে বিমানবন্দরে যান। গাড়িটিতে বাড়িতে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত এ কে আজাদের স্বজন মো. রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলেই আজাদ মারা যান। গাড়িতে থাকা তাঁর স্ত্রী, মা ও ভাতিজাও গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ রোববার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালী গেটের ইউটার্ন এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি পড়ে আছে। দুর্ঘটনায় গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে গেছে। উৎসুক মানুষ গাড়িটির আশপাশে ভিড় করে রয়েছেন। দুর্ঘটনার পর থেকে চালকের খোঁজ মিলছে না। পুলিশের ধারণা, চালক ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সুধারাম থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক মো. রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে রাতেই থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যবসা বেড়েছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের

দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবসা বেড়েছে। চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির ব্যবসায় আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। টাকার অঙ্কের গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যবসা বেড়েছে ৬১ কোটি টাকা। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গতকাল শনিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে কোম্পানিটির মুনাফার তথ্য আজ রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।

কোম্পানির মুনাফা হিসাব করা হয় মোট আয় থেকে ব্যয় বাদ দেওয়ার পর। একটি কোম্পানি নির্দিষ্ট একটি সময়ে ব্যবসা ও অন্যান্য খাত থেকে যে আয় করে তা থেকে ওই কোম্পানির পণ্য উৎপাদন খরচ, ঋণের সুদসহ অন্যান্য আর্থিক খরচ ও সরকারকে দেওয়া কর বাদ দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকে সেটিই কোম্পানির মুনাফা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো একটি খাতে খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেলে ভালো ব্যবসা করার পরও কোম্পানির মুনাফা কমতে পারে বা কখনো কখনো লোকসানও হতে পারে।

জানতে চাইলে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের কোম্পানি সচিব ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলত দুটি কারণে ব্যবসায় ভালো করার পরও আমাদের মুনাফা কমে গেছে। প্রথমত, করের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের বাজেটে করহার বৃদ্ধির কারণে এ বাবদ খরচ গত বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকঋণের সুদহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বাবদ খরচও বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কোম্পানির মুনাফায়।’

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে, অর্থাৎ তিন মাসে কোম্পানিটি ৪৮৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪২৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৬১ কোটি টাকার বা সাড়ে ১৪ শতাংশ। ব্যবসা বাড়লেও আগের বছরের চেয়ে মুনাফা কমেছে কোম্পানিটির। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এসে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের মুনাফা প্রায় ২৩ লাখ টাকা বা ১০ শতাংশ কমে গছে। চলতি বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যবসা বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান দুটি কারণ ছিল, কর ও সুদ ব্যয় বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়া। গত জুলাই–সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসে কোম্পানিটি কর বাবদ সরকারকে দিয়েছে ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ে কর বাবদ কোম্পানিটির খরচ ছিল দুই কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর বাবদ খরচ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। একইভাবে বেড়েছে আর্থিক খরচ, যার বড় অংশই মূলত ব্যাংকঋণের সুদ বেড়ে যাওয়ায়। চলতি বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটির ঋণসুদসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় হয় ৪২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই খাতে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা।

এদিকে মুনাফা কমে যাওয়ার খবরে আজ ঢাকার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদের শুরু হয় দরপতনে। প্রথম এক ঘণ্টায় অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪০ পয়সা কমে দাঁড়িয়েছে ২০০ টাকায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ