বিধিমালায় বড় পরিবর্তন: ৪৪তম বিসিএস নিয়োগ জটিলতা কাটছে দ্রুত
Published: 28th, October 2025 GMT
সরকারি চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন এনেছে সরকার। একই ক্যাডার বা সার্ভিসে আগে নির্বাচিত কিংবা কর্মরত কোনো প্রার্থীকে ভবিষ্যতের বিসিএস পরীক্ষায় পুনরায় ওই একই ক্যাডারে সুপারিশ না করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য সংশোধন করা হয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত সরকারি গেজেটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই সংশোধনী প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, সরকার সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৫৯ ধারা অনুযায়ী এবং সংবিধানের ১৪০(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পরামর্শক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
এই সংশোধনের ফলে ৪৪তম বিসিএস নিয়োগ জটিলতা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান হবে। পিএসসি জানিয়েছে, বিধি সংশোধন হওয়ায় দ্রুতই ৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
কী পরিবর্তন হলো বিধিতে
২০১৪ সালের বিধিমালার বিধি ১৭ পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নতুন বিধিতে বলা হয়েছে, পিএসসি এখন থেকে কৃতকার্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে—
১.
২. পূর্ববর্তী কোনো বিসিএস পরীক্ষায় একই সার্ভিস বা ক্যাডারে নির্বাচিত হয়েও যোগদান করেননি, অথবা
৩. একই সার্ভিসে পুনরায় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী নন বলে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন,
তাহলে কমিশন সেই প্রার্থীকে বাদ দিতে পারবে বা সুপারিশ থেকে বিরত থাকতে পারবে। অর্থাৎ একজন প্রার্থী যদি পূর্ববর্তী বিসিএস পরীক্ষায় কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন, তবে তিনি একই ক্যাডারে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন না।
প্রজ্ঞাপনে নতুনভাবে যুক্ত করা উপধারায় পিএসসিকে আরও একটি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা থেকে বিরত থাকার কারণে শূন্য পদ তৈরি হয়, তবে কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ করতে পারবে। এতে নতুন করে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুযায়ী সুপারিশ করা যাবে। তবে এ কারণে আগের ঘোষিত ফলাফলে কোনো প্রার্থীর মেধাক্রম বা পছন্দক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
আরও পড়ুনপরিবেশ অধিদপ্তরে রাজস্ব খাতে বড় নিয়োগ, নেবে ১৮৮ জন৭ ঘণ্টা আগেকেন এই পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ
পিএসসি–সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অনেক প্রার্থী একই বিসিএস পরীক্ষায় একাধিকবার একই ক্যাডারের জন্য আবেদন করতেন। কেউ কেউ আগে নির্বাচিত হয়েও যোগদান না করে আবারও পরীক্ষা দিতেন। এতে অনেক আসন দীর্ঘদিন খালি থেকে যেত এবং নতুন প্রার্থীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতেন।
৪৪তম বিসিএসের নিয়োগ জটিলতা কাটছে দ্রুত
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকাশ করে। ১ হাজার ৭১০টি শূন্য পদের বিপরীতে সুপারিশ করা হয় ১ হাজার ৬৯০ জনকে। তবে তাঁদের মধ্যে ৩৭২ জন আগেই একই বা সমতুল্য ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন (রিপিট ক্যাডার)।এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ, সমালোচনা ও বিতর্কের পর পিএসসি বিধি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে রিপিট ক্যাডারের জায়গায় মেধাক্রম অনুযায়ী পরবর্তী প্রার্থীদের সুপারিশ করা যায়। কিন্তু বিধি সংশোধনের প্রশাসনিক জটিলতায় ৪৪তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে ছিল।
পিএসসির এক ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও পিএসসির স্বাধীনতা নেই বললেই চলে। যেকোনো বিধি সংশোধনের জন্য আমাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। ৪৪তম বিসিএসের নিয়োগ জটিলতা তৈরি হয়েছে পিএসসির বিধি সংশোধনের ক্ষমতা নেই বলে। বিধি সংশোধন ফাইল এত দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ছিল।
৪৪তম বিসিএসের ফলাফল প্রসঙ্গে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিধি সংশোধন হওয়ায় দ্রুতই ৪৪তম বিসিএসের সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’
আরও পড়ুনহার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, মূল্য হারাতে বসেছে ১০ ডিগ্রি৭ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: একই ক য ড র স প র শ কর প এসস র ত ফল ফল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, জড়িতদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী ও নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তারের সময় বেঁধে দিয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ডাকসু, বিকেলে ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ডাকসু। সমাবেশ থেকে ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার ভেতরে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং এই ন্যক্কারজনক ঘটনার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করে বিচার কার্যকর করতে হবে।’
ডাকসুর এজিএস আরও বলেন, ‘যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের যদি এই সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে না পারে, তাহলে এই সরকার জনতার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রমাণিত হবে।’
ডাকসুর পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ার করতে চাই—যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের শনাক্ত করা না হয় এবং এর পেছনের রাঘববোয়ালদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে বাংলাদেশে দাবানল জ্বলবে।’
এর আগে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দর ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এতে সংগঠনের আহ্বায়ক রিয়াদুস জুবাহ ওসমান বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা এ ঘটনার নেপথ্যের পরিকল্পনাকারী, সেই মাস্টারমাইন্ডদেরও দৃশ্যমান আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই এখন একমাত্র পথ।’
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেছে। বিকেলে ছাত্রদল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শিববাড়ি ও জগন্নাথ হল এলাকা ঘুরে আবার জরুরি বিভাগের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নেতা–কর্মীরা ‘হাদিকে গুলি কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘ছাত্রদলের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ছাত্রদলের নেতারা ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।