‘নিঃসন্দেহে’ মাদুরো সরকারকে উৎখাত করতে চান ট্রাম্প, বিবিসিকে ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তা
Published: 27th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘উপনিবেশে’ পরিণত করতে চান বলে বিবিসির ‘নিউজআওয়ার’ অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন ভেনেজুয়েলার অ্যাটর্নি জেনারেল তারেক উইলিয়াম সাব।
গতকাল রোববার তারেক উইলিয়াম সাব বলেন, ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তনের ডাক আসলে দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ সোনা, তেল ও তামার মজুত কবজা করার একটি অজুহাত মাত্র।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তারেক উইলিয়াম সাব বলেন, ভেনেজুয়েলার সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র, এ বিষয়ে ‘কোনো সন্দেহ নেই’। এটি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ‘ব্যর্থ’ অভিযানগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ।
২০২৪ সালের নির্বাচন স্বাধীন ও সুষ্ঠু হয়নি বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশ মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।
ট্রাম্প একাধিকবার ভেনেজুয়েলায় সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার কথা বলেছেন এবং গত সপ্তাহে তিনি বলেন, ‘সমুদ্র এখন নিয়ন্ত্রণে।’ তাই যুক্তরাষ্ট্র ‘এখন ভূমি নিয়েও ভাবছে’।
গত সেপ্টেম্বর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে অভিযান চালাতে শুরু করে। এটিকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। কথিত মাদকবাহী বিভিন্ন নৌযানে হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা এসব হামলার আইনগত ভিত্তি ও প্রেসিডেন্টের হামলার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনভেনেজুয়েলার ভেতরে মাদক কারখানায় হামলার পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প২৫ অক্টোবর ২০২৫রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ভবিষ্যতে ‘স্থল অভিযানের’ সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প তাঁকে জানিয়েছেন, এশিয়া সফর শেষে ভবিষ্যৎ সামরিক অভিযান নিয়ে তিনি কংগ্রেস সদস্যদের ব্রিফ করবেন।
ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তারেক উইলিয়াম বিবিসিকে বলেন, ‘এটা হওয়া উচিত নয়, কিন্তু আমরা প্রস্তুত।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ’ মাদকবিরোধী অভিযানের পরও ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার সংলাপ শুরু করতে প্রস্তুত।
গত দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, গুপ্তচর বিমান, বোমারু বিমান ও ড্রোন মোতায়েন বৃদ্ধি করছে। এটিকে মাদক ও মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান হিসেবে বর্ণনা করছে ওয়াশিংটন।
তবে বহু বিশ্লেষকের মতে, মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক শক্তি প্রদর্শন এবং ভয় দেখানো।
আরও পড়ুনভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনা, বিমানবাহী রণতরি মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র২৫ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ত র ক উইল য় ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোন দেশে কেন পড়বেন
বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ একজন শিক্ষার্থীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, সঠিক দেশ নির্বাচন আবেদনকারীর শিক্ষা, ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। কোন দেশ উচ্চশিক্ষার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, তা নির্ধারণের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার মান, পড়াশোনার খরচ, ভাষা ও সংস্কৃতি, ভিসাপ্রক্রিয়া, স্কলারশিপের সুযোগ ও পড়াশোনা শেষে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা।
প্রতিটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করলে নিজের প্রয়োজন ও লক্ষ্য অনুযায়ী সেরা দেশ নির্বাচন করা সহজ হয়। কারণ, যে দেশ আপনার শিক্ষাগত আগ্রহ, আর্থিক সামর্থ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ—সেই দেশেই আপনার উচ্চশিক্ষার যাত্রা হবে সবচেয়ে সফল ও ফলপ্রসূ।
দেশ বাছাইয়ের আগে...বিদেশে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের লক্ষ্য স্পষ্ট করতে হবে। আপনি কি গবেষণাভিত্তিক পড়াশোনা করতে চান নাকি ক্যারিয়ারভিত্তিক, না কোনো প্রফেশনাল কোর্স? আপনি কি প্রযুক্তি, ব্যবসা, সমাজবিজ্ঞান নাকি কলা ও মানবিক বিষয়ে আগ্রহী?
আপনার এই লক্ষ্যই নির্ধারণ করবে কোন দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। যেমন যুক্তরাষ্ট্র গবেষণায় শীর্ষে, যুক্তরাজ্যে কোর্স টাইমলাইন কম, কানাডায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ বেশি আর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড জীবনযাত্রা ও কাজের সুবিধায় এগিয়ে।
আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে২৬ অক্টোবর ২০২৫কোন দেশের উচ্চশিক্ষার সুবিধা কেমনবিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষার জন্য কিছু দেশ তাদের উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা-সুবিধার জন্য পরিচিত। যেমন–
যুক্তরাষ্ট্র: স্ট্যানফোর্ড, এমআইটি ও হার্ভার্ডের মতো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র উচ্চশিক্ষার জন্য সমাদৃত। এখানে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ অসীম।
যুক্তরাজ্য: অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারণে যুক্তরাজ্যও শিক্ষার্থীদের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।
কানাডা: কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ মানসম্মত এবং এখানকার শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ অনেক শিক্ষার্থীর পছন্দ।
অস্ট্রেলিয়া: মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে অস্ট্রেলিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
কোন দেশে খরচ কেমনউচ্চশিক্ষার খরচ অনেক শিক্ষার্থীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইউরোপের কিছু দেশ, যেমন জার্মানি ও নরওয়েতে বিনা মূল্যে বা তুলনামূলকভাবে কম খরচে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
জার্মানি: জার্মানির অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি নেই, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুবিধা। এ ছাড়া গবেষণার জন্য এখানে অনেক সুযোগ রয়েছে।
নরওয়ে: নরওয়েতে বিনা মূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে, তবে জীবনযাত্রার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।
কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া: স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখানে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে এখানকার খরচ সামলানো সম্ভব হয়।
আরও পড়ুনজেনে নিন বিশ্বের সেরা ১০ স্কলারশিপ সম্পর্কে২২ ঘণ্টা আগেবিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের সময় লক্ষণীয়...একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে কোর্সের ধরন ও পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী সিলেবাস যাচাই করতে হবে।
কোনো বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ে শীর্ষে থাকলেও আপনার পছন্দের নির্দিষ্ট বিষয়ের ক্ষেত্রে ততটা মানসম্মত নাও হতে পারে।
পড়াশোনার খরচ অনেক সময় সিদ্ধান্ত বদলে দেয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন ও সরকারি বৃত্তির সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আগে থেকেই খোঁজ নিন।
বিশ্বের বিভিন্ন শহরভেদে জীবনযাত্রার ব্যয় ভিন্ন হয়। কোথায় কাজের সুযোগ বেশি আছে, সেটি আগেই যাচাই করে নেওয়া দরকার।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা মানে শুধু অন্য দেশে যাওয়া নয়; বরং নিজের ভবিষ্যৎকে নতুনভাবে গড়া। তাই বন্ধুর পরামর্শ বা ‘ট্রেন্ড’ দেখে নয়; নিজের আগ্রহ, লক্ষ্য ও সামর্থ্য বিচার করে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ, সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সঠিক বিষয় বেছে নেওয়া মানে আপনার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের সবচেয়ে দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করা।