জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায়-সম্পর্কিত সুপারিশকে ‘ইতিবাচকভাবে’ দেখছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এখন এর বাস্তবায়নে অবিলম্বে আদেশ জারি এবং আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করা দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ দাবি জানান।

আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা কমিশনের সুপারিশকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। অবিলম্বে সনদ বাস্তবায়নের আদেশ দেওয়ার দাবি করছি। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি করছি।’

জামায়াত শুরু থেকেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি এবং এর আইনি ভিত্তি দিতে গণভোটের দাবি করে আসছে। সে গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগেই আয়োজনের দাবি করছে দলটি।

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট কেন—সে বিষয়ে গতকাল পৃথক বক্তব্য দিয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তাঁর নেতৃত্বে গতকাল দুপুরে জামায়াতের সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনকে ১৮ দফা সুপারিশ জমা দেওয়া হয়। সে ১৮ দফায় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের সুপারিশও ছিল বলে জানান তিনি।

মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৮ দফার মধ্যে গণভোটকে নির্বাচনের আগে করতে হবে।.

..জুলাই জাতীয় সনদে সেসব বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোকে পরিবর্তন করে যে সংস্কারগুলোর ব্যাপারে আমরা ঐকমত্য হয়েছি, জাতিকে তো সেটা জানতে হবে। জানার পরেই না তারা “হ্যাঁ”, “না” ভোট দেবে। যদি একই দিনে ভোট হয়, তাহলে ভোটাররাও তো জানতে পারল না।’ এ ছাড়া একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলেও মনে করে জামায়াত।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইতিবাচক মনে করছে এনসিপি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জমা দেওয়া সুপারিশকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

এ বিষয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গতকাল রাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণভোটের ক্ষেত্রে নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) কার্যকারিতা না রাখা, পুরো সনদকে “হ্যাঁ”, “না” ফরম্যাটে গণভোটে দেওয়া এবং গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে আদেশ জারি করা—এ বিষয়গুলোকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি।’

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘২৭০ দিনের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদ রাখার বিষয়টিও ইতিবাচক। কিন্তু আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপিটা আমরা এখনো পাইনি। তবে আমরা সংস্কারকৃত সংবিধানকে সংশোধিত সংবিধান, ২০২৬ নামকরণের কথা বলেছিলাম।’

ঐকমত্য কমিশনের জমা দেওয়া সুপারিশ নিয়ে বিএনপির অসন্তুষ্টি প্রসঙ্গে এনসিপির নেতা আরিফুল ইসলাম আদীবের মন্তব্য হচ্ছে, যে বিষয়গুলো বিএনপির বিপক্ষে যায়, তারা সেগুলোকে অনৈক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হিসেবে দেখে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে অধিকাংশ দল যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, বিএনপি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির ক্ষেত্রে ২৫টি দল একমত, বিএনপি আর এনডিএম একমত হয়নি।

এনসিপির নেতা বলেন, মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে ৩০টি দলের মধ্যে ২৫ থেকে ২৮টি দল একমত হয়েছে, সেখানে বিএনপি ও তাদের সমমনা কয়েকটি দল দ্বিমত করেছে। তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়াকে ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। কারণ, গণভোটের মাধ্যমে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত ফয়সালা হয়ে যাবে। এরপরই সংস্কারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে।

আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, আজকালের মধ্যে এনসিপির দলীয় সভা হতে পারে। সেখানে আলোচনা করে জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইতিবাচক মনে করছে এনসিপি
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে সালাহউদ্দিনের প্রতিক্রিয়া
  • সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করার সুযোগ নেই: বিএনপি
  • প্রধান উপদেষ্টার হাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ পেশ দুপুরে 
  • আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার করবে ৯ মাসে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠক হয়ে গেল, সুপারিশ দেবে আগামীকাল
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত, আজ জমা দেওয়া হতে পারে
  • বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ভার্চ্যুয়াল সভা