অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের
Published: 28th, October 2025 GMT
পাচার হওয়া ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়নসহ চার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ। ২৯ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি না মানলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’র নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হবেন এবং নির্বাচিত হয়ে নিজেরাই আইন বানিয়ে নেবেন।
সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে সংগঠন দুটি এই ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সভাপতি আবুল বাশার বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে আবুল বাশার বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য চব্বিশের অভ্যুত্থানের একটা সেরা অর্জন হতে পারে পাচাররোধী আইন। সরকারকে এ লক্ষ্যে সর্বোচ্চ উদ্যোগী হতে হবে।’
পরে তিনি ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়ন, ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’–এর নেতাদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে কৃষকের মতামত নেওয়া এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও সম্পদের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করার দাবি জানান।
এসব দাবিতে ৩১ অক্টোবর দুপুরে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে রংপুর, ৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে খুলনা, ৮ নভেম্বর সকালে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠে, ১৩ নভেম্বর দুপুরে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তা ছাড়া ১৪ নভেম্বর দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা থানার বিকেনগর হাইস্কুল মাঠেও একটি সমাবেশ এবং ২৯ নভেম্বর সকালে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দেন আবুল বাশার।
একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতা-কর্মীরা দেশের সবচেয়ে নিরীহ মানুষ। তাঁদের দাবিও খুব যৌক্তিক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হাসিনা সরকার যেমন অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের হামলা-মামলা করে নাজেহাল করেছিল, এই সরকারের আমলেও তাঁরা হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন। সরকার ভুল বুঝতে পেরে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের জামিনের সুযোগ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতেও অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের কর্মসূচি যেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হয়, সেটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
চার দফা দাবি পূরণ না হলে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতারা নিজেরাই সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, সরকারকে আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের চার দফা দাবি পূরণের আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে অহিংস গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন। নির্বাচিত হয়ে তাঁরা নিজেরা নিজেদের দাবি অনুযায়ী আইন বানাবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে।”
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন ঘিরে সরগরম কেরাণীগঞ্জের রাজনীতি
হেভিওয়েটদের বিপক্ষে এনসিপির প্রার্থী হচ্ছেন যারা
তারেক রহমান বলেন, “সামনের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরতে হবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। এই দেশ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়-মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষাই আজ সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি।”
তারেক রহমান বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরে স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “শত শত মানুষ হত্যা, গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকে ফিরে আসেনি। যারা ফিরেছে, তাদের শরীরে নির্যাতনের নির্মমতা লেগে রয়েছে।”
বিগত সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আইটি পার্ক ও অবকাঠামোর নামে যেসব প্রকল্প হয়েছে, তার অনেকগুলোই আজ অব্যবহৃত পড়ে আছে—সেখানে গরু-ছাগল চরে বেড়াচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরব। প্রয়োজনে এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধও করব।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই না আর কোনো আবরার নির্মম হত্যার শিকার হোক। আমরা চাই না শহিদুল আলমের মতো কাউকে রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের মুখে পড়তে হোক। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবন ও সম্মান রক্ষাই আমাদের প্রথম কাজ।”
তারেক রহমান জানান, জাতীয়তাবাদী দর্শনই মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা ও সমতার অধিকার নিশ্চিত করে। মানুষের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির রাজনীতির মূল ভিত্তি।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদের পক্ষে রায় দিলে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালুর মাধ্যমে নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করব। নারীসমাজকে শক্তিশালী না করলে দেশ এগোবে না।”
শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে কর্মসংস্থানে সংকটে না পড়ে। দেশের ডাটাবেইস ধরে বিদেশে কর্মসংস্থানের পথও উন্মুক্ত করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের খাল খনন করতে হবে, পরিবেশ রক্ষায় ২৫ কোটি গাছ লাগাতে হবে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন হাবিব উন নবী খান সোহেল, ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, আমিনুল হক, হাসান জাফির তুহিন, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, এস এম জিলানী প্রমুখ।
ঢাকা/আলী/সাইফ