আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনকে ১৮ দফা সুপারিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সুপারিশে দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বর মাসে কমিশনকে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নেতৃত্ব দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের নির্বাচনে বড় পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ

সংসদ ২৭০ দিনে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে

সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি নিয়ে গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, “১৮ দফার মধ্যে গণভোটকে নির্বাচনের আগে করতে হবে।.

..যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে, জুলাই জাতীয় সনদে সেসব বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে পরিবর্তন করে যে সংস্কারগুলোর ব্যাপারে আমরা ঐকমত্য হয়েছি, জাতিকে তো সেটা জানতে হবে। জানার পরেই না তারা ‘হ্যাঁ’, ‘না’ ভোট দেবে। যদি একই দিনে ভোট হয়, তাহলে ভোটারও তো জানতে পারল না।”

“সংস্কার ও জাতীয় সনদের বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনকে জনসমক্ষে করতে হবে বলে জানান পরওয়ার। তারা ওয়েবসাইটে দেবেন, জনগণ জানবে, ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেবেন”, বলেন তিনি। সেটার জন্য নভেম্বরই উপযুক্ত সময়, বলছেন জামায়াতের এই নেতা।

জামায়াত নেতা পরওয়ার বলেন, “একই দিনে ভোট হলে কেন্দ্রে সহিংসতা হতে পারে, দু–চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হতে পারে।...ভোট বন্ধ হলে গণভোটের দশাটা কী হবে? এগুলোর ব্যাপারে ওনারা কোনো নেতিবাচক কথা বলেননি। ধৈর্যের সঙ্গে শুনেছেন। মনে হচ্ছে, আমাদের কথার প্রতি ওনারা কনভিন্স হয়েছেন।”

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা খোলামেলা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে বলে জানান জামায়াত নেতা।

তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, উই আর অলওয়েজ রেডি টু গিভ অল কাইন্ড অব কো-অপারেশন টু ইলেকশন কমিশন। আমরা এটা দিতে থাকব, কিন্তু নির্বাচনটা আমাদের সুষ্ঠু করতে হবে।”

জোট করলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপির আপত্তির বিষয়ে জামায়াত নেতা বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদে এই সংশোধন অনুমোদিত হয়েছে। এটা হওয়ার পরও আমরা দেখলাম, সম্ভবত গত ২৫ তারিখে একটি দলের পক্ষ থেকে এসে এটাকে আবার সংশোধন করার জন্য বলা হয়েছে, এটাকে আপত্তি জানানো হয়েছে। এমনকি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘন করে খুবই দুঃখজনকভাবে।...উনারা বলেছেন যে এই সংশোধন পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের এক নেতার সঙ্গে একজন উপদেষ্টার কথা হয়েছে। একটা জেন্টলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে।”

জামায়াত নেতা বলেন, “আমরা চিফ কমিশনারকে বলেছি যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ভঙ্গ হওয়ার এর চেয়ে খারাপ উদাহরণ আর কী হতে পারে? এখানে কমিশনের সিদ্ধান্ত, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত সংশোধন হয়ে গেছে। তারপর কি একজন উপদেষ্টা একটা দলের নেতার সঙ্গে জেন্টলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট করতে পারেন? সেটা সংশোধনের ব্যাপারে, যেগুলো এত পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে জড়িত, জাতির সঙ্গে জড়িত, সুষ্ঠু ভোটের সঙ্গে জড়িত, এটা ওনারা শুনেছেন। আমরা সে ব্যাপারে ঘোর আপত্তি জানিয়েছি, এটা কোনোক্রমেই সংশোধন করা যাবে না। সংশোধিত যে বিধান আছে, এর ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে।”

বিএনপির দাবি অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের এই নেতা বলেন, “এটা একটা ব্যাড ট্রেডিশন। এটা উচিত নয়। বিএনপির বড় বড় নেতা ব্যাংক চালান, প্রতিষ্ঠান চালান, হাসপাতাল চালান। একটা তালিকা আমরাও দিতে পারতাম।”

বৈঠকে আরো অংশ নেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির, নির্বাহী পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সেলিম।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস উপদ ষ ট পরওয় র আম দ র ন র আগ গণভ ট ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির দাবি অযৌক্তিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: গোলাম পরওয়ার

সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাদের এই দাবিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক ও সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির এই দাবি আমলে না নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “গত ২৩ অক্টোবর দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছে—তাতে আমি উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা মনে করি, এই দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক ও সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’’

তিনি বলেন, ‘‘উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো অরাজনৈতিক ও সেবামূলক। তারা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।’’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘দেশবাসী মনে করে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো এভাবে সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দাবি উত্থাপন করতে থাকে, তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েই অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। নির্বাচন কমিশন যদি এ ধরনের ঠুনকো, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর দাবি গ্রহণ করে। তবে ভবিষ্যতে আরো অনেক অনর্থক দাবি উঠবে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিএনপির এই বিভ্রান্তিকর, অমূলক, ঠুনকো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি আমলে না নেওয়ার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’’

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির দাবি অযৌক্তিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: গোলাম পরওয়ার
  • ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বানে’ জামায়াতের উদ্বেগ