গাজায় আবার তীব্র হামলা চালানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর
Published: 28th, October 2025 GMT
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে গাজায় আবার তীব্র হামলা চালাতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শের পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে গাজায় অবিলম্বে শক্তিশালী হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’ তবে কখন ও কোথায় হামলা চালানো হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গতকাল সোমবার একজন জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয় হামাস। ইসরায়েলের অভিযোগ, ফেরত দেওয়া মরদেহটি দুই বছর আগে উদ্ধার করা একজন অপহৃত ব্যক্তির। তাঁর মরদেহের অংশবিশেষ ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৩ সালের শেষ দিকে উদ্ধার করেছিল। যে ১৩ জন জিম্মির মরদেহ এখনো হামাসের হাতে রয়েছে, তাঁদের কারও মরদেহ এটা নয়।
অপর দিকে হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় আজ সকালে পাওয়া একজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত করছে তারা।
এক বিবৃতিতে কাসেম ব্রিগেড বলেছে, ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের তৎপরতা জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা, খনন করা এবং উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে মরদেহ খুঁজে বের করতে দেরি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ৯ অক্টোবর মিসরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখে গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি সই হয়। পরদিন ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
গাজায় ইসরায়েলের এই ভয়ানক হামলা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। সেদিন গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে। সেই সঙ্গে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপর গাজায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় ৬৮ হাজার ৫০০–এর বেশি মানুষ নিহত হন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার প্রাইভেট কার থামিয়ে হামলার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবান থেকে কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)–কে গ্রেপ্তার করে ডিবি (পশ্চিম)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, হামলার সময় ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোই ছিল হামলার লক্ষ্য। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
৪ ডিসেম্বর সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভাড়ায় নেওয়া প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিন ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির কাচে কোপ দেন। গাড়ির কাচ ভাঙার পাশাপাশি হামলাকারীরা একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। তবে দুই কর্মকর্তা দ্রুত গাড়ি সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।
আরও পড়ুনগাড়ি থামিয়ে কাচে চাপাতির কোপ, একজন বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’০৪ ডিসেম্বর ২০২৫